ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:নাটোর: নাটোরে মহিলা জামায়াতের পূর্বাঞ্চলীয় নেত্রী মোছাঃ নুরুন নাহারসহ ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা শহরের কানাইখালী এলাকার একটি বাড়ীতে গোপন বৈঠক করছিল বলে জানিয়েছে নাটোর সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বুধবার বিকেলে শহরের কানাইখালী ফায়ার সার্ভিসের পিছনের নাসির উদ্দিনের বাড়ী তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান জিহাদী বই সহ তাদের সাংহঠনিক কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়। পরে আটককৃত নুরুন নাহারকে নিয়ে আরো বিভিন্ন স্থানে অভিযান শুরু করে পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন, নাটোর সদর উপজেলার দত্তপাড়া গ্রামের মৃত আমিরুল ইসলামের স্ত্রী জামায়াতের পূর্বাঞ্চলীয় আমীর মোছাঃ নুরুন নাহার, কানাইখালী এলাকার নাসীর উদ্দীনের স্ত্রী আরিফা খাতুন পলি, ছাতনী গ্রামের লোকমান হোসেনের স্ত্রী নুর বানু এবং গোয়ালডাঙ্গা গ্রামের মৃত নুরুল হকের স্ত্রী জাহানারা, কানাইখালী এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে জাহিদুল ইসলাম, একই এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে নাসির উদ্দিন ও নাদিম হোসেন।
নাটোর সদর থানা সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের কানাইখালী ফায়ার সার্ভিসের পিছনের এলাকার নাসির উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির বাড়ীতে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় বাড়ীতে মহিলা জামায়তের গোপন বৈঠক চলাকালীন সময়, সেখান থেকে জামায়াতের ৪ জন নারী নেত্রী সহ ৭ জনকে আটক করা হয়। এরপর বাড়ীটিতে ব্যাপক তল্লাশী চালিয়ে বিপুল পরিমান জিহাদী বই এবং জামায়াতে ইসলামীর সংগঠনিক বিভিন্ন সদস্য ফরমসহ বিপুল পরিমান কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়।
নাটোরে চাঁদা না পেয়ে অফিস সহকারীকে পিটিয়েছে চেয়ারম্যানের ভাই!
নাটোরের গুরুদাসপুরে নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ঢুকে চাঁদা না দেয়ায় অফিস সহকারীকে প্রকাশ্যে পিটিয়েছে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শওকত রানা লাবুর ছোট ভাই সুরুজ।
সোমবার বিকেলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সামনেই এ ঘটনা ঘটে। সুরুজ প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ এগিয়ে এসে প্রতিবাদ করেননি। ঘটনার সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছুটা-ছুটি করে স্কুল থেকে পালিয়ে যায়। এসময় সুরুজদের ভয়ে শিক্ষক-কর্মচারীরা কক্ষ থেকে বের হয়নি।
পরে স্থানীদের সহযোগিতায় শিক্ষকরা ফরিদুলকে উদ্ধার করে গুরুদাসপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সে বর্তমানে গুরুদাসপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীনে রয়েছে। এঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল ৩টায় সুরুজ তার সহযোগীদের নিয়ে বিদ্যালয়ে অফিস কক্ষে ঢুকে অফিস সহকারী ফরিদুল ইসলামকে টেনে হেচড়ে বের করে জিআই পাইপ দিয়ে পিটিয়ে আহত করে । এক পর্যায়ে ফরিদুল অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে স্কুলের মূল ফটকের সামনে ফেলে চলে যায়।
অফিস সহকারী ফরিদুল ইসলাম জানান, তিনি ১০ বছর ধরে ওই স্কুলে অফিস সহকারীর কাজ করেন। শওকত রানা লাবু চেয়ারম্যান হবার পর থেকে তার ছোটভাই সুরুজ তার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
তিনি আরো বলেন, সুরুজের বক্তব্য, স্কুলে চাকরি করলে ৫ লাখ টাকা দিতে হবে। বিভিন্ন সময় টাকা চেয়ে হুমকি-ধামকি দিতো। অপারগতা প্রকাশ করলে অফিস থেকে জোড়পূর্বক ধরে নিয়ে গিয়ে মারপিট করে।
এ ব্যাপারে গুরুদাসপুর উপজেলা স্ব্যাস্থ কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. আলতাব হোসেন জানান, তার মাথায় আঘাতের চিহৃ ছাড়াও শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারপিটের চিহৃ রয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম জানান, প্রকাশ্যে এভাবে স্কুল চলাকালীন এ ধরনের ঘটনায় শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থীরা আতংকে রয়েছে। তিনি ধরনের ঘটনায় প্রশাসনের নিকট সুষ্ঠ বিচার দাবি করেন।
নাজিরপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শওকত রানা লাবু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পাওনা টাকা নিতে গিয়ে ওই ঘটনা ঘটে। তবে বিষয়টি দ্রুত মীমাংসা করা হবে। এ বিষয়ে সুরুজের বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
গুরুদাসপুর থানার ওসি তদন্ত তারেকুর রহমান সরকার জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, নাজিরপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শওকত রানা লাবু নিজ দলীয় লোকজনসহ বিভিন্ন সময় মানুষ মেরে আহত করেন বলে স্থানীয় অভিযোগ করেছেন।নাজিরপুর ইউনিয়ন পুরো গুরুদাসপুরে আওয়ামী লীগসহ সবার কাছে আতংকের নাম এই চেয়ারম্যান শওকত রানা লাবু ও তার ভাই সুরুজ।তাদের ক্যাডাদের ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে কোন বক্তব্য দিতেও ভয় পায়।
১৭জানুয়ারী,২০১৮বুধবার::ক্রাইমর্বাতা.কম/প্রতিনিধি/আসাবি