ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:ঢাকা: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে দেশের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ বিএনপিকে ভোট দিয়ে বর্তমান স্বৈরাচারি ও অবৈধ সরকারের পতন ঘটাবে বলে দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘জিয়াউর রহমান যে রাজনৈতিক দর্শন দিয়েছিলেন, যে দল গঠন করেছিলেন সে দল আজও এ দেশের মানুষের বুকের মধ্যে। আজকে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে দেখুন না, শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ এই বিএনপিকে ভোট দেবে।’
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট বার অডিটরিয়মে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আয়োজিত দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই ফ্যাসিস্ট সরকার, যারা গণতন্ত্রকে একবার নয় বহুবার ধ্বংস করেছে। তারা আজকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার কেড়ে নিয়ে একটা একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার একেবারে শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগের লোকেরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম মিথ্যাচার করেন। এই মিথ্যাচারগুলো এজন্য করেন যে জিয়াউর রহমানকে শুধু তারা ভয় পান না, তারা মনে করেন তাঁর আদর্শ, দর্শন বাংলাদেশের সব মানুষের কাছে যদি পৌঁছে যায় তবে তাদের অস্তিত্ব থাকবে না। আমরা দেখেছি, এই আওয়ামী লীগ ছিল না, ছিল বাকশাল। তাদের দলের কোনও অস্তিত্ব ছিল না। অথচ সে দলকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিলেন জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়ে।’
খাল খনন কর্মসূচি, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দেয়াসহ প্রেসিডেন্ট জিয়ার রাজনৈতিক জীবনের নানামুখি দিক তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তিনি যেদিন শহীদ হলেন ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে সমগ্র নগরী মানুষে সয়লাভ হয়ে গিয়েছিল। সেদিন কৃষক তার কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল। এক রিকশাওয়ালা কালো পতাকা নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে পথে পথে ঘুরছিল। এগুলো আমার কথা নয়, টাইমস পত্রিকায় তখন এসব খবর ছাপা হয়েছিল। তাঁর জানাজায় লক্ষ লক্ষ মানুষ সেদিন উপস্থিত হয়েছিলেন।’
বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কষ্ট দিচ্ছে সরকার। আজকে আমরা সবাই জানি, এই মামলা একটা মিথ্যার উপর প্রতিষ্ঠিত, কিন্তু এই মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁকে (খালেদা জিয়া) সপ্তাহে প্রায় ৫ দিন আদালতে আটকে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই গণতন্ত্র বিরোধী শক্তিকে ক্ষমতায় দেখতে চাই না। আমরা চাই না বিএনপিকে ধ্বংস করে দিয়ে বাংলাদেরশের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করে একটা অপশক্তি আমাদের বুকের উপরে দিনের পর দিন চেপে থাকুক।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে দলটির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আসুন আমরা আজকের এই দিনে ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ ও একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বর্তমান সরকারকে বাধ্য করি। আসুন শপথ নিই- জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার।’
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
এছাড়াও আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, ভাইস-চেয়ারম্যান অ্যাড.জয়নাল আবদীন, শামসুজ্জামান দুদু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন,আহমদ আযম খান, সাংবাদিক মাহবুব উল্লাহ, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাড.মাহবুব উদ্দীন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন-নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু ও মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক হেলেন জেরীন খান প্রমুখ।১৮জানুয়ারী,২০১৮বৃহস্পতিবার::ক্রাইমর্বাতা.কম/প্রতিনিধি/আসাবি