ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট: ঢাকা : মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুলতানা কামাল বলেছেন, ‘অধিকার হারাতে হারাতে মানুষ হিসেবে নিজের মর্যাদা হারিয়ে ফেলেছি। মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ, নারীর প্রতি আক্রমণকারী, অন্য ধর্মের প্রতি অশ্রদ্ধাশীলরা দেশ দখল করে নিচ্ছে। দুর্বৃত্তের কাছে পরাজিত হয়ে যাচ্ছি।’
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) পরিচিতি সভায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল এসব কথা বলেন। আজকের অনুষ্ঠানে নতুন মানবাধিকার সংগঠন হিসেবে এমএসএফের কার্যক্রম, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও এর সদস্যদের পরিচিতি তুলে ধরা হয়।
সুলতানা কামাল বলেন, এমন পরিস্থিতিতে বাস করছি যেখানে মানবাধিকারের সংকট চলছে। মানবাধিকার যেন তুচ্ছ ব্যাপার। মানবাধিকারকে উন্নয়নের বিপরীতে দাঁড় করানো হয়েছে। মানবাধিকার একটি বোধের ব্যাপার। এর প্রতি নিজস্ব দায়িত্ব আছে। এই বোধ সম্প্রসারিত করার জন্যই এমএসএফ কাজ করবে।
মানবাধিকার নিয়ে অনেক প্রতিষ্ঠান কাজ করছে, তারপরেও নতুন সংগঠন কেন করা হলো—এই বিষয়ে সুলতানা কামাল বলেন, মানবাধিকার নিয়ে অনেক প্রতিষ্ঠান বেশ ভালো কাজ করছে। এমএসএফ অন্যান্য সংগঠনের মতো হবে না। এটি হবে আন্দোলনের মতো। মানুষের মধ্যে মানবাধিকার বোধ ছড়িয়ে দেওয়া, নাগরিক হিসেবে যে অধিকার আছে সেই সম্পর্কে সচেতন করাই হবে এমএসএফের উদ্দেশ্য।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, মানবাধিকারের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করা যায়নি। মানবাধিকারের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করা গেলে আরও সামনে এগিয়ে যেতে পারতাম।’ তিনি আরও বলেন, দেশে মানবাধিকারের নামে কিছু বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানের জন্ম হয়েছে। এসব বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান যেন মানবাধিকার নিয়ে বহু দিন ধরে কাজ করা সংগঠনগুলোর সুনাম ক্ষুণ্ন করতে না পারে।
অনুষ্ঠানে মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাসিম আখতার হুসেইন বলেন, রাজনীতি, ক্ষমতা বা উন্নয়ন নয়, শুধু সংস্কৃতিকে উপজীব্য করে এ সংগঠন জন্ম নিয়েছে। সংস্কৃতিকে ধারণ করে মানুষের নিজের অধিকারের জায়গা ফিরিয়ে দিতে চায় এ সংগঠন।
আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী সারা হোসেন বলেন, ‘মানবাধিকারের কথা বললে সরকার, মৌলবাদী ও কিছু ক্ষেত্রে বামপন্থীরা পাশ্চাত্যের দালাল বলে দাবি করে। দেখা যায়, একই রাজনৈতিক মতাদর্শের না হলে কোনো ব্যক্তি গুম হলেও আমরা সোচ্চার হতে পারি না।’
এমএসএফের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বলেছেন, সংবিধানে বলা আছে, রাষ্ট্র কারও অধিকার হরণ করবে না এবং অন্য কাউকে অধিকার হরণ করতে দেবে না। কিন্তু সংবিধানের সেই ‘না’কে ‘হ্যাঁ’তে রূপান্তর করতে নিরন্তর চেষ্টা চলে। অনুষ্ঠানে তিনি সংগঠনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কর্মপদ্ধতি নিয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনাও দেন।
১৮জানুয়ারী,২০১৮বৃহস্পতিবার::ক্রাইমর্বাতা.কম/প্রতিনিধি/আসাবি