শামসুজ্জোহা বাবু,গোদাগাড়ী প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ভাটোপাড়া ফুলতলা এলাকায় পদ্মা নদীর পাড় থেকে বালি ও মাটি উত্তল বন্ধ করে দিল এলাকাবাসী। গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ৭টার সময় বালি উত্তোলন করার সময় ভাটোপাড়া ফুলতলা গ্রামের প্রায় ৩০০ জন কৃষক সবাই কোদাল হাতে নিয়ে সড়ক গর্ত করে বন্ধ করে দিয়েছে। এলাকাবাসীরা জানান,বালি উত্তোলনের পাশাপাশি তারা আবাদী জমি নষ্ট করে মাটি উঠানোর জন্য আমরা বাধা দিয়েছি,আমরা অনেক কষ্ট করে চরের জমিতে কলাই ও মসুর চাষ করি এসব ফসল যদি নষ্ট হয়ে যায় তবে আমরা কি খাব। বাপ দাদার আমল থেকে আমরা সকল গ্রামবাসী চাষাবাদ করে থাকি।স্থানীয় লোকজন জানায়, উপজেলার ভাটোপাড়া ফুলতলা এলাকায় পদ্মা নদীর পাড় ঘেষে বিশাল চর জেগে উঠছে প্রতি বছর। বিশাল চরটিতে পলি মাটি পড়ায় কাঁশ বন সহ ফসল চাষ হচ্ছে।এই সব পলি মাটি উত্তোলন করে ট্রাক, টলি, লরিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইটভাটায়।কাঁশ বন ধংস করে পলি মাটি উত্তোলন করে নিয়ে যাওয়ার জন্য নদীর পাড় কেটে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। আর পাড় নিচের চর থেকে মাটি উত্তোলন করায় নদী তীর সংরক্ষণ বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। স্থানীয় লোকজন আরও জানায়, ভাটোপাড়া ফুলতলা এলাকা থেকে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক, টলি ও লরিতে পলি মাটি উত্তোলন করা হয়। মাটি উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত লরি ড্রাইভার আব্দুল হামিদ বলেন, প্রতি লরি মাটির জন্য বালুর ঘাট ইজাদারকে ৭০০ টাকা দিতে হয়। প্রতি লরি মাটি ইট ভাটায় বিক্রি করে ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। ইট ভাটা ছাড়াও পুকুর ও বাড়ী ঘর নির্মাণে পলি মাটির প্রয়োজন হয়। গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রায় ২৫টি ইট ভাটা রয়েছে। ভাটোপাড়া গ্রামের মনিরুল ইসলাম বলেন, বর্ষা শেষে ভাটোপাড়া ফুলতলা এলাকায় জেগে উঠা চরে বিভিন্ন ফসল চাষ করে আসছিল স্থানীয় প্রান্তিক কৃষক।মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার নুরুজ্জামান বলেন, প্রায় ১০ বছর থেকে ভাটোপাড়া ফুলতলা গ্রামের সকল ভূমিহীন কৃষক উন্নয়ন সমিতির সদস্যরা এই জমি গুলো চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে কিন্তু তাদের জমি গুলো কেটে মাটি উত্তলন করলে তারা পথে বসে যাবে।তাই সকল গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে বালি উত্তোলনের জন্য সড়কটি ন করে দেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। বালি উত্তলনকারী প্রতিষ্ঠানের ইজারাদার বাবর আলী বলেন, ভূমি মন্ত্রনালয়ের অনুমতিক্রমে বালি ও মাটি উত্তল করছি,এতে সাধারণ জনগনের কোন ক্ষতি হবেনা কারণ ফাকা চর থেকে বালি ও মাটি উত্তোলন করছি। উল্লেখ্য যে কিন্তু গত বছর (২০১৬ সাল) থেকে নদীর বালুর ঘাট ইজারা হওয়ায় ভাটোপাড়া ফুলতলা চরে ফসল চাষ করতে পাড়ছে না এলাকার দুই শতাধিক প্রান্তিক কৃষক। এই নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের দ্বারস্ত হয়ে কোন কাজ হয় নি। মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, নদীর ভাঙ্গন রোধে ভাটোপাড়া ফুলতলা এলাকায় নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধ রয়েছে। কিছু অংশ বাঁধ না হওয়ায় ঐ অংশের নদীর পাড় কেটে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। সে রাস্তা দিয়ে নদী পার হয়ে আসা চর আষাড়িয়া দহ এলাকার লোক যাতায়াত করেন। উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি সানওয়ার হোসেন বলেন বালি উত্তলনকারী প্রতিষ্ঠাটিকে মন্ত্রনালয় অনুমতি দিয়েছে তবে মাটি ও বালি উত্তোলনকারী ও গ্রামবাসির মধ্যে যে বিরোধ দেখা দিয়েছে তা নিরোসনের জন্য উভয় পক্ষকে বলা হয়েছে। গ্রামবাসী বলেছে আগামীকাল সোমবার আবার রাস্তা ঠিক করে দিব কিন্তু বালি বা মাটি উত্তল করতে দিব না।
Check Also
৩০ জুলাই পর্যন্ত অনেক দল সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি, সংগ্রামে যুক্ত হবে কি না: সারজিস আলম
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, …