ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:ঢাকা: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনসহ ৬ জনের মামলার রায় আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করা হবে।
বৃহস্পতিবার মামলায় উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হলে এ দিন ধার্য করা হয়। রাজধানীর বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান এ দিন ঠিক করে দেন।
মামলায় খালেদা জিয়াসহ অন্যরা হলেন- তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
আদালত সূত্র জানায়, দুদক ও আসামি পক্ষে ১৬ কার্যদিবস ধরে যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। আর ২৩৬ কার্যদিবস শুনানির পর এ মামলা রায়ের পর্যায়ে এল।
দুদকের পক্ষে আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল খালেদা জিয়াসহ ছয় আসামির সর্বোচ্চ সাজা দাবি করেন।
অপদিকে, খালেদা জিয়ার প্রধান আইনজীবী আবদুর রেজাক খান মামলাটিকে সারবত্তাহীন উল্লেখ করে খালেদা জিয়ার খালাস চান।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হন। আর বেলা তিনটা ২৫ মিনিটের দিকে আদালত চত্বর ত্যাগ করেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই দুদক রমনা থানায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
২০০৯ সালের ৫ আগস্ট এই মামলায় খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, মাগুরার বিএনপির সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
মামলায় শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন- কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান।
‘১৫ দিনের মধ্যে খালেদা জিয়াকে কারাগারে যেতে হবে’
এদিকে, ১৯ জানুয়ারি সন্ধ্যায় কক্সবাজারের চকরিয়ায় জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেছিলেন,
আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে যেতে হবে। তার এ বক্তব্য নিয়ে দেশব্যাপী আলোচনার ঝড় ওঠে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও রাঙ্গার এ বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেন।
২১ জানুয়ারি এক টুইট বার্তায় খালেদা জিয়া বলেন, ‘শুক্রবার, জানুয়ারি ১৯, পত্রিকায় এসেছে, বিনাভোটের এক প্রতিমন্ত্রী বলেছে, “১৫ দিনের মধ্যে খালেদা জিয়াকে জেলে যেতে হবে।” বিচারাধীন মামলার রায় ঘোষণা আদালত অবমাননা নয়কি? বিচারবিভাগের স্বাধীনতা রক্ষায় মাননীয় প্রধানবিচারপতি কি ব্যবস্থা নিচ্ছেন, জনগণ সেইদিকে সতর্ক নজর রাখছে।’
‘একদিনের জন্য হলেও খালেদা জিয়াকে কারাগারে যেতে হবে’
এছাড়া এই মামলার রায় প্রসঙ্গে ২১ জানুয়ারি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মামলার রায় আগামী দুই তিন মাসের মধ্যে হবে। রায়ে তিনি সাজাও পেতে পারেন আবার বেকসুর খালাসও পেতে পারেন। তবে আমার ধারণা তার সাজা হবে। খালেদা জিয়ার সাজা হলে একদিনের জন্য হলেও তাকে জেলে যেতে হবে। সাজার পরে বেগম খালেদা জিয়া যদি উচ্চ আদালত আপিল করেন আর হাইকোর্ট যদি বেগম খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে তাহলে তিনি আগামী নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারবেন বলে মন্তব্য করেছেন জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি।
এছাড়া, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় আরও একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এ মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ৩০ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন একই আদালত।
চ্যারিটেবল মামলায়- ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
এ মামলায় আরও যারা আছেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটি এর সাবেক নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।২৫জানুয়ারী,২০১৮ বৃস্পতিবার:ক্রাইমর্বাতা.কম/প্রতিনিধি/আসাবি