৮ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্র করে মুখোমুখি অবস্থায় দেশের বড় দুই দল

মুখোমুখি অবস্থানে দুই দল

৮ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্র করে মুখোমুখি অবস্থায় দেশের বড় দুই দল। ওইদিন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলার রায় ঘোষণার কথা রয়েছে। এ রায়কে ঘিরে ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে উত্তেজনা। ওইদিন দুই দলই মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে। যে কোনো মূল্যে মাঠ দখলে রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। বিএনপি নেতারা সরকারকে হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, খালেদা জিয়ার সাজা হলে ওইদিন থেকেই সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হবে। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, রায়কে কেন্দ্র করে সংঘাতের চেষ্টা হলে কঠোর জবাব দেয়া হবে। দুই দলের এমন মুখোমুখি অবস্থানে সবার মাঝেই বিরাজ করছে আতঙ্ক।

নৈরাজ্য করলে কঠোর হবে আ’লীগ

ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:     ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট’ মামলার রায়-পরবর্তী পরিস্থিতি দলীয় এবং প্রশাসনিকভাবে মোকাবেলা করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। রায়ের পর যদি বিএনপি বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য করে তা প্রশাসনিকভাবে দমন করার ওপর জোর দেয়া হবে। তবে ঢাকাসহ সারা দেশে সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম এবং সমমনা সংগঠনের নেতাকর্মীরা এদিন সতর্ক ও প্রস্তুত থাকবেন। দেশব্যাপী রাজপথে দলের উপস্থিতি জানান দেয়া হবে। এদিন কোনো কোনো সংগঠন মানববন্ধন করবে। আবার কোনো কোনো সংগঠনের পক্ষ থেকে উল্লেখযোগ্য মোড়গুলোতে আয়োজন করা হবে সমাবেশের। এছাড়া নেতাকর্মীরা নিজ নিজ ইউনিটে অবস্থান নিয়ে প্রস্তুত থাকবে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

৮ ফেব্রুয়ারির প্রস্তুতি নিয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক  বলেন, ‘নির্বাচন বানচালের নামে ২০১৪ সালে পাঁচ শতাধিক স্কুল-কলেজ পুড়িয়ে দিয়েছে বিএনপি-জামায়াত। পেট্রুলবোমা, গানপাউডার দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে তারা। নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে একটানা তিন মাস হরতাল অবরোধ করে দেশটাকে স্থবির করে দিয়েছিল। আন্দোলনের নামে তাদের এ বর্বরতা মানুষ মেনে নেয়নি। তাই একের পর এক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে তারা একই কায়দায় খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। পরিস্থিতি বিবেচনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগও রাজনৈতিকভাবে তাদের মোকাবেলায় মাঠে থাকবে।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং ২০১৪’র ৫ জানুয়ারি নির্বাচন-পরবর্তী ও পূর্ববর্তী সহিংসতার সময় আওয়ামী লীগ যেভাবে মাঠে ছিল একইভাবে ৮ ফেব্রুয়ারিও মাঠে থাকবে। দৃশ্যত রাজপথে অবস্থান থাকবেন সমমনা বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। কোথাও সহিংসতা-নৈরাজ্য দেখা দিলেই তা প্রতিহত করতে দৃশ্যমান হবেন তারা। ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের দিন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরিশাল সফরে যাবেন। সে লক্ষ্যে মূল দলের অনেক নেতা সেদিন বরিশালে অবস্থান করলেও সার্বিক পরিস্থিতির ওপর নজর রাখবেন তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের একটি সূত্র জানায়, পারতপক্ষে সেদিন সহিংসতায় জড়াবেন না তারা। দেশের মানুষের জানমাল রক্ষায় নেতাকর্মীরা প্রস্তুত থাকবে। কিন্তু বিএনপি সহিংসতা-বিশৃঙ্খলা করলে প্রশাসনিকভাবেই তা দমন করা হবে। আর মিছিল-স্লোগান-মানববন্ধনে রাজপথ কাঁপাবেন নেতাকর্মীরা।

আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ  বলেন, এদিন রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে সতর্ক দৃষ্টি রাখবে নেতাকর্মীরা। যদি বিশৃঙ্খলা-নৈরাজ্য করার চেষ্টা করা হয় তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তা প্রতিহত করা হবে।

৮ ফেব্রুয়ারিকে ঘিরে দলের পক্ষ থেকে সতর্ক থাকার নির্দেশ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন তিন সহযোগী, একটি ভ্রাতৃপ্রতিম এবং সমমনা বেশ কয়েকটি সংগঠনের নেতা। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ বলেন, তারা সেদিন রাজপথে থাকবেন। থানা-ওয়ার্ডের নেতারা নিজ নিজ স্থানে সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন। মহানগর আওয়ামী লীগ সর্বশক্তি দিয়ে এ দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াবে, যে কোনো ধরনের অরাজকতা প্রতিরোধ করবে।

একইভাবে মাঠে থাকার কথা জানিয়েছেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ। তিনি বলেন, তারা সতর্ক অবস্থানে থাকবেন। তবে কোন প্রক্রিয়ায়, কোথায় অবস্থান নেবেন তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ যুগান্তরকে বলেন, তার সংগঠনের নেতাকর্মীরা নিজ নিজ ইউনিটে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ধন-সম্পদ রক্ষার্থে যে কোনো অশুভ উদ্যোগ ভেস্তে দেবেন তারা। এছাড়া জেলা-মহানগরের নেতারা যার যার এলাকায় সংঘবদ্ধভাবে সতর্ক অবস্থানে থাকবেন। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুন সরকার রানা যুগান্তরকে বলেন, আট ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ের দিন তারা রাজপথে অবস্থান নেবেন। খালেদা জিয়ার শাস্তি দাবি করে তাদের সংগঠন এদিন মানববন্ধন করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এদিকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলছেন, রায়ের আগেই বিএনপি নেতারা যেভাবে হুমকি দিচ্ছেন তাতে বিএনপি সেদিন নাশকতা-বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য ঘটাতে পারে। নিকট-অতীতেই বিএনপি ও তাদের মিত্রদের আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা, স্কুল-কলেজ পোড়ানো, গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে রাখা, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার রেকর্ড রয়েছে। কিন্তু পেট্রুলবোমা, গানপাউডার আর আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানোর ঘটনা এদেশে আর ঘটতে দেয়া হবে না। কেউ যদি দুর্নীতি করে, ঘুষ খায়, অন্যায় করে তাকে তার শাস্তি পেতেই হবে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। রায় কি হবে সেটা আদালতের বিষয়। তারা আশা করেন, বিএনপি সেটা আইনি পথেই মোকাবেলা করবে। কিন্তু এর ফলাফল যদি রাস্তায় গড়ায় আওয়ামী লীগ ছেড়ে কথা বলবে না। রাষ্ট্র এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া সরকারের দায়িত্ব। এদিন নাশকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটলে প্রতিহত করবেন তারা।

অলআউট প্রস্তুতি বিএনপির : বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলার রায়কে কেন্দ্র করে রাজপথে ব্যাপক গণজমায়েতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। রায়ের দিন লাখো কর্মীকে রাজপথে নামার নির্দেশ দিয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড। রায় বিপক্ষে গেলে রাজপথে নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতির মাধ্যমে এর প্রতিবাদ জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে একাধিক টিম ইতিমধ্যে তৃণমূল সফর করে কেন্দ্রের এমন বার্তা পৌঁছে দিয়েছে। এখনও বিভিন্ন জেলা সফরে আছে তারা। তৃণমূলের পাশাপাশি যুবদল, ছাত্রদল, মহিলা দল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এবং জাতীয়তাবাদী পেশাজীবী সংগঠনও দিনটিকে ঘিরে আলাদা প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রতিটি নেতাকর্মী যাতে ওইদিন রাজপথে থাকে সে ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। রায়ের দিন যারা রাজপথে থাকবে না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে। সিনিয়র নেতাদের ওইদিন রাজপথে নামতে বলা হয়েছে। এর প্রস্তুতি হিসেবে আজ মঙ্গলবার থেকেই ব্যাপক শোডাউন করবে দলটি। আজ বিশেষ জজ আদালতে হাজিরা দিতে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে ব্যাপকসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত থাকবেন। এ লক্ষ্যে মহানগর দক্ষিণ ও মহিলা দল সোমবার বিকালে যৌথসভা করে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর  বলেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের যে রাজনীতি তার প্রতীক হচ্ছেন খালেদা জিয়া। তাকে যদি রাজনীতি থেকে সরানো যায় তাহলে তাদের (ক্ষমতাসীনদের) সুবিধা। সে জন্য তারা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। মামলায় সাজা দিয়ে তাকে যদি আটকানো যায়, রাজনীতি থেকে দূরে সরানো যায় তাহলে রাস্তা পরিষ্কার। সরকারের এমন কমর্কাণ্ডের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এ সরকারকে সরাতে না পারলে দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তাদের পতন নিশ্চিত করতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা কখনও সংঘাত-সংঘর্ষে বিশ্বাস করি না। বিগত সময়ে আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে নাশকতা চালিয়ে আমাদের ওপরই সরকার দায় চাপিয়েছে। চেয়ারপারসনের মিথ্যা মামলার রায়কে কেন্দ্র করে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ এর প্রতিবাদ জানাতে পারে। তবে তা শান্তিপূর্ণভাবেই করা হবে। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা এখন থেকেই উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করছে। তৃতীয় কোনো পক্ষ যাতে স্যাবোটাজ তৈরি করতে না পারে সে ব্যাপারে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, রায়কে কেন্দ্র করে শান্তিপূর্ণ গণজমায়েতের মধ্য দিয়ে নিজেদের শক্তি জানান দিতে সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপির হাইকমান্ড। ইতিমধ্যে স্থায়ী কমিটি ও জোটের শীর্ষ নেতাদের পরামর্শ নিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ৩ ফেব্রুয়ারি ডাকা হয়েছে জাতীয় নির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভা। তৃণমূলের মতামত নিতেই এ সভা ডাকা হয়েছে। এরপর চূড়ান্ত করা হবে ৮ ফেব্রুয়ারির কর্মপরিকল্পনা। এখন পর্যন্ত রাজপথে ব্যাপক শোডাউনের নির্দেশ থাকলেও সুনির্দিষ্টভাবে কোনো নেতাকে দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া হয়নি। রায়ের এক বা দু’দিন আগে কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া হবে। কারা কোন এলাকায় কার নেতৃত্বে অবস্থান করবেন তা সুনির্দিষ্ট করে দেয়া হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে কয়েক নেতাকে পুরো বিষয়টি মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দেয়া হবে। মাঠপর্যায়ের নেতারা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তাদের সঙ্গে আলাপ করে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেবেন। জোটের শরিকরা যাতে মাঠে থাকে, সে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, চেয়ারপারসনের মামলায় ‘নেতিবাচক’ কোনো রায় হলে তার পরিণতি হবে ‘ভয়াবহ’। তিনি বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারি নেতিবাচক কোনো সিদ্ধান্ত সরকার কর্তৃক আদিষ্ট হয়ে যদি আদালত থেকে প্রকাশ পায়, তাহলে তখন থেকে এ সরকারের পতনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হবে। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু করার ঘোষণা দিই বা না দিই, এমন কিছু যে ঘটবে না- সে নিশ্চয়তা আমরা দিতে পারি না।

সূত্র জানায়, সরকার বিএনপিকে রাজপথে নামতে বাধা দেবে এমনটা ধরে নিয়েই প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। রায়কে ঘিরে তৃতীয় পক্ষ যাতে কোনো স্যাবোটাজ করতে না পারে সেদিকে সতর্ক দলটি। তবে বিএনপির একজন নীতিনির্ধারক জানান, আমাদের নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিলেও সংঘাতের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। কারণ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপিকে রাজপথে নামতে দেবে বলে মনে হয় না। ক্ষমতাসীনরা আইনশৃঙ্খলা বাহনীকে ব্যবহার করে বিএনপিকে রাজপথে নামতে বাধা দেবে। পাশাপাশি ক্ষমতাসীনরাও রাজপথে থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। ওই নেতা আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ক্ষমতাসীনরা যৌথভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালালে সে ক্ষেত্রে বিএনপির কী করার থাকবে। নিশ্চয় কোথাও না কোথাও এ প্রতিবাদ জানাবে। আর তখনি শুরু হবে সংঘাত।

খালেদা জিয়ার মামলার রায়কে কেন্দ্র করে সারা দেশে নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণভাবে রাজপথে অবস্থান নেয়ার বার্তা দেয়া হচ্ছে। সর্বশেষ রোববার উত্তরবঙ্গে কয়েকটি জেলা সফর করে ঢাকায় ফেরেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। তিনি যুগান্তরকে বলেন, মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হলে দেশের জনগণ তা কখনও মেনে নেবে না। এর প্রতিবাদে তারা রাজপথে নেমে আসবে। তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ব্যাপক গণজমায়েতের মাধ্যমে সরকারের এ হীন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাব। নেতাকর্মীরা যাতে কোনো ধরনের সংঘাত বা সংঘর্ষে জড়িয়ে না পড়ে সে ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, বিএনপির পাশাপাশি ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোও দিনটিকে কেন্দ্র করে পৃথক প্রস্তুতি নিচ্ছে। গ্রেফতার এড়িয়ে সতর্কতার সঙ্গে তারা চলাফেরা করছেন। বিভিন্ন ইউনিটের নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করছেন। সোমবার নয়াপল্টনে মহিলা দল যৌথসভা করে। এতে কেন্দ্রীয় নেত্রী ছাড়াও মহানগরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরা ও রায়ের দিন ব্যাপক শোডাউনের সিদ্ধান্ত হয়। বিকালে ভাসানী মিলনায়তনে যৌথসভা করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি। দক্ষিণের প্রায় প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ড নেতারা এতে উপস্থিত ছিলেন। সভায় খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরার দিন এবং ৮ ফেব্রুয়ারি রায়ের দিন মহানগরের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে রাজপথে থাকার কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়। দক্ষিণের শীর্ষ নেতারা জানান, যারা রাজপথে থাকবে না তাদের আগামীতে দলে গুরুত্বপূর্ণ কোনো দায়িত্ব দেয়া হবে না। এমনকি পদধারী নেতারা রাজপথে না থাকলে তাদের পদ থাকবে কিনা তা নিয়ে ভাবা হবে।

ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসনকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র কখনও সফল হবে না। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার রায়ের দিন ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে আমরা রাজপথে অবস্থান নেব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতার বা গুলি চালালো কিনা সেটা ভাবার সময় আমাদের নেই। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে রাজপথে অবস্থান নেব।যুগান্তর

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।