ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:::গ্রামজুড়ে শুধুই নারীদের বাস। অনুমতি নেই কোনো পুরুষ প্রবেশের। তিন শতাধিক নারী বসবাস করেন সেখানে। কেউ কোনো পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক করতে চাইলে তাকে তৎক্ষণাৎ বের করে দেয়া হয় গ্রাম থেকে। শুনতে অবাক লাগলেও এমন একটি গ্রাম রয়েছে মিসরে।
সামাহা নামের গ্রামটিকে মিসর সরকার বরাদ্দ করেছে বৃদ্ধা, বিধবা ও তালাকপ্রাপ্ত নারীদের জন্য। গ্রামটির অবস্থান দক্ষিণ মিসরের আসওয়ান শহর থেকে ১২০ কি.মি দূরে ইদফো নামক ছোট শহরে। গ্রামটির চারপাশে কৃষিভূমি। পশু-পাখি পালন ও চাষাবাদ করে জীবন ধারণ করেন গ্রামের নারীরা।
সৌদি গেজেট জানায়, গ্রামটির ৩০৩টি পরিবারে শুধু নারী ও মেয়ে শিশুর বাস। প্রত্যেক নারীকে একটি করে বাড়ি ও এক খণ্ড করে জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রকল্প ও সংগঠনের পক্ষ থেকে তাদের গৃহসামগ্রী ও কৃষি উপকরণ সরবরাহ করা হয়। তাদের স্বল্পমেয়াদি ঋণও দেয়া হয় কৃষিকাজের জন্য। গ্রামের প্রধান তত্ত্বাবধানকারী হামদি আল কাশেফ বলেন, ‘গ্রামের প্রকল্পটি শুরু হয় ১৯৯৮ সালে। সে সময় কৃষি মন্ত্রণালয় শুধু তালাকপ্রাপ্ত ও বিধবা নারীদের জন্য দুটি গ্রাম বরাদ্দ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।’
একই ধরনের একটা গ্রাম দেখা যায় আফ্রিকার দেশ কেনিয়ায়। কেনিয়ার উত্তরাঞ্চলের ওই গ্রামের নাম ‘উমোজা’। বিস্ময়কর বৈশিষ্ট্যের জন্য গ্রামটিকে বলা হয় নোম্যান্স ল্যান্ড। নোম্যান্স ল্যান্ড বলতে সাধারণত দুদেশের সীমান্তসংলগ্ন এমন এলাকাকে বোঝায় যেখানে নারী-পুরুষ-শিশু নির্বিশেষে সবারই প্রবেশ নিষেধ। তবে কেনিয়ার ওই গ্রামকে নোম্যান্স ল্যান্ড দ্বারা বোঝানো হয়, এখানে কোনো পুরুষ নেই। শুধুই নারীদের গ্রাম। এখন থেকে প্রায় ৩০ বছর আগে রেবেকা লোলোসোলি নামের এক নারী নারীশাসিত এ গ্রামের গোড়াপত্তন করেন এবং পুরুষদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করে দেন। কেনিয়ার সামবুরু জাতিগোষ্ঠীর সদস্য রেবেকা। তিনি নারীকে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের নির্যাতন ও লাঞ্ছনা থেকে বাঁচাতে এই গ্রাম প্রতিষ্ঠা করেন। তিনিই বর্তমানে ‘উমোজা উসাউ উইমেন্স ভিলেজ’-এর প্রধান হিসেবে কাজ করছেন।
এমন আরেকটি গ্রাম রয়েছে ব্রাজিলে। দক্ষিণ-পূর্ব ব্রাজিলের নোইভা ডো করডেরিয়ো এমন একটি গ্রাম যেখানে শুধু সুন্দরী নারীরাই বাস করেন। ১৮৯০ সালে এক মেয়েকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে দেয়া হয়। এরপর শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে তিনি চলে আসেন গ্রামটিতে। মারিয়া সেনহোরিনা ডে লিমা নামের সেই মেয়েটি ১৮৯১ সালে এই গ্রামের পত্তন করেন। গ্রামটির সন্ধান পাওয়ার পর আরও অনেক নারীই সেখানে এসে বসবাস করতে শুরু করেন। এ সময় এই এলাকায় শুধু একটি চার্চ ছিল। চার্চের লোকদের সঙ্গে মিলে ঘর-বাড়িও তৈরি করে ফেলেন তারা। যারা বিয়ে করতেন চান না তারা বা যারা একা থাকতে চান তারা এই গ্রামে বাস করেন। চাষসহ প্রয়োজনীয় সব কাজই নিজেরা করে এখানকার নারী এবং তরুণীরা। তাদেরও প্রধান পেশা কৃষি।