সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে গতি নেই:পুরানো কমিটি দিয়েই চলছে কার্যক্রম

ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:    সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর জেলা পরিষদ নির্বাচনের পর থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের ¯œায়ুযুদ্ধের কারণে সাংগঠনিক কার্যক্রমে ভাটা পড়েছে। গঠনতান্ত্রিকভাবে সম্মেলনের তারিখ থেকে ৩বছর মেয়াদী জেলা কমিটির মেয়াদ আজ ৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে। কিন্তু অদ্যাবধি নির্বাচিত ওই কমিটি তাদের মেয়াদের তিন বছরেও দুটি উপজেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি। এছাড়া সকল উপজেলার কমিটির মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এসে ঘটা করে সদস্য সংগ্রহ অভিযান উদ্বোধন করলেও তিনি চলে যাওয়ার পর জেলা, উপজেলাসহ কোন ইউনিট একজন সদস্যও সংগ্রহ করতে পারেননি।

সসূত্র জানায়, টানা ১০ বছর পর ২০১৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ সংগঠনের জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম  ঘোষণা করেন। ঐ দিন থেকে ধরা হলে আজ কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

সুত্র জানায়, সম্মেলনের পর ২০১৬ সালের ২০ মার্চ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা জেলা শাখার ৭১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করেন। বর্তমানে এ কমিটির মধ্যে ২জন সদস্য মারা গেছেন। তারা হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নাসিম ময়না ও  এম মহিদুল হক। পরবর্তীতে আরো ৪টি পদ বাড়ানো হলেও নানা কারণে এখনও পর্যন্ত পুর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেননি জেলা আ.লীগ।

এছাড়া ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর জেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকের দ্বন্দ্বে বিভক্ত হয়ে পড়েন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। জেলা পরিষদ নির্বাচনের পর থেকে জেলা কমিটির তেমন কোন কার্যক্রম নেই বললেও চলে। এতে নেতা কর্মীদের মনে নেমে এসেছে হতাশা।

উল্লেখ্য যে, ১৯৭০ সাল থেকে বিরতিহীনভাবে সভাপতির পদে ছিলেন সৈয়দ কামাল বখত সাকী। ২০০০ সালের ১৫ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করলে দলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হন ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর ২০০৫ সালের ৮ এপ্রিল গঠিত জেলা কমিটিতে সভাপতি ও সম্পাদকের পদে জয়লাভ করেন ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান ও মো. নজরুল ইসলাম।

এদিকে সম্মেলনের পর জেলা কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি। কিন্তু তারপরে ২ মাস অতিবাহিত হলেও একজন সদস্যও এখনো সসংগ্রহ করা হয়নি। উপজেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর উপজেলায় সম্মেলন হলেও গত তিন বছরেও পুর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। অন্য উপজেলাগুলোর কমিটির মেয়াদ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব নেই। সকল কর্মসূচি যৌথভাবে পালন করা হচ্ছে। উপজেলা কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে, তবে সদস্য সংগ্রহ অভিযানের পর কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক প্রতিটি উপজেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হবে। কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর উপজেলার পূর্ণাঙ্গ নেই কিন্তু শ্যামনগরে খুব শিঘ্রই কমিটি গঠন করা হবে। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের অনুমোদিত কমিটির মধ্যে ২জন মারা গেছে, ৪টা পদ বেড়েছে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক শূন্যপদগুলো পূরণ করা হবে এবং জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি সাইফুল করিম সাবুকে বলা হয়েছে যে কোন একটি পদে থাকার জন্য। তাছাড়া পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হয়েছে ২০১৬ সালের ২০ মার্চ। ওই দিন থেকেই কমিটির মেয়াদ শুরু হয়েছে। ফলে আজ সম্মেলনের তিন বছর পূর্তি হলেও কমিটির মেয়াদ এখনও শেষ হয়নি।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদ বলেন, শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ উপজেলায় পুর্ণাঙ্গ কমিটি এখনও পর্যন্ত করা হয়নি তবে কাজ চলছে। জেলা কমিটির যেসকল পদ শুন্য রয়েছে তা আমরা কেন্দ্রীয় কমিটির নিকট পশ করেছি দ্রুত পুর্ণাঙ্গ কমিটি করা হবে। এছাড়া জেলা কমিটির মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব নেই। সকল কর্মসূচি আমরা যৌথভাবে পালন করছি।পত্রদূত

 

Check Also

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত হতে পারে : অ্যাটর্নি জেনারেল

র্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত হতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।