‘সরকারকে উৎখাত করে ঘরে ফিরবেন, আজ সেই খালেদা কোথায়’

ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোট: বরিশাল: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০১৫ সালে যে খালেদা জিয়া বলেছেন আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করে ঘরে ফিরবেন, আজ সেই খালেদা কোথায়? বৃহস্পতিবার বিকেলে বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয় খালেদা জিয়ার। রায় ঘোষণার পর তাকে ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারে নেয়া হয়।

জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দেশের উন্নয়নে বিশ্বাস করি, মানুষের কল্যাণে কাজ করি। আর বিএনপি কী করেছে? আপনাদের মনে আছে, ২০১৫ সালে ওই খালেদা জিয়া তার অফিসে বসে বলল, আওয়ামী লীগ সরকার উৎখাত না করে সে ঘরে ফিরবে না। আর আগুন দিয়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার গাড়ি পোড়ালো। পাঁচশ’র কাছাকাছি মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে। তিন হাজারের উপর মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে আহত করেছে। আর লুটপাট করেছে। আজকে তিনি কোথায়?’

তিনি বলেন, ‘মানুষের উপর অত্যাচার করলে আল্লাহর আরশও কেঁপে যায়। যারা মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, ওই বিচার এমনিতেই হয়। ওই বিচারই হচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষ পুড়িয়ে মারলে, এতিমদের টাকা লুটপাট করে খেলে তার সাজা এভাবেই হয়। লজ্জা থাকলে খালদা জিয়া আর দুর্নীতি করবেন না।

বৃহস্পতিবার বিকালে বরিশাল বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আওয়ামী লীগ আয়েজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।

এর আগে বহুল আলোচিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ৫ বছর এবং তারেক রহমানসহ বাকি আসামিদের ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে খালেদা জিয়া ছাড়া বাকি আসামিদের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

এর আগে দুপুর ২টা ১৪ মিনিটের দিকে আদালত কক্ষে প্রবেশ করেন বিচারক বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। দুপুর ২টা ১৬ মিনিটের দিকে ৬৩২ পৃষ্ঠার রায় পড়া শুরু করেন তিনি। এর আগে দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের দিকে বেগম খালেদা জিয়া আদালত চত্বরে পৌঁছান।

এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে তিনি গুলশানের নিজ বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে আদালতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। এরই মধ্যে রায়কে ঘিরে দেশজুড়ে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। আদালতে যাওয়ার পথে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে পুলিশের সঙ্গে তার দলের কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশ ১০-১২ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এরপর কাকরাইল মোড়ে পুলিশ বক্সে ভাঙচুর করে বিএনপি কর্মীরা। সেখান থেকে আটক করা হয়েছে অনেককে।

এর আগে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মগবাজার এলাকায় এলে শত শত নেতাকর্মী সেখানে যুক্ত হন। এ সময় রাস্তার পাশেও অনেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন। নেতাকর্মীরা মোটর সাইকেলের বহর নিয়ে সেখানে যুক্ত হন। তারা খালেদা জিয়ার নামে স্লোগান দিয়ে এগোতে থাকেন।

এই মামলার প্রধান আসামি বিএনপির চেয়ারপারসন এবং তিনতিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ফলে দেশবাসীর আগ্রহ অন্যরকম। রায়ের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই টানটান উত্তেজনা জনমনে ছড়িয়ে পড়ে। রায়কে ঘিরে আওয়ামী লীগ-বিএনপি মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়েছে। রাজনীতির মাঠে রায় নিয়ে আলোচনায় গুরুত্ব পাচ্ছে জাতীয় নির্বাচনও।

Check Also

প্রত্যেকটা অফিসের কেরানি পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের দোসর : আসিফ মাহমুদ

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।