* খালেদা জিয়ার বিষয়ে কিছু করার নেই : ইসি
স্টাফ রিপোর্টার : সবার অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে ‘স্বাধীন ও বিশ্বস্ত’ নির্বাচন কমিশন দেখতে চাওয়ার কথা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। সিইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধি দলের নেতা জ্যঁ ল্যামবার্ট সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় ইইউ। এজন্য নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে হবে।
গতকাল বুধবার বিকালে রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিকাল ৩টা ১০ মিনিটে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার সঙ্গে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয়।
প্রতিনিধি দলের নেতা আরো বলেন, স্বাধীন ও বিশ্বস্ত নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এটা আগামী নির্বাচনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ যেন সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোটাররা তাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে। যেন সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সিইসি নূরুল হুদার সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে জ্যঁ ল্যামবার্টের নেতৃত্বে আট সদস্য অংশ নেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ নেয়া, না নেয়ার বিষয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে একজন জানতে চেয়েছিলেন। সিইসি তাদের বলেছেন, এটি আদালতের বিষয়। আদালত যদি অনুমতি দেন তাহলে ইসির কিছু করার নেই। আর না করলেও ইসির কোনো ভূমিকা থাকবে না। কমিশন সংবিধান ও আইন অনুযায়ী সবকিছু করবে।
হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, প্রতিনিধি দল মূলত আমাদের নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। নির্বাচনী খরচের সার্বিক তথ্যও জানতে চেয়েছে। আমরা বলেছি, নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযারী তা সরকার বহন করে থাকে। তিনি বলেন, তারা আগামী সংসদ এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল। সিইসি তাদের বলেছেন, রাষ্ট্রপতি পদে সংসদ সদস্যরা ভোট দেন। এবার যেহেতু একজন প্রার্থী ছিলেন। তাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৫ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। বর্তমানে ঢাকার পুরানো কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন খালেদা জিয়া।
আইন অনুযায়ী, ফৌজদারি মামলায় কারও ন্যূনতম দুই বছর কারাদ- হলে তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবেন। সেক্ষেত্রে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৫ বছর কারাদ- হওয়ায় তিনিও অযোগ্য। তবে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে এবং উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ রয়েছে।
—0——–
স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকা সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে চেয়ারর্পাসনের গুলশান কার্যালয় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির পক্ষে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এনাম আহমেদ চৌধুরী, রিয়াজ রহমান, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, আবদুল কাইয়ুম, বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন প্রমুখ।
বৈঠকে সফররত দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান জিন ল্যামবার্ট এর নেতৃত্বে ইইউ প্রতিনিধি দলের মধ্যে রয়েছেন জেমস নিকোলসন, রিচার্ড করবেট, ওয়াযিদ খান ও সাজ্জাদ করিম।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিদেশী কূটনৈতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছিল বিএনপি। বৈঠকে খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করেছেন বিএনপি নেতারা।
সূত্র জানায়, সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলকেও বিএনপি চেয়ারপার্সনের সাজা ও কারাগারের তার অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া চলমান রাজনীতির নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।