ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট: যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় একটি হাই স্কুলে বন্দুকবাজের হামলায় অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। হামলাকারীর নাম নিকোলাস ক্রুজ। তার বয়স ১৯ বছর। তিনি ওই স্কুলের সাবেক ছাত্র। তাকে স্কুলটি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
বুধবার ক্রুজ স্কুলে প্রবেশ করে তার রাইফেল দিয়ে গুলিবর্ষণ করতে থাকে। গেটের কাছেই অন্তত তিনজন নিহত হয়। স্কুলভবনে নিহত হয় ১২ জন। বাকিরা অন্যত্র নিহত হয়।
এদিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে তিনটি সন্ত্রাসী হামলায় মোট ২১ জনের মৃত্যু ঘটেছে। এতে দেশটির আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ভয়াবহ প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, বুধবার খোদ মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার সদর দফতরের বন্দুকবাজের হামলায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে৷ ওয়াশিংটনের ঢিল ছোড়া দূরত্বে ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি বা এনএসএ’র সদর দফতরে হঠাতই এক ব্যক্তি আচমকা এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে৷ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন তিনজন৷
এনএসএ’র পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গুলি চালোনার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে৷ মুহূর্তেই ওই বন্দুকবাজকে গ্রেফতারও করা হয়৷ এদিন কী কারণে ওই ব্যক্তির গুলি চালিয়েছল, তা জানতে শুরু হয়েছে তদন্ত৷
মঙ্গলবার রাতেও বন্দুকবাজের হামলায় রক্তাক্ত হল আমেরিকার নিউ অরলেন্স৷ ওই ঘটনায় মৃত্যু হয় দু’জনের৷ জখম হন তিনজন৷ এদিন সকালেও আমেরিকার এই অঙ্গরাজ্যে দু’টি সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটে৷ বুধবার শেষ রাতে ফ্লোরিডার একটি নামী হাইস্কুলের মধ্যে গুলি চালোনার খবর পাওয়া যায়৷ দুষ্কৃতিকারীর ছোঁড়া এলোপাথাড়ি গুলিতে ১৭ জনের মৃত্যু ও ৫০ ছাত্র জখম হন৷ আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে৷
গোটা স্কুল-চত্বর ঘিরে ফেলেছে শুরু হয় পুলিশ তল্লাশি৷ আততায়ীকে ধরতে আকাশ পথে শুরু হয় নজরদারি৷ স্কুল-সংলগ্ন প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা বন্ধ করে দেয় পুলিশ৷ স্কুলের মধ্যেই আততায়ীরা লুকিয়ে রয়েছে বলে প্রথমে অনুমান করা হয়৷ পরে পুলিশি অভিযানে আততায়ীকে ধরে ফেলে পুলিশ৷ ধৃতের সঙ্গে কোনও জঙ্গিযোগ রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশ৷
এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইটারে দুঃখ প্রকাশ করেন৷ বলেন, ফ্লোরিডায় ভয়ঙ্কর গোলাগুলির শিকার হওয়ার পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রয়েছে৷ তবে, এই ঘটনার পর কোনো ছাত্র, শিক্ষক যেন ভাবেন না, আমেরিকার স্কুল তাদের জন্য নিরাপদ নয়৷ দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের কাজ৷’’
এর আগে গত বছরের শেষের দিকে ফ্লোরিডা বিমানবন্দরে বন্দুকবাজের হামলায় পাঁচ বিমানযাত্রী মৃত্যু হয়৷ ঘটনায় জখম হয়েছেন আরও আট যাত্রী৷ ফোর্ট লডারডেল বিমানবন্দরে গুলি চালানোর ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করলেও ফ্লোরিডার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে৷ লাগাতার বন্দুকবাজদের হামলা ও হতাহতের খবরে বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সেদেশের বাসিন্দারা৷ কিন্তু, কী কারণে এই ঘটনা? লাগাতার কেন ঘটে চলেছে বন্দুকবাজদের দাপট? ঘটনার পেছনে কী বিলাসবহুল জীবনের বেপরোয়া মনোভাব, নাকি ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ? আপাতত এই প্রশ্নগুলিই ভাবাচ্ছে ফ্লোরিডা প্রশাসনকে৷
পুলিশ জানিয়েছে, প্রথম ঘটনাটি ঘটে ঐতিহাসিক স্থান মার্দি গ্র্যাস প্যারেডে। এখানে এক বন্দুকবাজের হামলায় একজনের মৃত্যু হয়। জখম হন দু’জন। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে একটি গোলমালকে কেন্দ্র করে। এক্ষেত্রেও এক ব্যক্তিকে আচমকা গুলি চালিয়ে বসে অন্যজন। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে নিউ অরলেন্স পুলিশ। সবমিলিয়ে একদিনে আমেরিকায় বন্দুকবাজের হামলায় মৃত্যু হল মোট চারজনের৷ জখম হয়েছেন মোট ৫৫ জন।
এদিনের এই ঘটনার পর মার্কিন নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ লাগাতার বন্দুকবাজদের হামলা ও হতাহতের খবরে বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সেদেশের বাসিন্দারা৷ কিন্তু, কী কারণে এই ঘটনা? লাগাতার কেন ঘটে চলেছে বন্দুকবাজদের দাপট? ঘটনার পেছনে কী বিলাসবহুল জীবনের বেপরোয়া মনোভাব, নাকি ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ? আপাতত এই প্রশ্নগুলিই ভাবাচ্ছে মার্কিন প্রশাসনকে৷