শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করব: মির্জা ফখরুল

ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:    বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলন-কর্মসূচি থেকে ‘রাজনৈতিক সুবিধা’ নিতে সরকারি দল উস্কানি দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ শনিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার কারামুক্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি উদ্বোধনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, সরকারি দল উস্কানি দিবে যাতে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হয়, তাঁরা রাজনৈতিক সুবিধা নিতে পারে। আমরা তাদের সেই সুযোগ দিব না। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আমরা আদায় করব।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা আজ বাংলাদোশের ইতিহাসে সবচে সংকটময় মুহূর্তে উপস্থিত হয়েছি। এ দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব থাকবে কি না সে প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছি। তাই গণতন্ত্র, নাগরিক ও মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে ঘর থেকে বের হয়ে আসুন, সব অন্যায়- অপশক্তির বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করুন।

শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনে শরীক হতে নেতাকর্মীদের রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আমরা আদায় করব। আমি দলের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানব, আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করুন, রাজপথে নেমে আসুন, কোনো বিশৃঙ্খলা করবেন না।জনগণের উত্তাল প্রতিবাদে বর্তমান সরকারকে বিদায় নিতে হবে বলে এসময় তিনি  মন্তব্য করেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু বর্তমান অবৈধ সরকার মিথ্যা, সাজানো মামলায় তাকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটক করে রেখেছে। কারাগার থেকে তাকে মুক্ত করবার জন্য, দেশের হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্র মুক্ত করবার জন্য, মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। সেই আন্দোলন আজ চূড়ান্ত পর্যায়ে। তার অংশ হিসেবে আজকের এই গণস্বাক্ষর কর্মসূচি, এ কর্মসূচি চলতে থাকবে।

গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, যার মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে এবং দেশের মানুষ আবারও শান্তিতে থাকতে পারবে।

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা অনির্বাচিত, অনৈতিক সরকারের পদত্যাগ ও খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছি। খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠিয়ে দেশের মানুষ ও গণতন্ত্রকে কারাগারে পাঠিয়েছে। খালেদা জিয়ার মুক্তি দেশের সাধারণ মানুষ ও গণতন্ত্রের মুক্তি।

স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নিজেই বলেছেন, বিএনপির অক্ষমতার কারণে তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি। আমি তাকে বলতে চাই- বিএনপি সন্ত্রাস নয়, শান্তিতে বিশ্বাস করে। আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে দুর্বলতা ভাবলে ভুল করবেন। আপনারা আমাদের উস্কানি দিচ্ছেন, যাতে সেই সুযোগে নিজেরা অপকর্ম, নাশকতা করে বিএনপির ওপর দোষ চাপাতে পারেন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সলিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ এবং দুই কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।

রায় ঘোষণার পর পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয় বিএনপি চেয়ারপারান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। এরপর থেকেই খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসেছে বিএনপি। সূত্র: পার্সটুডে।

Check Also

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করেননি সমাজী

জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে আন্তর্জাতিক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।