মসিয়াররহমান কাজল,বেনাপোল:দেশের সর্ববৃহত স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে আমদানি রফতানি বানিজ্যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ক্রমেইআমদানি বানিজ্য কমে রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের ধ্বস নামতে শুরু করেছে। বর্তমানে ওপারে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় ৫ হাজার পন্য বোঝাই ট্রাক আটকে আছে সেখানকার সিন্ডিকেটের কারনে। বন্দরের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে পৌর সভার লোকজন সিরিয়ালের নামে ট্রাক দিনের পর দিন আটকে রেখে ড্যামারেজ বাবদ হাজার হাজার টাকা চাদাবাজি করছে বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। বেনাপোল চেকপোস্টে নানা ধরনের বাড়তি নিয়মকানুন চালু করায় ভারত থেকে পন্যবোঝাই ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করতে বিলম্ব হচ্ছে। বর্তমানে এলসি ওপেন করার পর ভারত থেকে পন্য আসতে ১৫/২০ দিন সময় লাগছে। বেনাপোল চেকপোস্টে ভারতীয় এক একটি ট্রাক এন্টি করতে ২০ মিনিট সময় লাগায় সারাদিনে ট্রাক আসা কমে গেছে। ইতিপূর্বে প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৫’শ ট্রাক পন্য আমদানি হতো ভারত থেকে।সময় ক্ষেপনের কারনে বর্তমানে ট্রাক’র আমদানি সংখ্যা কমে গিয়ে দাড়িয়েছে ২৫০ ট্রাকে।চেকপোস্টে বিজিবি, কাস্টমস ও বন্দর আলাদাভাবে রেজিস্ট্রাট খাতায় ট্রাক এন্ট্রি করায় এ ধরনের পরিস্থিতি সৃস্টি হযেছে বলে অভিযোগ করা হয়। অন্যদিকে ভারত থেকে আমদানি করা পন্যে চট্রগ্রামে যে মূল্য বেনাপোলে তার চেয়ে বেশী মূল্যে শুল্কায়ন করায় আমদানি কারকরা বেনাপোল বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে চট্রগ্রাম দিয়ে আমদানি করছে। তাছাড়া পন্যের প্যাকিং ম্যাটারিয়াল’স ও পন্যের মূল্য এক সাথে সংযোগ করে শুল্কায়ন করায় পন্য আমদানি কমে গেছে। নানা জটিলতার কারনে অধিকাংশ আমদানিকারকরা বৈধ পথে আমদানি কমিয়ে চোরাই পথে পন্য আমদানি করছেন। ফলে সরকারের রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের ধ্বস নামতে শুরু করেছে।রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পুরনের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভুইয়ার নিদের্শে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসেন আমদানি রফতানি বানিজ্য বাড়াতে দু দেশের ব্যবসায়ী ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করেও আমদানি বানিজ্য বাড়াতে পারছেন না। বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দরে অবিলম্বে যৌথ টাস্ক ফোর্স গঠন করলে আমদানি রফতানি বানিজ্য বৃদ্ধি পাবে। সইে সাথে বাড়বে সরকারের রাজস্ব আয়। বেনাপোল কাস্টমস সিএন্ড এফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, বেনাপোল চেকপোস্টে আমদানিকৃত পন্যবোঝাই ট্রাক এনট্রির নামে অহেতুক সময় নস্ট করায় সারা দিনে ট্রাক ঢোকা কমে গিয়ে রাজস্ব আদায়ে ধ্বস নামতে শুরু করেছে। কাস্টমস চেকপোস্টের একটি পয়েন্টে ট্রাক এনিট্র করলে সময় যেমন বাচবে তেমনি বাড়বে আমদানি- রফতানি বানিজ্য।আমদানিকৃত পন্য’র ওপর মনগড়া মূল্য চাপিয়ে শুল্কায়ন করন ব›ধ সহ বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হলে এই বন্দর থেকে প্রতিবছর সরকারের ১০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় সম্ভব বলে ব্যবসায়ীরা অভিমত দিয়েছেন। বেনাপোল বন্দরে কিভাবে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ও আমদানি রফতানি বানিজ্যে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনা যায় সে নিয়ে কাস্টমস ও বন্দর ব্যবহারকারী বিভিণ সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে মংগলবার কাস্টমস কমিশনারের কার্যালয়ে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরী। রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ও আমদানি রফতানি বানিজ্যে গতিশীলতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বক্তব্য রাখেন, কাস্টমস এর অতিরিক্ত কমিশনার জাকির হোসেন, যুগ্ন কমিশনার আমিনুল এহসান, ডেপুটি কমিশনার মারুফুর রহমান,বেনাপোল সিএন্ডএফ এজন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন, সাবেক সভাপতি আলহাজ¦ শামসুর রহমান, শার্শা উপজেলা এসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ সভাপতি আলহাজ¦ নুরুজ্জামান, আমদানি রফতানিকারক সমিতির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক আলহাজ¦ মহসিন মিলন, কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ¦ নাছির উদ্দিন, কামাল উদ্দিন শিমুল, ও আ: লতিফ। সভায় জরুরী ভিওিতে দু দেশের কাস্টমস ওব্যবসায়ীদের মধ্যে যৌথ সভা করে বিরাজমান সমস্যা নিরসন করার সিদ্ধান্ত হয়।অন্যদিকে ভারতীয় বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী সংগঠন গুলো বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরীর সাথে বৈঠক করেছেন একই দিনে।তারা দু দেশের মধ্যে কিভাবে আমদানি রফতানি বৃদ্ধি করা যায় সে বিষয়ে বিভিমৃন্ময় পয়েন্ট তুলে ধরেন কমিশনারের কাছে। তারাও যৌথ টাস্ক ফোস গঠনেরও জোর দাবি জানান। উল্লেখ্য বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশের সিংহভাগ শিল্প কলকারখানা সহ গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজ এর কাচামালআমদানি হয়ে থাকে। পন্য বন্দরে আসতে দীর্ঘ সময় লাগায় অধিকাংশ শিল্পের কাচামালের অভাবে সময়মত বিদেশী ক্রেতাদের পন্য রফতানি করতে না পরায় অর্ডার বাতিল হয়ে যাচ্ছে।বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরী জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়েআমদানি রফতানি বানিজ্যে স্থবিরতা দুর করা হবেরাজস্বআদায়বৃদ্ধি করতে সারা দেশের কাস্টমসহাউসেআইডেনটিকাল পন্যের একই মুল্যে শুল্শুল্কায়নের বিষয়টি নিশ্চিত করায় বিষয় কাজ করাহচ্ছে।
Check Also
ইসলাম-বৌদ্ধ-হিন্দু-খ্রিষ্টান, সবাই মিলে সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চাই: সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান
সব ধর্ম, ইসলাম-বৌদ্ধ-হিন্দু-খ্রিষ্টান, সবাই মিলে সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চান বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। …