নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হবে। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বের সামনে মাথা নিচু করে বাঁচতে চাই না, আমরা মাথা উঁচু করে বাঁচব ইনশাআল্লাহ।
রবিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসির ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক ২০১৫ ও ২০১৬’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
এ বছর পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজ নিজ অনুষদে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত ২৬৫ শিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদক দেয়া হয়। এর মধ্যে ২০১৫ সালের জন্য ১২৪ ও ২০১৬ সালের জন্য ১৪১ শিক্ষার্থী এ পদকে ভূষিত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুগোপযোগী ও মানসম্মত শিক্ষাই উন্নত জাতি গড়তে পারে। দেশে কোনো ব্যক্তিই নিরক্ষর থাকবে না। সরকার এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য ভোকেশনাল ও টেকনিক্যাল শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, শিক্ষাজীবন শেষ করার পর কোনো শিক্ষার্থীকে যাতে বসে থাকতে না হয়, সে জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে সরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশে ১৯৯৬ সালে একটিমাত্র মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। আমরা এখন প্রতিটি জেলায় ক্রমান্বয়ে একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় করে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা কৃষির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের ঘরের ছেলেরা যাতে ঘরে খেয়ে পড়াশোনা করতে পারে তার ব্যবস্থা করছি।
তিনি বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ছেলেমেয়েদের থেকে মেধাবী। তাদের মেধা বিকাশের চর্চা ও বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। আমরা এর জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম।
এতিমখানার ঠিকানা জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামের এতিমখানার ঠিকানা কোথায় তা জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, এতিমখানার ঠিকানা কোথায়? সেখানে কয়জন এতিম আছে? তার কোনো সংখ্যা নেই? এতিমরা কি একটা টাকাও পেয়েছে? পায়নি। এতিমের টাকা সুদে আসলে খেয়েছে খালেদা জিয়া এবং তার দলের লোকজন।
বৃহস্পতিবার রাজশাহী সরকারি মাদরাসা মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদার ছেলে রোডে রোডে খাম্বা ফেলে রেখেছিল। বিদ্যুৎ না দিয়ে খাম্বা দিয়েছিল আর আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আপনাদের ঘরে ঘরে আলো দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের কল্যাণ নয়, মানুষকে খুন করাই বিএনপি জামায়াতের আন্দোলন, চুরি করা লুট করা তাদের চরিত্র, আ.লীগ উন্নয়ন করে আর বিএনপি ধ্বংশ করে।
এর আগে বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের জন্য উপহার নিয়ে এসেছি। ইতোমধ্যে আমরা কিছু প্রকল্প উদ্বোধন করেছি আর নতুন কিছু প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছি। আমরা উপহার নিয়ে আসি। বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় ছিল। তারা কি দিয়েছিল?
রাজশাহীতে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সংগঠিত বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের উপহার দিয়েছিল শুধু লাশ। শিবির-ক্যাডাররা হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যা করেছিল। বাংলা ভাই আব্দুল কাইয়ুমকে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রেখেছিল। বিএনপির আমলে এ এলাকা ছিল সন্ত্রাসী-জঙ্গিবাদ আর বাংলা ভাইদের অভয়ারণ্য।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি উন্নয়ন করতে পারে না কিন্তু মানুষের সম্পদ লুটপাট করে খেতে পারে। ট্রাস্ট করে এতিমদের নামে টাকা এনেছিল। ২৭ বছর পর বলে, টাকা তো আছে, সুদে-আসলে বেড়েছে। মামলা দিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সেই মামলায় সাজা হয়েছে। লুট করা, চুরি করা এটাই তাদের চরিত্র।
তিনি বলেন, এখন তাদের দলের নেতাকর্মীরা আন্দোলন করছে। টাকা চুরি করে তাদের নেত্রী জেলে গেছে। কিসের আন্দোলন? চোরের জন্য আন্দোলন?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আমরা জাতির পিতার নামে একটা ট্রাস্ট করেছি। ওই কেয়ারটেকার সরকার তন্ন তন্ন করে খুঁজেছে, কোনো কিছু পায় কি-না। আমি বলেছি, ভালোভাবে তদন্ত করে দেখেন। মানুষের জন্য কাজ করতে আসি। আমরা এতিমের টাকা মেরে খাইনি, জনগণকে দিয়েছি।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভা পরিচালনা করেন মহানগর সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার।
জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জেলা আওয়ামী লীগের আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এবং সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মো. আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।