সিরিয়ার পূর্ব ঘৌটায় বিমান হামলায় সৃষ্ট ভয়াবহ পরিস্থিতি সামলাতে হামলা থামানোর আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, জাতিসংঘ প্রস্তাবিত ৩০ দিনের অস্ত্রবিরতি তাৎক্ষণিক কার্যকর হওয়া উচিত। সোমবার জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক সম্মেলনে গুতেরেস বলেন, ‘সিরিয়ায় দুনিয়ার দোজখ নেমে এসেছে। এমন অবস্থা চলতে পারে না।’
এদিকে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ঘৌটার বিমান হামলায় রাসায়নিক গ্যাস ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন হোয়াইট হেলমেটসের স্বাস্থ্যকর্মীরা। দামেস্কের কাছে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ঘৌটায় এক সপ্তাহ ধরেই বিমান হামলা চালাচ্ছে আসাদ বাহিনী। হোয়াইট হেলমেটসের দাবি, সেখানে ক্লোরিন গ্যাস ব্যবহার হয়েছে। হোয়াইট হেলমেটস নামে দেশটির সিভিল ডিফেন্স জানায়, কয়েকটি শিশু ক্লোরিন গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
সিরিয়ার বিরোধী দলের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জানায়, হামলার শিকারদের মধ্যে বিষাক্ত ক্লোরিন গ্যাসে আক্রান্ত হওয়ার আলামত মিলেছে। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, অন্তত ১৮ জনকে অক্সিজেন দিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। কয়েকজন নারী ও শিশুর নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।
২০১৩ সাল থেকে পূর্ব ঘৌটা বিদ্রোহীদের দখলে রয়েছে। রাজধানী দামেস্কের কাছে তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সর্বশেষ এলাকা এটি। এলাকাটির পুনর্দখল নিতে চলতি মাসের শুরুর দিকে অভিযান জোরালো করে সরকারি বাহিনী। এতে পাঁচ শতাধিক মানুষ নিহত হয়।
সম্প্র্রতি ১,২৪৪ সম্প্রদায়ের ৫৬ লাখ মানুষের মানবিক সহায়তার স্বার্থের কথা উল্লেখ করে নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির একটি খসড়া প্রস্তাব আনে কুয়েত ও সুইডেন। যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য পশ্চিমা শক্তির সঙ্গে রাশিয়ার স্বার্থগত বিরোধে সেই প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি পিছিয়ে যায় কয়েকবার। অবশেষে শনিবার নিরাপত্তা পরিষদে ৩০ দিনের অস্ত্রবিরতির ব্যাপারে একমত হয় সংস্থাটির স্থায়ী-অস্থায়ী ১৫ সদস্য রাষ্ট্রই।
বিদ্রোহী ও ত্রাণ সংস্থার সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, অস্ত্রবিরতি প্রস্তাব পাসের পরও সেখানে সরকারি বাহিনীর বিমান হামলা অব্যাহত আছে। গুতেরেস বলেন, ‘আমি সবপক্ষকে তাদের দায়িত্ব ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলে বেসামরিকদের রক্ষার আহ্বান জানাই।’ তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে এই আইন ভঙ্গ করা উচিত নয়।
ত্রাণ সংস্থা দ্য সিরিয়ান আমেরিকান মেডিকেল সোসাইটি জানায়, ওই এলাকার একটি হাসপাতালে আগত রোগীদের কয়েকজনের মধ্যে রাসায়নিক হামলার শিকার হওয়ার আলামত রয়েছে। এক শিশু মারা গেছে বলেও জানিয়েছে তারা। যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাটইটস জানায়, তারাও একই ধরনের তথ্য পেয়েছে, তবে এটি গ্যাস হামলা কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।