বি.এইচ.মাহিনী : বাংলাদেশের জাতীয় বৃক্ষ আমগাছে এখন ফুলের সমারোহ। আমের ফুলকে বলা হয় মুকুল। দিকে দিকে আ¤্র মুকুলে ভরে গেছে প্রকৃতি। বাতাসে টক-টক গন্ধ। শোভিত এ মুকুলভরা আম বাগান প্রকৃতিতে এনেছে নবরূপ। সেই সাথে আম চাষীদের মুখে ফুটেছে হাসি ও ভালো ফলনের আশা। তাইতো এ বছর আমের বছর হবে বলে মনে করছেন যশোরের অভয়নগরের আম চাষীরা। তবে সাম্প্রতিক সূয্যিমামা উদয়োত্তর নাবি কুয়াশায় কিছুটা ভীতও তারা। উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের আম চাষি মোঃ আশিকুর রহমান জানান, এ বছর আমের বছর বলে মনে হয়। আমার বাড়ির আঙিনা ও ক্ষেতের সব গাছ আমের মুকুলে ছেয়ে গেছে। আশা করছি ফলনও ভাল হবে। এ পর্যন্ত দু’বার আম গাছে পোকামুক্তি ও মুকুল ঝরে পড়া রোধে ওষুধ স্প্রে করেছি। তবে চলতি সকালের কুয়াশা নিয়ে কিছুটা ভয়ের মধ্যে আছি। অভয়নগর উপজেলার ভৈরব উত্তর পূর্বাঞ্চলের শ্রীধরপুর, বাঘুটিয়া, শুভরাড়া, সিদ্দিপাশা ইউনিয়নসহ উপজেলার সর্বত্র এবার আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষীরা। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে কিছু কিছু গাছে এত বেশি মুকুল ধরেছে যে, যার ওজনে ডাল ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে। কোনো কোনো গাছে এখনি বাঁশের চটা বা কাঠ দিয়ে ঠেস দেয়া হয়েছে। চাষীরা এখন আগের তুলনায় অনেক সচেতন। তারা আমের মুকুল আসার আগেই ভিটামিন ওষুধ ও হরমোন প্রয়োগ করা হয়। এরপর মুকুল আসলে গুটি ছোট থাকতে একবার এবং গুটি একটু বড় হলে আবার ভিটামিন ঔষধ প্রয়োগ করা হয়। কৃষকদের সচেতনতার ফলেই এবার বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানা গেছে। বাঘুটিয়া ইউনিয়নের সিংগাড়ী গ্রামের আম চাষী আবুল হাসানের বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, আমগাছে ব্যাপক পরিমাণে মুকুল ধরেছে। প্রতিটা আম গাছে এত পরিমানে মুকুল ধরেছে যে, গাছের ডালগুলো নুয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে কথা হলো সিংগাড়ী নিবাসী আরেক আম চাষী আব্দুল মান্নান শেখের সাথে। তিনি জানান, এবার আমের প্রত্যাশিত মুকুলের প্রধান কারণ কৃষকদের সচেতনতা। আমি এবার দুই বার স্প্রে করেছি। আমের মুকুলের ভারে ডাল নিচু হয়ে পড়েছে। অনেকের বাড়ির আঙ্গিনায়ও রয়েছে অসংখ্য আমের গাছ। সেখানেও প্রচুর আ¤্র মুকুল ধরেছে। ঘুরে দেখা গেছে, বাড়ির আঙিনার আম গাছগুলো বেশিরভাগ বিদেশী বা দেশীয় উন্নত জাতের। তাতে যেমন ফলন বেশি হয় তেমনি চাষে জায়গা লাগে কম। এ সকল কলম জাতীয় আম গাছেও মুকুলের সমারোহতে বেজায় খুশি আম চাষীরা।
