শিবির সন্দেহে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯ শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে পুলিশে দিল ছাত্রলীগ

ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:শিবিরে সম্পৃক্ত সন্দেহে স্কুল, কলেজ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষার্থীসহ ৯ জনকে পিটিয়ে পুলিশে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলে আটক রাখার পর প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের উপস্থিতিতে তাদেরকে পুলিশ দেওয়া হয়। এছাড়া সাতজন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া
হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ফোকাস কোচিং সেন্টার চান্সপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনার আয়োজন করে। কয়েক মিনিটের মধ্যে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ১৬ জনকে আটক করে বঙ্গবন্ধু হলের ২৩১ নম্বর কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত আটক রেখে মারধর করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের উপস্থিতিতে রক্তাক্ত অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষার্থীসহ নয়জনকে পুলিশে সোপর্দ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে অধ্যয়নরত প্রথম বর্ষের সাত শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শিবিরের সংশ্লিষ্টতা না থাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাকালীন উপস্থিত সংবাদকর্মীদের সঙ্গে অসদাচারণ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

আটককৃত শিক্ষার্থীরা হলেনÑ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী শামসুজ্জামান, সংস্কৃত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের মিজানুর রহমান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শাহরিয়ার তানজিম, মনিরুল ইসলাম ও একই বিভাগের প্রথম বর্ষের রহমতুল্লাহ ইসলাম, মাসুম, রাজশাহী সিটি কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী তন্ময়, লোকনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী গোলাম রাব্বি। নয় জনই বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন
রয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া সাংবাদিকদের বলেন, আমরা জানতে পারি শহীদ মিনারে কোচিং সেন্টারের নামে শিবিরের মিটিং হচ্ছে। পরে তাদেরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকায় ৯ জনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এছাড়া প্রথম বর্ষের সাতজন শিক্ষার্থীর শিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থাকায় প্রক্টরের উপস্থিতিতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘নয়জনকে পুলিশে দিয়েছে ছাত্রলীগের ছেলেরা। বাকি সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে প্রাধ্যক্ষ, আবাসিক শিক্ষক ও আমাদের সামনে ছেড়ে দিয়েছে।’

এ বিষয়ে নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন জানান, ছাত্রলীগ ৯ জন শিক্ষার্থীকে পুলিশে দিয়েছে। তাদেরকে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) ভর্তি করা হয়েছে।

Check Also

যশোরে মধুমেলার জায়গা বরাদ্দ নিয়ে বিএনপির দুগ্রুপের হাতাহাতি

যশোরে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত’র ২০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী ‘মধুমেলা’র জায়গা ও ইভেন্ট বরাদ্দের উন্মুক্ত …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।