ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, বর্তমান সরকার তো আজীবন ক্ষমতায় থাকবে না। একদিন তাদের বিদায় নিতেই হবে। আমরা তখন তাদের গত ১০ বছরের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করব।
শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের শরিক দল এনপিপি এ সভার আয়োজন করে।
মওদুদ বলেন, বর্তমান সরকার শেষ সরকার নয়। এ সরকারের আমলে কোন মন্ত্রী, কোন এমপি, কোন ব্যবসায়ী তাদের মদদপুষ্ট- এমনকি জেলা পর্যায়ের নেতারা কত টাকা দুর্নীতি করেছেন তার হিসাব হবে। সবার দুর্নীতির শ্বেতপত্রও প্রকাশ করে তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে। সবকিছুর জবাব দিতে হবে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে এত বড় চুরি হয়ে গেল কিন্তু কখনও কাউকে গ্রেফতার বা বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি। কারো ঘরে চুরি হলেও তো বাড়ির দারোয়ানকে পুলিশ আটক করে। আর বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করে কারাগারে ভরে রাখেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি গেল অথচ কারা জড়িত সেটি কেউ জানল না।
তিনি বলেন, এ সরকারের আমলে গত ১০ বছরে যে দুর্নীতি হয়েছে তার কোনো হিসাব নেই। বিশ্বব্যাংক এখন আর কোনো অর্থায়ন করে না। কারণ তারা অর্থায়ন করলে সবকিছু মনিটরিং করে। আর সে জন্য সরকার বলে নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়ন করার কথা। আপনারা নিজস্ব অর্থায়নের কথা বলছেন? এর মানে বুঝেন? নিজস্ব অর্থায়ন মানে এর কোনো মনিটরিং বা জবাবদিহিতা নেই। তার মানে যত বড় বড় প্রকল্প, তত বড় বড় দুর্নীতি, ঘুষ আর কমিশন।
ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, সরকার আজ উন্নয়নের কৃতিত্ব দাবি করেন। কিন্তু দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে তার কৃতিত্ব সরকারের নয় দেশের মানুষের। দেশের অর্থনীতি মূলত যে তিনটি সেক্টরের ওপর বেশি নির্ভর করে সেগুলো হল কৃষি, বিদেশি রেমিট্যান্স ও পোশাকশিল্প। এ তিনটি খাত প্রতিষ্ঠা ও সম্প্রসারণ করেছে বিএনপি। এগুলোতে সরকারের কোনো অবদান নেই।
খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে মওদুদ আরও বলেন, যত ষড়যন্ত্র করেন না কেন খালেদা জিয়া মুক্তি পাবে। তাকে আটকে রাখা যাবে না। আর যেদিন তিনি মুক্তি পাবেন সেদিন দেখবেন তার জনপ্রিয়তা জেলে যাওয়ার আগের চেয়ে তিন গুণ বেশি বেড়ে গেছে। দেশের মানুষ তার সঙ্গে রাস্তায় নেমে আসবে।
তিনি বলেন, আপনারা দেশের মানুষকে বোকা মনে করেন। কিন্তু তারা বোকা না, সব জানে ও বুঝে। যেদিন তারা ভোট দেয়ার সুযোগ পাবে, সেদিন আপনাদের কঠিন জবাব দেবে ব্যালটের মাধ্যমে।
নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে বিএনপির এ শীর্ষ নেতা বলেন, আমরা সরকারি দলের প্রচারের বিষয়ে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু পত্রিকায় দেখলাম তারা জবাব দিয়েছে, তফসিল ঘোষণার পর তারা দায়িত্ব গ্রহণ করে। কিন্তু আমাদের দেশে তফসিল ঘোষণা হয় দেড় মাসে আগে। কিন্তু এ অল্প সময়ে কি প্রশাসনকে ঢেলে সাজানো যায়?
এনপিপি সভাপতি ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা জামাল হায়দার, জাগপা সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, ন্যাপ ভাসানীর গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ প্রমুখ।