ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:শ্রীলঙ্কায় মসজিদ ও মুসলমানদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উপর একের পর এক হামলার পর দেশটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। খবর বিবিসির।
কেন্ডি শহরের কিছু কিছু এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে যেখানে সংখ্যাগুরু বৌদ্ধ সিনহালারা মুসলিমদের মালিকানাধীন দোকানপাটে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করছিলো।
আগুনে পুড়ে যাওয়া একটি বাড়ির পাশে মুসলিম এক তরুণের লাশহ উদ্ধারের পর সেখানে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। মুসলিমরাও প্রতিশোধ নিতে পাল্টা হামলা চালাতে পারে এই আশঙ্কায় কর্তৃপক্ষ জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেছে।
সপ্তাহ খানেক আগে গাড়ি সংক্রান্ত এক বিরোধের জেরে মুসলিমরা বৌদ্ধ এক তরুণকে পিটিয়ে হত্যা করেছে- এরকম একটি অভিযোগের পর সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
গত সপ্তাহে আমপারে শহরেও মুসলিম মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদে হামলা চালানো হয়।
২০১২ সালের পর থেকে শ্রীলঙ্কায় উত্তেজনা বাড়তে থাকে। কট্টরপন্থী একটি বৌদ্ধ গ্রুপ বিবিএসের বিরুদ্ধে উত্তেজনায় উস্কানি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে, সরকারি মুখপাত্র দয়াসিরি জয়াসেকারা রয়টার্সকে বলেন, ‘দেশের অন্যান্য অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিস্তার ঠেকানোর লক্ষ্যে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে ১০ দিনের জরুরি অবস্থা জারির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উস্কানিমূলক পোস্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘ফেসবুক ব্যবহার করে যারা সহিংসতায় উস্কানি দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গত বছর থেকে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু সংখ্যক উগ্রপন্থী বৌদ্ধ শ্রীলঙ্কায় মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম আশ্রয় প্রার্থীর উপস্থিতির প্রতিবাদ করছে। শ্রীলঙ্কায় কট্টরপন্থী বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত মাসে দেশটির পূর্বাঞ্চলে মুসলিমদের একটি মসজিদ ও বেশ কিছু দোকানে হামলা চালায় উগ্রপন্থী বৌদ্ধরা। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হয়। ২০১৪ সালের জুনে মুসলিমবিরোধী প্রচারণার জেরে দেশটিতে প্রাণঘাতী আলুথগামা দাঙ্গার ঘটনা ঘটে।
গত বছর দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিরুদ্ধে অন্তত ২০টি হামলার ঘটনা ঘটে। ওই সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা সংখ্যালঘু মুসলিমদের অধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে শ্রীলঙ্কার সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথিরিপালা সিরিসেনা ও প্রধানমন্ত্রী রনিল বীক্রমাসিংহ সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেন। তবে সরকারি ওই প্রতিশ্রুতির পরও দেশটির সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা বন্ধ হয়নি।
২ কোটি ১০ লাখ মানুষের দেশ শ্রীলঙ্কায় মুসলিম রয়েছে প্রায় ৯ শতাংশ। এছাড়া বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ৭০ ও হিন্দু ধর্মের অনুসারী আছে ১৩ শতাংশ।সূত্র: নয়াদিগন্ত