ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:সরাসরি নিয়োগে কোটায় যোগ্যপ্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধা তালিকা থেকে সেসব পদ পূরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ সিদ্ধান্ত সরকারি সব চাকরির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। এর আগে জারি করা সরকারি কোটা সংরক্ষণ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা শিথিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বুধবার ২০১০ সালের একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মুক্তিযোদ্ধা কোটার শর্ত শিথিল করে অন্যসব নিয়োগেও সব কোটার ক্ষেত্রে শূন্যপদে মেধাবীদের নিয়োগের নির্দেশনা দিয়ে এ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
এদিকে জারি করা এই আদেশের অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব, সিনিয়র সচিব, সরকারি কর্ম কমিশনের সচিব, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে (এপিডি) দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও গবেষণা সেলের ২০১৬ সালের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সরকারি চাকরিতে শূন্য পদের সংখ্যা তিন লাখ ৫৯ হাজার ২৬১টি।
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোজাম্মেল হক খান স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সকল সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটার কোনো পদ যোগ্যপ্রার্থীর অভাবে পূরণ করা সম্ভব না হলে সেসব পদ মেধা তালিকার শীর্ষে অবস্থানকারী প্রার্থীদের মধ্য থেকে পূরণ করতে হবে। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশব্যাপী শিক্ষার্থী এবং চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে সরকারের এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।
বর্তমানে দেশে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য (নাতি-নাতনিসহ) কোটা রাখা হয়েছে ৩০ শতাংশ, নারী ও জেলা কোটা রয়েছে ১০ শতাংশ, পাঁচ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য এবং প্রতিবন্ধী এক শতাংশ। সব মিলিয়ে কোটার জন্য বরাদ্দ ৫৬ শতাংশ পদ।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সিনিয়র স্টাফ নার্সের চার হাজার এবং মিডওয়াইফের ৬০০টি পদ পূরণের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০১০ সালেল ১৬ ফেব্রুয়ারি সার্কুলারে উল্লিখিত মুক্তিযোদ্ধা কোটা অনুসরণ সংক্রান্ত নির্দেশনা শিথিল করে এই পদগুলো জাতীয় মেধা তালিকার শীর্ষে অবস্থানকারী প্রার্থীদের দিয়ে পূরণ করা হবে, যা এককালীন না হয়ে সব সময়ে প্রযোজ্য হবে। তবে একই আদেশে এই কোটার শূন্যপদ পূরণে মেধাবীদের নিয়োগ দেয়ার নির্দেশনা নিয়ে বিভ্রান্তি ও অস্পষ্টতা চলছিল। বিষয়টি স্পষ্ট করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোজাম্মেল হক খান বলেন, এই নির্দেশনা বিসিএস ও অন্য সব সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। এখন থেকে কোটার পদ শূন্য থাকলে মেধা থেকে পূরণ করা হবে। কোটায় যখন শূন্য থাকবে না তখন নেব না।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, পদ শূন্য থাকলে বারবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে বেগ পেতে হয়। এছাড়া সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সচিবসভায় শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগের নির্দেশনা এসেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এই উদ্যোগ নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এই মন্ত্রণালয়ই নিয়োগ সংক্রান্ত জনবল দেখভাল করে থাকে।