ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:কুমিল্লা : নাশকতার মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।সোমবার কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মোস্তাইন বিল্লাহ এ আদেশ দেন।
কুমিল্লার আদালত পরিদর্শক সুব্রত ব্যানার্জি জানান, কুমিল্লার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে গুলশান থানার পুলিশ এসে খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে। সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তা মঞ্জুর করে খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
আদালত পরিদর্শক বলেন, সে আদেশ এরই মধ্যে কুমিল্লার কেন্দ্রীয় কারাগারে দেওয়া হয়েছে। কুমিল্লার কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তা ঢাকার কারাগারে পাঠানো হবে। সেখানে কারাকর্তৃপক্ষ আদালতের আদেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়ইুম হক রিংকু একই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি বিএনপির ডাকা অবরোধ চলাকালে ওই দিন দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহনপুরে কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী একটি বাসে দুর্বৃত্তরা পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে। মুহূর্তের মধ্যে বাসটিতে আগুন ধরে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। সে সময় বাসের কয়েক যাত্রী জানালা দিয়ে লাফিয়ে প্রাণে বাঁচতে পারলেও দগ্ধ হন অন্তত ২০ যাত্রী। তাঁদের মধ্যে আটজন নিহত হন।
এ ঘটনায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, প্রয়াত এম কে আনোয়ার, ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সালাউদ্দিন আহমেদ এবং মামলার প্রধান আসামি জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহেরসহ ৭৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। পরবর্তী সময়ে সে মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেন আদালত।
ঢাকা: রাজনৈতিকভাবে অন্য কোনো মামলায় গ্রেফতার না দেখানো হলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন।
সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে খালেদা জিয়ার জামিন মঞ্জুরের পর এজলাস থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ খালেদা জিয়ার চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন।
জয়নুল আবেদীন বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চার মাসের জামিন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট। তবে অন্য কোনো মামলায় তাকে গ্রেফতার না দেখানো হলে শিগগিরই তিনি মুক্তি পাবেন।
তিনি বলেন, মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের পাঁচ বছরের সাজা হয়েছিল। এর বিরুদ্ধে আমরা আপিল ও জামিন আবেদন করেছিলাম। গতকাল এ বিষয়ে আদেশ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু রেকর্ড না আসায় আজ জামিন দেয়া হয়েছে।
জয়নুল আবেদীন আরো বলেন, খালেদা জিয়ার জামিন আদেশের ওপর আরও দুই মাস স্থগিতাদেশ চেয়েছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল। কিন্তু আদালত তা মঞ্জুর না করে খালেদা জিয়াকে জামিন দেন।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ড. আক্তারুজ্জামান খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
রায়ের দিন থেকে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।