মালদ্বীপে গণগ্রেফতার শুরু

ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:  মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনের বিরুদ্ধে দেশটিতে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার নাগরিক। শুক্রবার রাতে দেশটির রাজধানী মালে ও অন্য প্রধান শহরগুলোতে তারা বিক্ষোভ করেন।

বিরোধী দলের ৯ নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ থাকলে গত ১ ফেব্র“য়ারি সুপ্রিমকোর্ট তা প্রত্যাখ্যান করে তাদের মুক্তি দেয়। কিন্তু সুপ্রিমকোর্টের রায়ের ব্যাপারে কর্ণপাত করেনি সরকার। সুপ্রিমকোর্ট ও সরকারের মধ্যে কয়েকদিনের উত্তেজনার পর ৫ ফেব্র“য়ারি ১৫ দিনের জন্য জরুরি অবস্থার ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন। জরুরি অবস্থার এ সময়সীমা শেষ হলে আরও এক মাসের জন্য জরুরি অবস্থা বাড়িয়ে দেন তিনি। জরুরি অবস্থার মধ্যে সভা, মিছিল, মিটিং অবৈধ ঘোষণা করেন ইয়ামিন। বিরোধীদলীয় এমপিরা এ ভোটকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে ভোট বয়কট করেছে। জরুরি অবস্থার নতুন মেয়াদ শেষ হবে ২২ মার্চে।

শনিবার রাজধানী কলম্বো থেকে গণতন্ত্রপন্থীরা এক বিবৃতিতে জানায়, প্রেসিডেন্টের নির্দেশ, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টিয়ারগ্যাসকে উপেক্ষা করে শুক্রবার রাতে মালের রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু করেন নাগরিকরা। শনিবার সকাল পর্যন্ত এ বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিক্ষোভস্থল থেকে অন্তত ১৪১ জন গণতন্ত্রকামী নাগরিক গ্রেফতার হয়েছেন। এদের মধ্যে ২৬ জন নারী ও ৩ জন সাংবাদিক রয়েছেন। তাদের শনিবার কারাগারে নেয়া হয়েছে। দু’জনকে ছেড়ে দেয়া হয় বলেও বিবৃতিতে বলা হয়েছে। পুলিশ বলেছে, বিক্ষোভ দমনে তারা কাঁদানে গ্যাস ও টিয়ারগ্যাস ছুড়েছে।

গত দুই সপ্তাহ আগেও এ ধরনের বিক্ষোভে ৩ বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা হলেন- আবদুল্লাহ শহীদ, আবদুল্লাহ রিয়াজ ও আবদুল্লাহ লাথিফ। বিক্ষোভের জেরে এখন পর্যন্ত মোট ৬ জন বিরোধী দলের সংসদ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এএনআই সংবাদ সংস্থাকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে দেশটির আদালত পার্টির নেতা আলি জহির বলেন, ‘দেশটিতে বিশৃঙ্খলার জন্য প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনই দায়ী।

এটি নিশ্চিত, তার নির্দেশনাতেই এসব সংসদ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্বারা প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন এবং তার সরকার অবশ্যই স্বৈরশাসক হিসেবে গণ্য করা হবে।’ তাছাড়া পুলিশ গ্রেফতারকৃত সংসদ সদস্যদের পরিবারের সদস্যদের বিভিন্নভাবে হেনস্থা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর আগে মালদ্বীপে ব্যাপক ধরপাকড়ের মুখে দেশটিকে জরুরি অবস্থা তুলে নেয়ার আহ্বান জানায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

এক বিবৃতিতে ইইউ মুখপাত্র বলেন, ‘জরুরি অবস্থা ঘোষণার কারণে মালদ্বীপের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ক্ষুন্ন হচ্ছে এবং দেশটিতে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে।’

Check Also

স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় রিকশা চালালেন পাকিস্তানের হাইকমিশনার

ঢাকায় রিকশা চালাচ্ছেন পাকিস্তানি হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ! ভাবতে অবাক লাগলেও সম্প্রতি তেমনি এক ঘটনা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।