ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্ত করতে সরকার বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আপিল বিভাগ স্থগিত রাখার পেছনে সরকারের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
এর আগে সকালে খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আগামী ৮ মে পর্যন্ত স্থগিত করেন আপিল বিভাগ।
এর পর বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ফখরুল বলেন, অত্যন্ত কৌশলে খালেদা জিয়ার জামিন আটকে দিয়েছে। তাকে কোনো আইনি সুবিধা দেয়া হচ্ছে না। বিচার বিভাগকে সুকৌশলে ব্যবহার করে খালেদা জিয়ার জামিন আটকে দিয়েছে। আদালত কিন্তু খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল করেননি।
তিনি আরও বলেন, ন্যায়বিচার থেকে খালেদা জিয়া বঞ্চিত হয়েছেন। দেশের মানুষের বিশ্বাস ছিল, খালেদা জিয়া জামিন পাবেন। কিন্তু তাকে সেটি দেয়া হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়াকে দীর্ঘদিন কারাগারে রাখা মানে সরকারের নীলনকশা অনুযায়ী একতরফা নির্বাচন করে আবারও ক্ষমতায় যাওয়া। কারণ এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেই দিয়েছেন- নির্বাচনে বিজয় এখন আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া যে মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, তাকে সেই মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে। গতকাল খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তাকে সাজা দেয়া হয়েছে বিশ্বাস ভঙ্গের কারণে, দুর্নীতির অভিযোগে নয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। এর পর থেকে তিনি নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।
———-0————-
মঙ্গলবার সারা দেশে বিক্ষোভ
২৯ মার্চ সোহরাওয়ার্দীতে জনসভার ঘোষণা বিএনপির
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আগামী ২৯ মার্চ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করার ঘোষণা দিয়েছে দলটি। এ ছাড়া ৩১ মার্চ রাজশাহী ও ৭ এপ্রিল বরিশালে জনসভা করা হবে।
এদিকে আগামীকাল মঙ্গলবার সারা দেশের জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া ঢাকা মহানগরের প্রতিটি থানায় এ কর্মসূচি পালন করা হবে।
সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী, সরকার আমাদের অনুমতি দেবে। সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার কর্মসূচি পালনে সহায়তা করবে।
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, ওয়ার্কার্স পার্টি, চরমোনাইর পীর, জাতীয় পার্টি সমাবেশের অনুমতি পায়। কিন্তু বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো জনসভা করতে চাইলে নিরাপত্তার অজুহাতে অনুমতি দেয়া হয় না। আগে পুলিশের অনুমতির দরকার পড়ত না। আবেদন করলেই চলত। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে এটি নিয়ম করে তুলেছে।
‘আমরা সমাবেশের অনুমতির জন্য দরকারি কাগজপত্র পাঠিয়েছি। আশা করছি, সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং তারা আমাদের অনুমতি দেবে,’ বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, আজ আমরা জনসভা করার অনুমতি চেয়েছিলাম। এর আগেও আমাদের জনসভা করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। শেষমুহূর্তে এবারও অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু এবার দুদফা অনুমতি চাওয়ার পরও আমাদের জনসভা করতে দিচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।