রমজাননগর (শ্যামনগর) প্রতিনিধি: জেলার শ্যামনগর উপজেলার পশ্চিম সুন্দরবনের বর্তমান সময়ে জেলেদের ত্রাস জাকিরের রহস্য ফাঁস করলেন মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসা বনজীবিরা। ঘটনার বিবরণ ও জেলে সূত্রে জানা যায়, সরকার পশ্চিম সুন্দরবন থেকে বনদস্যু নির্মূল করার জন্য দৃঢ় প্রত্যয় জ্ঞাপন করেছেন। তারি ধারাবাহিকতায় র্যাব ৮ এর উদ্যোগে আত্মসমার্পনের মাধ্যমে বনদস্যুদের বিকল্প পদ হিসেবে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিচ্ছেন বাংলাদেশ সরকার। ইতোপূর্বে পশ্চিম সুন্দরবন থেকে বহু বনদস্যু বাহিনী আত্মসমর্পন করেছে। বহু দিন যাবৎ পশ্চিম সুন্দরবনের বনদস্যুদের তৎপরতা বন্ধ থাকলেও বর্তমানে আবারও নতুন নতুন নামীয় বনদস্যুর আর্বিভাব হয়েছে। সূত্রে জানা যায়, সরকার বনদস্যুদের সাজা মৌকুফের মাধ্যমে অর্থ প্রদান করছে আত্মসমার্পনকারী বনদস্যুদের। আর এই সুযোগে মাষ্টার বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড রতুনপুর ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের বনদস্যু মজিদ ভাঙ্গী ও তার বড় পুত্র ইউনুস ভাঙ্গী আত্মসমর্পন করে। আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বর্তমানে তারা বাড়িতে বসবাস করছেন। আত্মসমপর্ণের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার লালসায় মজিদ ভাঙ্গীর ছোট পুত্র মো. জাকির ভাঙ্গীকেও বনদস্যুর খাতায় নাম লিখেয়ে ছোট ভাই বাহিনী নামক বনদস্যু বাহিনীর সৃষ্টি করে। মঙ্গলবার রাতে বনদস্যু ছোট ভাই বাহিনীর নিকট থেকে মুক্তিপণ দিয়ে ফেরত এসে জাকিরের অনেক রহস্য ও তথ্য ফাঁস করেছেন মীরগাং গ্রামের মৃত আলহাজ্ব জুম্মান গাজীর পুত্র তাজউদ্দীন, ছোট ভেটখালী গ্রামের মৃত ছমির গাজীর পুত্র রেজাউল গাজী, দাতিনাখালী গ্রামের শাহ আলমসহ রামপালের নাম না জানা দুই জন জেলে। তাদের তথ্য মতে, গত ০৬-০৩-১৮ তারিখে মালঞ্চ নদীর ছোট লক্ষীখালী খালের ভিতরে রাত্র ১০টায় জাকির ছোট ভাই বাহিনীর প্রধান হওয়ার লালসায় ও এক কোটি সাত লক্ষ টাকার ভাগাভাগি নিয়ে ছোট ভাই বাহিনীর প্রধান মান্নান ও তার ভাই জাকারিয়াকে গুলি করে হত্যা করে। জেলেরা প্রবিদেককে আরও জানান, এ বাহিনীতে ১৪ জন সদস্যের ২ নলা বন্দুক ৬টি, ১ নলা ৫টি, টুটুবার ১টি, ফায়ার শ্যুটার ১টি ও পাইপ গান ৪টিসহ মোট ১৬টি হাতিয়ার রয়েছে। এ ছাড়া আরও ১ বস্তা বাঁধা আছে। তাছাড়া গাছে উঠে লোকালয়ে তাদের সোর্সদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে জেনে নিচ্ছে প্রশাসন ও জেলেরা কখন কিভাবে সুন্দরবনে অবস্থান করছে। আরও জানা যায়, বনদস্যু মজিদ ভাঙ্গীর কন্যা ও বনসদ্যু ইউনুচ ভাঙ্গী বিকাশের মাধ্যমে এ বাহিনীর টাকা লেনদেন করে। গত ১৪-০৩-২০১৮ তারিখে বনদস্য জাকির একটি নৌকাযোগে কৈখালী ফরেস্ট অফিস সংলগ্ন কালিঞ্চী মাটির কেল্লায় এসে নৌকাটি রেখে লোকালয়ে যায়। যা এখনও ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ লাল্টুর জিম্মায়। এ বিষয়ে বুড়িগোয়ালীনি নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ অনিমেষ বলেন, আমরা এ বনদস্যুকে পশ্চিম সুন্দরবন হতে নিমূর্ল করার জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছি এবং রাখব। বনদস্যু যেই হোক তাকে আমরা আইনের আওতায় আনার সর্বদা চেষ্টা করছি।