সাখাওয়াত উল্যাহ: জটিল ও বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামনি বিছানায় শুয়ে চরম অনিশ্চয়তায় সময় কাটছে তার। যার কথা স্যোসাল মিডিয়ার মাধ্যমে জেনেছিল গোটা দেশ। এমন কি যার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নিজে। সেই মুক্তামনির খবর তেমন কেউ নেন না এখন। গত বছরের ১২ আগস্ট দীর্ঘ ৩ ঘন্টা ধরে ২২ জন অভিজ্ঞ ডাক্তার সার্জারীর মাধ্যমে প্রাথমিক সফলতা পান। সেই পথে তার পরিবার এবং সারা দেশের মানুষ যেন মুক্তামনির নতুন করে সুস্থ্য ভাবে বেচে থাকার স্বপ্ন দেখেছিল। নিবিড় পরিচর্চা ও শারীরিক অবস্থা দেখে পরবর্তী আরও কিছু অপারেশনের পর তাকে তিন মাস আগে তার নিজ গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়। কিন্তু বাড়িতে থাকার প্রথম কিছুদিন সে আগের থেকে সুস্থ থাকলেও ধীরে ধীরে তার শরীরের অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। সম্প্রতি আক্তান্ত হাতসহ তার শরীরের অন্যান্য অনেক জটিলতা দেখা দিয়েছে বলে জানান মুক্তার পিতা ইব্রাহিম হোসেন।
গত বৃহস্পতিবার মুক্তার বাড়িতে যেয়ে দেখা যায়, মুক্তার জমজ বোন হেরামনি বাড়ির উঠানে মিছে-মিছে রান্নার খেলা করছিল। সাথে ছিল একমাত্র ভাই আল-আমিন ও চাচাতো বোন মুন্নি। অন সংগীত শুনছে।
মুক্তা জানায়, আমার পিতা এবং দেশের প্রধানমন্ত্রী আমার জন্য যা করেছে তা ভুলবোনা। অনেক ভরসা নিয়ে ঢাকায় গিয়েছিলাম। দেশের সব চেয়ে বড় বড় ডাক্তাররা আমার চিকিৎসা করেছে। কিন্তু লাভ হল কই? মুক্তার ব্যান্ডেজ খুলে রাখলে ১২ ঘন্টার মধ্যে হাত ফুলে ডাবল হয়ে যাচ্ছে। তখন আরো ভয় লাগে। সে জানায় আগে নিজে উঠতে ও বসতে পারতাম। বাইরে যেয়ে টয়লেটে যেতে পারতাম। কিন্তু এখন তা আর পারি না। সপ্তায় দু-এক বার ৩/৪জন ধরে বাইরে উঠানে খাটের উপর নিয়ে যায়। তখন খুব ভাল লাগে। প্রকৃতি, আলো-বাতাস খুব ভাল লাগে।
মুক্তামনির শরীর কেমন মনে হচ্ছে? এমন এক প্রশ্নের জবাবে মুক্তার মা জানায়, এ রকম একটা ছোট মানুষের প্রায় ৩০ বার অজ্ঞান করলে আর কত ভাল থাকে। এখন আল্লাই ভরসা। শারীরিকভাবে ক্রমেই দূর্বল হয়ে পড়ছে সে। ঢাকার বার্ন ইউনিটের বড় ডাক্তার সামন্ত লাল, ডা. সুমি ম্যাডাম, ডাক্তার রুমানা ম্যাডাম মাঝে মাঝে মোবাইলে খোজ খবর নেন। তারা বলছেন শারীরিক অবস্থা বুঝে মুক্তা মনিকে আর একবার ঢাকায় নিতে চান তারা। ঢাকায় যাবে কি-না? প্রশ্ন করলে মুক্তা নিশ্চপ থেকে ফ্যাল ফ্যাল করে মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।