জেলা যুবলীগ সভাপতি মান্নানসহ গ্রেপ্তার দুই, রিমান্ডের আবেদন

নিজস্ব প্রতিনিধি: স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় সংঘর্ষের ঘটনায় জেলা যুবলীগের আহবায়ক আব্দুল মান্নানসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার বিকালে সাতক্ষীরা নিউমার্কেটস্থ শহীদ আলাউদ্দিন চত্তরে পৌর আওয়ামী লীগের স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভা পন্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় খুলনা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরআগে সোমবার রাতে শহরের মুনজিতপুর এলাকার জয়নুল আবেদীন জোসি বাদি হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আব্দুল মান্নানকে ১নং আসামী করে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। মামলা নং ৭৯ (তাং- ২৬-৩-২০১৮)। ধারা: ১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/১৪৯/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩৭৯/৩০৭/৪২৭ ও ১১৪ দ: বি: তৎসহ ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৩/৪/৬ ধারা। এদিকে মঙ্গলবার বিকালে মান্নানকে সাতক্ষীরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ৭দিনের রিমান্ডের আবেদন জানায় পুলিশ। আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। এদিকে পুলিশ এ মামলায় শহরতলীর চালতেতলা এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে তুষারকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এদিকে সোমবারের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সাতক্ষীরা শহর, তালা ও আশাশুনিতে মিছিল সমাবেশ করেছে ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন।
গত সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে সাতক্ষীরা শহরের নিউমার্কেটস্থ শহীদ আলাউদ্দিন চত্তরে পৌর আ.লীগের আয়োজনে স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় যুবলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমানসহ কমপক্ষে ১৮জন আহত হয়। আহতরা হলেন, জেলা যুবলীগের সদস্য মীর মহিতুল আলম, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিকুর রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কাজী আক্তার হোসেন, জেলা তাঁতী লীগের সভাপতি মীর শাহিন, যুবলীগ নেতা বাবু ও ছাত্রলীগ নেতা তৌকিরসহ আরও কয়েকজন।
পৌর যুবলীগের আহবায়ক এমএ কাদির বলেন, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিকালে সাতক্ষীরা নিউ মার্কেট সংলগ্ন আলাউদ্দিন চত্বরে পৌর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা চলছিল। এ সময় জেলা যুবলীগের আহবায়ক আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে একটি মিছিল সেখানে উপস্থিত হয়। এর কিছুপর আব্দুল মান্নান বক্তব্য দিতে শুরু করেন এবং বলেন আজ থেকে খেলা শুরু। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও তাঁতী লীগের সভাপতি মান্নানের এ কথার প্রতিবাদ করলে মঞ্চে থাকা অতিথিদের উপর নিচ থেকে চেয়ার ছুড়ে হামলা চালানো হয়।
এদিকে গ্রেপ্তারের আগে জেলা যুবলীগের আহবায়ক আব্দুল মান্নান পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, আলোচনা সভায় আমি বক্তব্য রাখছিলাম। তখন সদর এমপি সাহেবের ভাই যুবলীগের সদস্য মীর মহিতুল আলম মঞ্চের নিচে হট্টগোল করতে থাকে। তখন আমার নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ করলে মহিতুল আলম আমাকে চেয়ার ছুটে মারে। পরে তারা লোহার রড, হকিস্টিক, রামসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আমার নেতাকর্মীর উপর হামলা করে। এঘটনায় পৌর যুবলীগের সভাপতি মনোয়ার হোসেন অনু, সাধারণ সম্পাদক তুহিনুর রহমান তুহিন, ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মিলন হোসেন, লাবসা যুবলীগের সভাপতি আফতাবুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ইয়ারুল ইসলাম, সহ-সভাপতি ইয়াসিনসহ ৮জন আহত হয়। আহতদের খুলনায় ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এর মধ্যে ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মিলন হোসেনের অবস্থা আশংকাজনক।
সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল ইসলাম রেজা জানান, ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ মিছিল নিয়ে নিউ মার্কেট এলাকার কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার প্রাক্কালে বসুন্ধরা মার্কেটের সামনে মান্নান, তুহিন ও মনোয়ার হোসেন অনুর নেতৃত্বে লোহার রড, হকিস্টিক, রাম নিয়ে তাদের উপর হামলা চালানো হয়। এতে তাদের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিকুর রহমান ও তৌকিরের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এদিকে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক জানান, মোবাইল ট্রাকিং করে জেলা যুবলীগের আহবায়ক আব্দুল মান্নানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। খুলনার একটি বাসা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান। অপরদিকে সদর থানার পুলিশ যুবলীগ কর্মী শহরের চালতেতলা এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে তুষারকে গ্রেপ্তার করেছে।

 

Check Also

ভারতীয় গণমাধ্যম প্রতিদিন আমাদের সম্পর্কে অপপ্রচার চালাচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ভারতীয় গণমাধ্যম প্রতিদিন আমাদের সম্পর্কে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।