ভাইয়ের হাত থেকে ভাইকে বাঁচতে’ নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি করেন কাঞ্চন মিয়া। এ জিডির তদন্ত করতে গিয়ে ময়মনসিংহের গৌরীপুর থানার এসআই আসাদুজ্জামান আসাদ (বিপি নং ৮২০২০৩৮৩৭৮) মঙ্গলবার রাতে পৌর শহরের জেলখানা মোড়ে কাঞ্চনের ভাই উজ্জ্বল মিয়ার ছুরিকাঘাতের শিকার হন।
এদিকে ছেলে উজ্জলের অত্যাচার-নির্যাতনের অতিষ্ঠ মা জোছনা আক্তার। যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে ছেলেকে মেরে ফেলার আকুতি জানান তিনি।
ভাইকে হত্যার জন্য পাঁচ দিন ধরে শান দেয়া ধারালো সেই ছুরিটাই প্রকাশ্যে এসআইয়ের পেছন দিক থেকে শরীরে ঢুকিয়ে দেয় উজ্জল। মুমূর্ষু অবস্থায় এসআইকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।
বুধবার আইসিইউর ইনচার্জ ডা. রকিবুল ইসলাম জানান, আহত এসআই আসাদ আশঙ্কামুক্ত নয়। পাকস্থলী ও কিডনি মারাত্মকভাবে জখম হয়েছে। ৭২ ঘণ্টা নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হবে। তারপর বলা যাবে।
আসাদুজ্জামান আসাদকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে গৌরীপুর থানায় মামলা দায়ের করেছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি রামদা উদ্ধার করেছে। এসআই আসাদের শরীরে অস্ত্রোপচার করে ছুরিটাও বের করা হয়েছে।
কাঞ্চন মিয়ার স্ত্রী সোমা আক্তার জানায়, উজ্জ্বল মিয়া বড়ি (ইয়াবা) খায়, বাড়ির গৃহবধূদের সঙ্গে খারাপ আচারণ করেছিল। তার ভাশুর উজ্জল মিয়া ৪-৫ দিন ধরেই ছুরি নিয়ে তার স্বামী কাঞ্চন মিয়াকে মেরে ফেলবে বলে ঘুরাঘুরি করছিল। গত সোমবার হামলাও চালিয়ে ছিল। এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে কাঞ্চন মঙ্গলবার গৌরীপুর থানায় একটি জিডি করে।
ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে এসে এসআই আসাদুজ্জামান আসাদ তার ভাশুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে তার ঘরের মাটি খুঁড়ে একটি রামদা উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় তাকে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে রাস্তায় নিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন মাথা খারাপ বলে ছাড়িয়ে নেয়। এসআই গাড়িতে ওঠার সময় ঘর থেকে সেই ধারালো ছুরি নিয়ে পেছন দিক থেকে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত করে মুহূর্তেই পালিয়ে যায়।
গৌরীপুর থানার ওসি দেলোয়ার আহম্মদ জানান, মামলা হয়েছে, হামলাকারীকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঘটনার খরব পেয়ে ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি নিবাস চন্দ্র মাঝি, ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) এস.এ নেওয়াজী, গৌরীপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাখের হোসেন সিদ্দিকী হাসপাতালে ছুটে যান।
ছেলেকে মেরে ফেলার আকুতি মায়ের:
ছেলের অত্যাচার-নির্যাতনের অতিষ্ঠ উজ্জ্বলের মা জোছনা আক্তার। তিনি জানান, তার এ সন্তানের জন্য বাড়িতে অশান্তি, ঝগড়া লেগেই আছে। পাঁচ বছর আগে বউকে ছেড়ে দিয়েছে। এরপর থেকেই সবার সঙ্গে খারাপ আচারণ করে। ওর জ্বালা এর সহ্য হয় না।
পুলিশের ওপর হামলা ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, ‘সবার কাছে বলছি এরেও মেরে ফেলুক’। ও মরলে বাড়িতে শান্তি আসবে।