আবু সাইদ বিশ্বাসঃসাতক্ষীরা: আম পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে সাতক্ষীরার আম চাষীরা।জেলার অলি-গলি,আনাচে-কানাছে,খেতে-খামারে,আগানে-বাগানে সবখানে যেন আম আর আর। আর কিছু দিন পরেই সাতক্ষীরার আম বাজারে এসব আম উঠতে শুরু করবে। জেলার খুচরা ও পাইকারী ব্যবসায়িরা আম বাগান কিনে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে। আবহাওয়া অনুক’লে থাকলে জেলায় আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা আম চাষীদের। ইত্যো মধ্যে বাজারে আমের গুটি বিক্রি করা শুরু হয়েছে। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে শহরের ঘরে ঘরে আমারে টক খাওয়ার ধুম পড়ে গেছে।
বাগানের গাছে গাছে এখন আমের গুটির সমারোহ। মুকুলগুলো গুটিতে পরিণত হয়ে তার ভারেই নুয়ে পড়ছে বহু গাছের ডাল। চাষিরা গাছের গুটি ঝরা ঠেকাতে স্প্রে করছেন। গাছের গোড়ায় সেচ দিচ্ছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি মৌসুমে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও জেলা থেকে প্রায় ১০০০ মেট্রিক টন আম বিদেশে রফতানি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। গত বছর যার পরিমাণ ছিল ৭০০ মেট্রিক টন ।
চলতি বছর সাতক্ষীরায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সাতক্ষীরার চাহিদা মিটিয়ে এ বছর প্রচুর আম দেশ-বিদেশে রফতানি হবে বলে মনে করছে কৃষি বিভাগ।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরায় সাতটি উপজেলায় চলতি বছর চার হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১১৯৫ হেক্টর জমিতে, কলারোয়া উপজেলায় ৬০২ হেক্টর, তালা উপজেলায় ৭০৫ হেক্টর, দেবহাটা উপজেলায় ৩৬৮ হেক্টর কালিগঞ্জ উপজেলায় ৮০৫ হেক্টর, আশাশুনি উপজেলায় ১২৫ হেক্টর ও শ্যামনগর উপজেলায়ং ১৫০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে।
এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদরে আমের বাগন রয়েছে ১৫৩০টি, কলারোয়ায় ১৩১০টি, তালায় ১৪৫০টি, দেবহাটায় ৪৭৫টি, কালিগঞ্জে ১৪২টি, আশাশুনিতে ১৯০টি ও শ্যামনগর উপজেলায় ১৫০টি আমের বাগান রয়েছে।
সাতক্ষীরার মাটি ও আবহাওয়া আম চাষের অনুকূল হওয়ায় অন্য অঞ্চলে উৎপাদিত আমের চেয়ে সাতক্ষীরার আম খেতে বেশ সুস্বাদু। এছাড়া সাতক্ষীরার আম বাজারে উঠতে থাকে সবার আগে।
সাতক্ষীরায় গোবিন্দভোগ, হিমসাগর, গোপালভোগ, বোম্বাই, গোলাপখাস, ক্ষিরসরাইসহ নানা জাতের আম বাগান রয়েছে। সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচারক কৃষিবিদ কাজী আব্দুল মান্নান জানান, সাতক্ষীরার আম গুণে-মানে সুস্বাদু। অন্যান্য জেলার থেকে সাতক্ষীরার আম আগে পাকে। এ জেলার মাটি আম চাষের উপযোগী। গত চার বছর ধরে এ জেলার আম ইউরোপে রফতানি হচ্ছে। এবারও বাগান পরিচর্যা করা হচ্ছে বিদেশে আম পাঠানোর জন্য। বিশেষ করে হিমসাগর ও ন্যাংড়া। তিনি আরো বলেন, আম চাষিদের দাবির প্রেক্ষিতে চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরায় উৎপাদিত আম যাতে বিদেশে যেতে কোনো ধরনের বাধার সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন জানান,সাতক্ষীরার আম সারা দেশে সুখ্যাতি রয়েছে। সুনাম ক্ষুন্ন করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভোক্তার অধীকার ক্ষুণœ করে আম পাকাতে কেউ ফরমালিনের আশ্রয় নিলে সর্বোচ্ছ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। মোবাইলকোট বসিয়ে তাৎক্ষণিক সাজা কার্যকর করা হবে। সাথে থাকবে জরিমানার ব্যবস্থা। তাই যাতে কেউ আমে ফরমালিন ব্যবহার করতে না পারে তার জন্য তিনি সকলের সহযোগীতা চেয়েছেন।
Check Also
ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়
দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …