গাছে বেঁধে ৬ শিশুকে নির্যাতনকারী আ’লীগ নেতা কারাগারে#রাজশাহী ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউটে ছাত্রলীগের হামলা#পুলিশ সুপারের গাড়ি চাপায় কৃষক নিহত

ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোট:  অনুমতি ছাড়া গাছ থেকে লটকন খাওয়ার অভিযোগে ছয় শিশু শিক্ষার্থীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে বর্বরোচিত কায়দায় নির্যাতনকারী সেই আওয়ামী লীগ নেতা মো. আবু হানিফকে শ্রীঘরে পাঠিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ আদালতে সোপর্দ করলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের বিচারক মো. জসিম উদ্দিন।

অপরদিকে, একই দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্যাতনের শিকার ওই ছয় শিশু পুলিশের সহযোগিতায় অভিভাবকদের সঙ্গে আদালতে গিয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট আবদুন নূরের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

উল্লেখ্য বুধবার মধ্যাহ্নবিরতির সময় কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নের খিলপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম ও চতুর্থ শ্রেণির ছয় শিক্ষার্থী স্কুলের অনতিদূরে অবস্হিত স্কুলের দাতা সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হানিফের বাড়ির জঙ্গলে লটকন গাছ থেকে লটকন পাড়ার সময় তাদের আটক করে।কিশোরগঞ্জ

একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতা আবু হানিফ প্লাস্টিকের দড়ি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে ওই শিশুদের ওপর বর্বরোচিত নির্যাতন শুরু করেন। 

খবর পেয়ে স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাবকরা ছুটে গেলেও তাদের মুক্তি দিচ্ছিলেন না। এ পরিস্থিতিতে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে শিশুদের উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয় এবং ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে আটক করে।

এ ঘটনায় বুধবার রাতে স্কুলের এক শিক্ষক বাদী হয়ে মামলা করেন।

কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি আবুশামা মো. ইকবাল হায়াত যুগান্তরকে জানান, নির্যাতনকারীর হাত থেকে যখন কেউই শিশুদের রক্ষা করতে পারছিলেন না তখনই তারা পুলিশের শরণাপন্ন হলে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে এবং নির্যাতনকারীকে আটক করা হয়।

এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জের শিশু ও নারী নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের পিপি এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ আফজল বলেন, শৈশবে প্রত্যেক শিশু-কিশোরই এমনকি আমরাও সবাই এ বয়সে স্কুল ছুটিতে কিংবা বিরতিতে না বলে মানুষের গাছ থেকে ফলফলাদি পেড়ে খেয়েছি।

তাই বলে এমন নিষ্ঠুর ও মধ্যযুগীয় কায়দায় শাস্তি? এ ধরনের বর্বরোচিত শিশু নির্যাতনের ঘটনা অমার্জনীয় অপরাধের শামিল। নির্যাতনকারী যেই হোক না কেন অবশ্যই তাকে উপযুক্ত শাস্তি পেতে হবে।

রাজশাহী ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউটে ছাত্রলীগের হামলা, ছাত্রী লাঞ্ছিত

ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সার্ভে ইন্সটিটিউট

রাজশাহী ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সার্ভে ইন্সটিটিউটে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও বহিরাগতরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর নওদাপাড়ায় সার্ভে ইন্সটিটিউটের নতুন ভবন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

এ সময় অধ্যক্ষ ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়। কয়েকজন ছাত্রীকেও লাঞ্ছিত করা হয়। এ ঘটনায় প্রতিবাদে রাজশাহী সার্ভে ইন্সটিটিউটের পুরনো ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন।

হামলার শিকার সার্ভে ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা জানান, তারা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর সোনাদিঘি মোড়ের পুরনো ক্যাম্পাস ছেড়ে নওদাপাড়ায় নতুন ক্যাম্পাসে উঠতে যান। নতুন ক্যাম্পাসে প্রবেশের আগেই ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী ও বহিরাগতরা হঠাৎ করে সেখানে উপস্থিত হয়ে অধ্যক্ষ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এ সময় হামলাকারীরা কয়েকজন ছাত্রীকেও লাঞ্ছিত করে।

হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলাকারীরা এ সময় সার্ভে ইন্সটিটিউটে ভাঙচুর চালিয়ে ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যায়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে।

অধ্যক্ষ মাহাবুবুর রহমান জানান, কেন এ হামলা তিনি কিছুই জানেন না। হঠাৎ করে একদল যুবক এসে নতুন ক্যাম্পাসে তাদের ওপর হামলা করে এবং ভাঙচুর চালাতে শুরু করে।

নগরীর শাহ মখদুম থানার ওসি জিল্লুর রহমান জানান, পুলিশ যাওয়ার আগেই হামলাকারীরা চলে যায়। তবে হামলার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে।

এদিকে নতুন ক্যাম্পাসে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে পুরনো ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় তারা হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

পুলিশ সুপারের গাড়ি কেড়ে নিল কৃষকের প্রাণ

নাটোর

নাটোরের বড়াইগ্রামে পুলিশ সুপারের গাড়ির ধাক্কায় ফরিদুল ইসলাম (৫০) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। এ সময় সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মিরাজউদ্দিন আহমেদ গাড়িতে ছিলেন বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বনপাড়া-হাটিকুমরুল-ঢাকা মহাসড়কের শ্রীরামপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা এ ঘটে। নিহত ফরিদুল ইসলাম শ্রীরামপুর গ্রামের মৃত আরশেদ আলীর ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে শ্রীরামপুর তেল পাম্পের সামনে মাথায় ঘাস নিয়ে কৃষক ফরিদুল ইসলাম রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এ সময় পুলিশ প্রটোকলের মধ্য দিয়ে পুলিশ সুপার মিরাজউদ্দিন আহমেদ সিরাজগঞ্জে ফেরার পথে তাকে বহনকারী সরকারি জিপের সঙ্গে ফরিদুল ইসলামের ধাক্কা লাগে। এতে তিনি গুরুতর আহত হলে সঙ্গে থাকা পুলিশ টিম তাকে উদ্ধার করে বড়াইগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বড়াইগ্রাম থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা যুগান্তরকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুর্ঘটনাকবলিত জিপটি থানায় আনা হয়েছে।

Check Also

ট্রাইব্যুনালে আ.লীগ নেতাদের বিচার দেখতে এসে যা বললেন সাঈদী পুত্র

জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।