ক্রাইমবার্তা রিপোট: সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা সংস্কারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান নেয়া আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া আর সংঘর্ষে শাহবাগ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
পুলিশ এ সময় আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত কতজন আহত হয়েছেন তা জানা যায় নি। আন্দোলনকারীরা শাহবাগের বিভিন্ন জায়গায় আগুন ধরিয়ে দেন।
রোববার দুপুর থেকে শুরু হয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও চাকরীপ্রার্থীদের এ আন্দোলন।
প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনের রাস্তা দিয়ে বের হয়ে রাজু স্মৃতি ভাস্কর্য হয়ে নীলক্ষেত ও কাঁটাবন ঘুরে শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা।
ফলে শাহবাগ মোড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় এবং একপর্যায়ে শাহবাগ মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ঢাকাসহ সারা দেশে গণপদযাত্রার অংশ হিসেবে এ কর্মসূচি পালন করছে আন্দোলনকারীরা।
এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন হাজারো শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থী। তাদের দাবি, বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি সংস্কার করে কমাতে হবে। এই চাকরিতে কোটা সব মিলিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে।
বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে ৫৫ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের অগ্রাধিকার কোটা রয়েছে। আর বাকি ৪৫ শতাংশ নিয়োগ হয় মেধা কোটায়। এ জন্য এই কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা।
কোটা সংস্কার দাবিতে শিক্ষার্থীদের দাবি হল- কোটাব্যবস্থা সংস্কার করে ৫৬ থেকে ১০ শতাংশে নিয়ে আসা; কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদে মেধায় নিয়োগ দেওয়া; নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার না করা; কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা না নেওয়া এবং চাকরির ক্ষেত্রে সবার জন্য অভিন্ন কাটমার্ক ও বয়সসীমা নির্ধারণ করা।
এর আগে বিকেলে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী পদযাত্রায় হাজারো শিক্ষার্থী অংশ নেন। পরে তারা শাহবাগে অবস্থান করেন।
জানা গেছে, রোববার দুপুর আড়াইটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর সামনে প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী জড়ো হয়। সেখান থেকে একটি মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা টিএসসি হয়ে নীলক্ষেত মোড় ঘুরে কাঁটাবন হয়ে শাহবাগ মোড়ে আসে। পরে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে তারা। ফলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এ সময় আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসান আল মামুন বলেন, আজ সংসদ অধিবেশন রয়েছে। ওই অধিবেশনে আমরা কোটা সংস্কারের সুষ্ঠু সমাধান চেয়ে ঘোষণা চাই। ঘোষণা আসার পর আমাদের অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করা হবে।