ক্রাইমবার্তা রিপোট: গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে দুই সিটিতে ইভিএম ব্যবহার বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে।
রোববার দুপুরে নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলন করে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ দাবি জানান।
তিনি বলেন, গত দুদিন ধরে নির্বাচন কমিশনার ঘোষণা দিচ্ছে- গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে না। ইলেকট্রনিক ভোটের মেশিন ব্যবহারে জনগণের আগ্রহ না থাকলেও নির্বাচন কমিশন অনেক সেন্টারে ইভিএম ব্যবহার করতে চাইছে। নির্বাচন কমিশন আদৌ দুই সিটির নির্বাচন সুষ্ঠু চায় কিনা সন্দেহ আছে।
দুই সিটিতে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড বলে কিছু নেই মন্তব্য করে রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা দুই সিটিতে সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছে। তাদের হাতে হাতে বৈধ-অবৈধ অস্ত্রের ছড়াছড়ি। বৈধ অস্ত্র জমা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা মিছিল করছেন, মিটিং করছেন এবং সমাবেশ করছেন বীরদর্পে। অন্যদিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের সভাসমাবেশ তো দূরের কথা, বাড়িতে ঘুমাতে পর্যন্ত পারছে না। তাদের জীবন কাটছে হয় জেলখানায়, না হয় আদালতের বারান্দায়। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মিথ্যা মামলা মাথায় নিয়ে দিনের পর দিন পুলিশের দৃষ্টি এড়িয়ে ক্ষুধায় তৃষ্ণায় পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী হতে ইচ্ছুক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কমপক্ষে ৩০-এর ঊর্ধ্বে শতাধিক রাজনৈতিক মামলা রয়েছে। সারাক্ষণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের তাড়া করছে।
সিইসিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন- সব দল না এলে নির্বাচন ভালো হয় না, তা হলে সিইসির প্রধান দায়িত্ব সব দলকে নির্বাচনে নিয়ে আসার জন্য সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি করা। এ ক্ষেত্রে যদি সরকার বাধা হয়ে দাঁড়ায় তা হলে সংবিধানের অর্পিত ক্ষমতায় তিনি সব বাধাকে অতিক্রম করে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারেন। সরকার যদি সিইসির প্রতি সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার মতো আচরণ করতে চায়, তা হলে তিনি নিজ নীতিতে অটল থেকে শুধু বাংলাদেশ নয়; সারা বিশ্বে সাহসী দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন। প্রয়োজনে সরকারের অন্যায়ের চাপের প্রতিবাদে পদত্যাগ করবেন তাতে দেশের জনগণ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আপনার পাশে এসে দাঁড়াবে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরকারের দলীয় বাহিনীর কাজ করছে, অভিযোগ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, এই সরকারের আমলে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভয়মুক্ত ভোটের পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। ভোটাররাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর আস্থাশীল হতে পারবেন না। তাই নিরপেক্ষ, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট নিশ্চিত করতে হলে সেনা মোতায়েন অত্যাবশ্যক।