হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে স্টেডিয়ামে ঘুড়ি উড়ানো প্রতিযোগিতা

ক্রাই্মবার্তা ডেস্করিপোট: ‘আমাদের যুগে আমরা যখন আকাশের তলে উড়িয়েছি শুধু ঘুড়ি, তোমরা এখন কলের লাঙল চালাও গগন জুড়ি’-কবি সুফিয়া কামালের লেখা ‘আজিকার শিশু’ কবিতার এ দু’লাইন মনে করিয়ে দেয়, শৈশবে ঘুড়ি উড়ানোর সেই নির্ভেজাল আনন্দময় স্মৃতির কথা। শীতের শেষে বসন্তের আগমনে দখিনা মলয় হিল্লোলে প্রকৃতি যখন জেগে উঠতো তখন গ্রামের বিলগুলোতে চলতো ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগিতা। প্রত্যেক কিশোরের হাতে থাকতো লাটাই ও সূতা। আকাশে উড়তো রঙিন ঘুড়ি। বিচিত্র নাম এসব ঘুড়ির। ডাকঘুড়ি, সাপঘুড়ি, মাছঘুড়ি, বাঙ্ঘুড়ি, মানুষঘুড়ি, তারাঘুড়ি ইত্যাদি। সারের বস্তা থেকে একধরণের পাতলা বুনন সূতো তুলে কিংবা বেত ও বাঁশের তৈরি বিশেষভাবে পাতলা চ্যাটা আর একটি ছড়ের সাথে বিশেষভাবে বেঁধে ঘুড়ির সাথে সংযুক্ত করার পর আকাশে উড়িয়ে দিলে ঘুড়ি থেকে সুরেলা শব্দ শোনা যেতো। এই ঘুড়িকে ডাক ঘুড়ি বলা হতো। ঘুড়ি বানানো হতো সিমেন্টের বস্তার কাগজ, কিংবা সাদা কাগজ অথবা রঙিন কাগজ দিয়ে। বাঁশপাতা কাগজ নামে এক ধরণের কাগজ তৈরি হতো নতুন বইয়ের খাম লাগানো আর ঘুড়ি বানানোর জন্য। সেই ঘুড়ি উড়ানো বিকেলগুলো আজ হারিয়ে গেছে। হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে তুলে ধরে সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে বৈশাখী ঘুড়ি উড়ানো প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১৩ এপ্রিল) বিকালে সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে ৫ দিন ব্যাপী বৈশাখী উৎসবের অংশ হিসেবে এই প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক মো. ইফতেখার হোসেন। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আব্দুল হান্নান, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক একে এম আনিছুর রহমানসহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পত্রদূতের উপদেষ্ঠা মন্ডলীর সদস্য শফিউল আলম খান। ঘুড়ি উড়িয়ে প্রথম স্থান অধিকার করে শিশু হোসেন সরদার, শিশু আবির হোসেন ও সাইফুল ইসলাম।

Check Also

সাতক্ষীরা শহর শখার ২ নং ওয়ার্ডের উদ্যোগে সভা অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি সাতক্ষীরা শহর শখার ২ নং ওয়ার্ড (রাজারবাগান ও সরকারপাড়া ইউনিট) এর উদ্যোগে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।