আমেরিকায় ঢুকতে গিয়ে মেক্সিকো সীমান্তে আটক ১৭১ বাংলাদেশী

 ‘টেক্সাসের সীমান্ত দক্ষিণ এশিয়া থেকে অবৈধ অভিবাসনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে’

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক এবং সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগ (সিবিপি) বলছে ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে এপ্রিলের ১২ তারিখ পর্যন্ত মেক্সিকোর সাথে টেক্সাসের লারেডো সীমান্তে ১৭১ জন বাংলাদেশীকে তারা আটক করেছে।

মেক্সিকোর সাথে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার চেষ্টার সময় তাদের করা হয়।

২০১৭ অর্থ বছরে (অক্টোবর-আগস্ট) ওই একই সীমান্তে ১৮০ জন বাংলাদেশীকে আটক করা হয়েছিল।

মেক্সিকো হয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশীদের আমেরিকায় ঢোকার এই পরিসংখ্যানে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসনবিরোধী বৃহত্তম এবং প্রভাবশালী সংগঠন ফেডারেশন ফর আমেরিকান ইমিগ্রেশন রিফর্মস (এফএআইএ)।

ইমিগ্রেশন রিফর্ম ডট কম নামে সংস্থার ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি নিবন্ধ লিখেছেন গবেষণা বিভাগের প্রধান ম্যাট ও ব্রায়েন।

তিনি লিখেছেন , অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, টেক্সাসের লারেডো সীমান্ত ল্যাটিন আমেরিকা হয়ে দক্ষিণ এশীয় এবং আফগান অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রের ঢোকার প্রধান রাস্তা হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশীদের নিয়ে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মি ব্রায়েন। তার উদ্বেগের দুটো কারণ তিনি দেখিয়েছেন-

এক, আইসিস এবং আল কায়েদা ইন ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট (এ কিউআইএস) এবং আরো কিছু জঙ্গি গোষ্ঠী বাংলাদেশে তৎপর এবং এরা বাংলাদেশ থেকে সদস্য সংগ্রহ করছে। “সুতরাং সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশ থেকে আসা এসব অবৈধ অভিবাসীদের কারো কারো সাথে ঐ সব সন্ত্রাসী সংগঠনের যোগাযোগ থাকতে পারে।”

দুই, যদি বাংলাদেশের মত দূরবর্তী একটি দেশ থেকে লোকজন ল্যাটিন আমেরিকায় ঢুকে মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুতে যেতে পারে, তাহলে অন্যান্য যেসব দেশে সন্ত্রাসবাদের সমস্যা রয়েছে সেখানকার লোকজনও উৎসাহিত হয়ে একই পথ নিতে পারে।

“প্রায় অরক্ষিত দক্ষিণের সীমান্ত যেন সন্ত্রাসীরা অপব্যবহার না করতে পারে, তা নিশ্চিত করার সময় এসেছে।”

গত বছর মার্কিন সাময়িকী লস এঞ্জেলস টাইমসের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়, ল্যাটিন আমেরিকা হয়ে মেক্সিকোর বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশী, ভারতীয়, নেপালি ও পাকিস্তানিদের অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ঢোকার সংখ্যা প্রচণ্ড বেড়ে গেছে।

সরকারি পরিসংখ্যান উল্লেখ করে ওই রিপোর্টে বলা হয় ২০১৬ সালের অগাস্ট মাসের আগের ১১ মাসে এই চারটি দেশের ৪০৬০ নাগরিক এই পথে আমেরিকায় ঢোকে, যাদের মধ্যে ৩৬০৪ জনকে আটক করা। অথচ সাত বছর আগে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ২২৫ জন।

লস এঞ্জেলস টাইমস লিখেছে – দক্ষিণ এশীয় এসব অবৈধ অভিবাসীরা প্রধানত দুবাই থেকে চার্টার্ড বিমানে ব্রাজিলে এসে নামে। তার পর সেখান থেকে স্থলপথে বলিভিয়া, পেরু, একুয়েডর, পানামা সিটি এবং গুয়েতামালা হয়ে মেক্সিকোতে ঢোকে।

এত পথ পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে পৌঁছুতে অনেক সময় কয়েক মাস লেগে যায়। পথে পড়ে বিপজ্জনক জঙ্গল, পাহাড়, চাঁদাবাজ এবং ডাকাতের দল। সীমান্ত দিয়ে রক্ষীদের চোখ এড়িয়ে ঢুকতে না পারলে, অনেক সময় ধরা পড়ে যায় অথবা নিজেরাই ধরা দিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় চায়।

২০১৬ অর্থ বছরে মেক্সিকো সীমান্তে প্রায় চার হাজার দক্ষিণ এশীয়কে আটক করা হয়।

Check Also

গাজায় আরও ৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত

ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজা ভূখণ্ডে আরও ৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।