ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোট: সাতক্ষীরায় হঠাৎ বোরো ধানে ব্লাস্ট রোগের প্রাদুর্ভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েছে জেলার কৃষকরা। ধান কাটার সময় হঠাৎ এমন রোগ দেখা দেওয়ায় কৃষকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছে। জেলায় এবার ধানের বাম্পার ফলনের আশা করেছিল চাষিরা। কিন্তু ব্লাস্ট রোগের কারণে ধান চিটে হয়ে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছে তারা।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় ৭৪ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬৫০ হেক্টর বেশি। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ধরা হয়েছে ২ লাখ ৯৭ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু ব্লাস্ট রোগ ধানের ফলন ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত
না হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের পাকুড়িয়া গ্রামের নূর হোসেন বোরো চাষ করেছেন চার বিঘা জমিতে। বিঘা প্রতি আট হাজার টাকা করে লিজের টাকা দিতে হয়েছে তাকে। জমি চাষ, বীজ, সার, সেচ, কীটনাশক ও শ্রমিকদের মজুরি বাবদ খরচ করেছেন বিঘা প্রতি পাঁচ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে ৫২ হাজার টাকা খরচ হলেও ১০ হাজার টাকার ধানও পাবেন না বলে শঙ্কা করছেন তিনি। ফলন্ত ধানের শীষগুলো দিনে পর দিন শুকিয়ে চিটে হয়ে গেছে। কৃষি বিভাগের কোন পরামর্শই তাদের কাজে লাগছে না।
খোরদ্দ গ্রামের বাবরআলী, দেয়াড়া গ্রামের কুদ্দুসসহ বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, দু’সপ্তাহ আগে থেকে ব্লাস্ট (ধানের শীষ শুকিয়ে সাদা হয়ে যাওয়া) রোগ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে এর প্রভাব পড়েছে। ছত্রাকনাশক নাটিবো, টাটাবো ও টু-ওভার স্প্রে করেও মাঠের পর মাঠ সাদা হয়ে যাচ্ছে।
তালা সদর ইউপি চেয়াম্যান সরদার জাকির জানান, প্রায় একমাস আগে থেকে কপোতাক্ষের দু’তীরের কৃষকদের ধান ক্ষেতে ব্লাস্ট ছত্রাকের আক্রমণ দেখা দেয়। বিষয়টি তারা ইউনিয়ন সহকারি কৃষি কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফাকে জানিয়েছেন। কিন্তু কোন কাজ হয়নি।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কাজী আব্দুল মান্নান জানান, ব্লাস্ট একটি ছত্রাকজনিত রোগ। ধানে দানা বাঁধা শুরু হলে ছত্রাক জনিত এই ব্লাস্ট রোগ দেখা দেয়। কৃষকদের ছত্রাকনাশক স্প্রে, জমিতে পানি ধরে রাখা ও কখনো জমিতে ইউরিয়া ব্যবহার না করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে সচেতনতামূলক কৃষকদের মাঝে লিফলেটও বিতরণ করা হয়েছে। কৃষকরা অনুসরণ করলে উৎপাদনে খুব একটা অসুবিধা হবে না।