ক্রাইমবার্তা রির্পোট: কলারোয়া: সাতক্ষীরার কলারোয়ায় পুলিশের সাথে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সোহাগ হোসেন (২৬) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের হিজলদী-সুলতানপুর রোডে ঘোজের বটতলা নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশের দাবি ওই ঘটনায় আহত হয়েছে ২ পুলিশ সদস্য। এ সময় একটি ওয়ানশ্যুটার গান ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয় বলে পুলিশ জানায়। নিহত সোহাগ হোসেন উপজেলার কেঁড়াগাছি ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের শামসুর দফাদারের ছেলে।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার ঘটনাটি নিশ্চিত করে ক্রাইমবার্তাকে জানান, সোহাগের বিরুদ্ধে শনিবার সন্ধ্যায় তৃতীয় শ্রেণীর এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এমনকি এ ঘটনায় থানায় তাৎক্ষণিক মামলা রেকর্ড হয়। এরপর তাকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকে।
শনিবার তিনি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন, ধর্ষক সোহাগ ভারতে পালিয়ে যাওয়ার জন্য তার কয়েকজন সঙ্গীদের
নিয়ে সীমান্তর্তী ওই স্থানে অবস্থান করছে। পরে থানার এসআই সোলায়মান আক্কাজের নেতৃত্বে সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যরা ওই স্থানে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সোহাগ তার সঙ্গীদের নিয়ে পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গুলি ছুড়লে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাল্টা ৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। এতে সোহাগ গুলিবিদ্ধ হয় এবং অন্যরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে তার ডান হাতে ধরা অবস্থায় একটি ওয়ানশ্যুটার গান ও পাশে পড়ে থাকা এক রাউন্ড গুলিসহ তাকে উদ্ধার করে কলারোয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত বলে ঘোষনা করেন। এ সময় পুলিশেরও দুই সদস্য এএসআই হাবিব ও এএসআই সাগর আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
ওসি বিপ্ল কুমার নাথ আরো জানান, রোববার দুপুরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা মর্গে পাঠানো হয়েছে।
কলারোয়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শফিকুল ইসলাম জানান- রাত সাড়ে ৩ টার দিকে সোহাগ হোসেনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। গুলি নিহতের মাথার বাম কান দিয়ে ঢুকে ডান কান দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চিহ্ন পাওয়া গেছে।
প্রসঙ্গ গত শনিবার বিকেলে স্কুল থেকে ফিরে বাড়ির পাশে পুকুরে গোসল করতে গেলে ওই শিশুকে পুকুর পাড়ে ধর্ষণ করে সোহাগ। সেসময় মেয়েটির চিৎকারে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে রক্তক্ষরণ অবস্থায় প্রথমে কলারোয়া হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে তার অবস্থার আরো অবনতি হওয়ায় পরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় ওই শিশুর নানি বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। শিশুটি বর্তমানে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটিকে দেখতে যান সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মেরিনা আক্তার।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ইকবাল মাহমুদ জানান- শিশুটির রক্তক্ষরন হওয়ায় তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে। মেয়েটির মা জানায়- মেয়ের খুব রক্ত খরন হচ্ছে,উঠে দাঁড়াতে পারছে না।
হত্যার ঘটনায় এসআই সুলাইমান বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে ।
নিহতের এক স্বজন জানান,পুলিশ সন্ধায় সোহাগকে আটক করে। পরে রাতের কোন এক সময়ে তার মাথায় পিস্ত ঠেকিয়ে ঢান্ডা মাথায় গুলি করে বন্ধুক যুদ্ধের অভিযোগ করে। তাকে এভাবে হত্যা না করে আদালতের মাধ্যমে বিচার করলে ভাল হত।
সোহাগ একজন ভ্যান চালক। তার কাছে অস্ত্র থাকার কথা ভাবাই কঠিন বলে পরিবারের অপর এক সদস্য জানান।
https://youtu.be/compZJS2IOg