স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, টাকা নিয়ে চম্পট দেওয়া ‘চলন্তিকা যুব সোসাইটি’ নামে খুলনা ভিত্তিক একটি এনজিও ২০০৪ সালে তালা উপজেলায় কার্যক্রম শুরু করে। অফিস কর্মচারীসহ বিভিন্ন অঞ্চলভিত্তিক মাঠকর্মী নিয়োগের মাধ্যমে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আদলে ৬ বছরে দ্বিগুণ ও দশ বছরে তিনগুণ মুনাফা দেয়ার ঘোষণা দিয়ে মেয়াদি আমানত (এফডিআর), মাসিক আমানত (এমএসএস) এবং ক্ষুদ্র পরিসরে ঋণ বিতরণ কর্মসূচির কাজ শুরু করে চলন্তিকা। ২০০৯ সাল থেকে এ আমানত গ্রহণ ও ঋণদান কর্মসূচি শুরু করলে অধিক মুনাফার আশায় গ্রাহকরা সেখানে ১৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত মেয়াদি আমানতের হিসাব খুলেছেন। এতে তালার কাটাখালির অমনি সাহার ছেলে উদয় সাহার ১৭ লাখ, মৃত্যু আদম গাজীর ছেলে আনসার গাজীর ১০লাখ, বিধান সাহার ছেলে শশাঙ্ক সাহার ৬ লাখ, আমের আলীর ছেলে দাউদের ৫লাখ, ঝড়গাছা দৌলতপুরের বিমল ঘোষের ১৫ লাখ, চলন্তিকার মাঠকর্মী শাহিনুর রহমানের স্ত্রী আকলিমা খাতুনের ৩ লক্ষসহ পাশ^বর্তী অঞ্চলের গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে ১ই এপ্রিল চলন্তিকা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উধাও হয়ে যান। এ নিয়ে তালার ধানদিয়া, ফুলবাড়ি, কৃষ্ণনগর, সরুলিয়ার, কাটাখালি, ঝড়গাছা দৌলতপুর, পাটকেলঘাটা সহ পাশ^বর্তী অঞ্চলের যুব সোসাইটির প্রায় সহস্রাধিক গ্রাহক তাদের আমানত ও সঞ্চয়ের ৫ কোটিরও বেশি টাকা আদেও ফিরে পাবে কি পাবেনা তা নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েছে।
উদয় সাহা, আনছার গাাজীসহ একাধিক ভুক্তভোগী গ্রাহক বলেন, সহায়-সম্বল যা ছিল তাই উচ্চ মুনাফা লাভের আশায় সঞ্চিত বা আমানত গচ্ছিত রেখেছিলাম চলন্তিকায় । চলন্তিকার প্রতারণার কারণে এখন আমরা নিঃস্ব হয়ে জীবনযাপন করছি। গ্রাহকরা আরো বলেন, এই অপকর্মের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। তারা আমাদের দেয়া অনেক টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজেদের এ্যাকাউন্টে জমা রেখেছে। তারা আমাদের পেটে লাঠি মেরে আমাদেরকে নিঃস্ব করেছে। গ্রাহকরা প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করে বলেন, সাতক্ষীরার বিভিন্ন স্থানে চলন্তিকার সম্পত্তি রয়েছে। প্রশাসন সেসকল সম্পত্তি নিজেদের জিম্মায় নিয়ে আমাদের টাকা ফেরৎ এ সহায়তা করলে আমরা অনেক উপকৃত হবো।
সাতক্ষীরা জোনের আঞ্চলিক অফিস ধানদিয়া চলন্তিকা যুব সোসাইটির সহকারি ম্যানেজার মাষ্টার ইমাদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা কেন গ্রাহকের টাকা আত্মসার্ত করবো? আমাদের উপর মহলের কর্মকতারা এ ব্যাপাওে বলতে পারবে। আমরাতো তাদের নিদের্শে কাজ করি মাত্র।
তবে এ ব্যাপারে চলন্তিকা সোসাইটির চেয়ারম্যান খবিরুজ্জামান’র মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তালা উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোঃ ফরিদ হোসেনবলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। তবে এমন ঘটনা ঘটলে সত্যতা যাচাই করে দোষীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।