ক্রাইমবার্তা রিপোট: ভিজিডির চাল আত্মসাতের দায়ে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউপি চেয়ারম্যান সাবেক ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল আলম চৌধুরী সাজুকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাকে বরখাস্ত করে। একই সঙ্গে তাকে কেন স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না সে জন্য পত্রপ্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।গত রোববার এ চিঠি এলেও বিষয়টি মঙ্গলবার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী গত ১৫ এপ্রিল তার বরখাস্তের আদেশের পত্রে স্বাক্ষর করেন। পত্রে উল্লেখ করা হয় ওই ইউনিয়নের ভিজিডি কার্যক্রমে ব্যাপক অনিয়ম ও চাল আত্মসাৎ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান সাজু।তার বিরুদ্ধে আনীত এ অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিতও হয়েছে। ফলে তাকে উক্ত পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। একই সঙ্গে পত্রপ্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে জবাব প্রেরণ করতে হবে।এ বিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ বিন হাসান বরখাস্তের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তিনি জেনেছেন ইউপি চেয়ারম্যান সাজুকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে এখনও পত্র পাননি।এ ব্যাপারে অভিযুক্ত বরখাস্তকৃত ইউপি চেয়ারম্যান জাবেদুল আলম চৌধুরী সাজু জানান, ভিজিডি কার্যক্রমে অনিয়ম ও চাল আত্মসাতের সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার।
এদিকে ঝালকাঠির রাজাপুর সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন মজিবর মৃধার বিরুদ্ধে ইউপি সদস্যকে চড়-থাপ্পড় মেরে চুলের মুঠি ধরে টানা, গালাগাল ও হত্যার হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন রাজাপুর সদর ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য ও উপজেলা মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুন নাহার নিরু।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নুরুন নাহার নিরু অভিযোগ করেন, তার ওয়ার্ডের বিধবা ও বয়স্ক ভাতার তালিকা জমা দেয়ার জন্য গত ১৮ এপ্রিল সকাল ১১টায় রাজাপুর মেডিকেল মোড়ে চেয়ারম্যানের রড সিমেন্টের দোকানে যান নুরুন নাহার।
চেয়ারম্যানের কাছে বিধবা ও বয়স্ক ভাতার তালিকা জমা দিলে ওই তালিকা দেখে চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মজিবর মৃধা ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, এ তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের ভাতা দেয়া যাবে না। আমি যে নাম দেব তা দিয়ে তালিকা তৈরি করে দিতে হবে,অন্যথায় পাস করা হবে।
চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মৃধার এ বক্তব্যের প্রতিবাদ করলে সংরক্ষিত ইউপি সদস্য নুরুন নাহার নিরুকে চড়-থাপ্পড় মারেন চেয়ারম্যান।
এ সময় ভয়ে দৌড় দিলে চেয়ারম্যান নুরুন নাহার নিরুকে দাবড়িয়ে চুলের মুঠি ধরে টানাহেঁচড়া করেন এবং গলা টিপে হত্যার চেষ্টা করেন।
এ সময় ইউপি সদস্য মিজান মাঝি ও মোসা. নাজমা ইয়াসমিন চেয়ারম্যানের হাত থেকে নুরুন নাহার নিরুকে রক্ষা করেন।
নুরুন নাহার নিরু বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মনিরউজ্জামান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রাজাপুর থানার ওসি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা আক্তার লাইজুকে জানালেও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এ ঘটনার বিচার দাবিতে নুরুন নাহার সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তার সঙ্গে সংরক্ষিত আসনের মহিলা ইউপি সদস্য নাজমা ইয়াসমিন মুন্নি উপস্থিত ছিলেন।
ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মজিবর মৃধা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নুরুন নাহার নিরু টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে বয়স্ক ও বিধবা ভাতা প্রদান করেন, তাই তার তালিকা গ্রহণ করা হয়নি।