সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের আহবায়ক আব্দুল মান্নান মুক্তি পেয়েই নিউমার্কেটে সমাবেশ করে সদর এমপিকে হুশিয়ারী

ক্রাইমবার্তা রিপোট:   একমাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের আহবায়ক আব্দুল মান্নান। মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা জজ আদালতে মান্নানের জামিন আবেদন করলে আদালতের বিচারক সাদিকুল ইসলাম তালুকদার তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। এদিকে জেলা যুবলীগের আহবায়কের মুক্তির খবরে নেতাকর্মীরা ছুটে যান সাতক্ষীরা জেলা কারাগারের সামনে। বিকেল ৫টা দিকে কারাগার থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে নেতাকর্মীরা তাকে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেন।

সেখান থেকে মটরসাইকেল শোভাযাত্রার মাধ্যমে শহরের নিউ মার্কেটস্থ শহীদ আলাউদ্দিন চত্তরে পৌছে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সদ্য কারামুক্ত জেলা যুবলীগের আহবায়ক আব্দুল মান্নান। এসময় তিনি বলেন, স্বাধীনতা দিবসের জনসভায় এমপি রবির নেতৃত্বে যুবলীগের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করা হয়েছিলো। জেলা যুবলীগ যখন জামাত-শিবির মুভমেন্টে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক হিসেবে রাজপথে লড়াই সংগ্রাম করছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য আসন্ন নির্বাচনে নৌকার পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে ব্যস্ত তখন এমপি রবি সাতক্ষীরায় যুবলীগকে ভেঙে ফেলার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এমপি রবি কখনো আওয়ামী লীগের লোক হতে পারে না। সে আওয়ামী লীগের লোক হলে যুবলীগের ছেলেদের বুকে কোপ মারতে পারতো না। আমাকে রাজনৈতিকভাবে শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছে এমপি রবি। আমার পরিবারের একটি ব্যক্তিও আওয়ামী লীগের বাইরে অন্য কোন দলের রাজনীতি করে না। আমার বড় ভাই একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি শ্রমিকলীগের জেলা সাধারণ সম্পাদক। আমি ১৯৮২ সাল থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ছাত্রলীগ, যুবলীগের রাজনীতি করে আসছি। ১৯৯০ এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় এমপি রবি’র ভাই মহি আলম স্বৈরাচারের পক্ষ নিয়ে ছাত্রসমাজের হয়ে আমাদের ছাত্রলীগ যুবলীগের মিছিলে হামলা চালিয়েছিলো। ১৯৯০, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৭-০৮ সালের আন্দোলনের সময় কোথায় ছিলো এমপি রবি ও তার ভাইয়েরা? আমরা রাজপথে থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করার জন্য জেল-জুলুম-নির্যাতন সহ্য করেছি। আর আজ এমপি রবি আমাকে যুবলীগ থেকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। আমি তাকে দুইশত বছর সময় দিলাম পারলে আমাকে যুবলীগ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেখাক। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে আব্দুল মান্নান আরো বলেন, আপনারা সবাই জানেন, গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে সাতক্ষীরা পৌর আওয়ামী লীগের জনসভায় আমি যখন বক্তব্য রাখছিলাম তখন এমপি রবির হুকুমে আমার উপর আক্রমণ করা হয়। অথচ কি নির্লজ্জ, কি বেহায়া আমার বিরুদ্ধে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মিথ্যা মামলা করেছে। আমার সাতক্ষীরা জেলার যুবলীগের সকল নেতাকর্মী যারা আমাকে মুক্ত করার জন্য মিছিল করেছেন, মিটিং করেছেন তাদের সকলের প্রতি চিরকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা প্রত্যেকে নিজ নিজ এলাকায় যুবলীগকে আরো সংগঠিত করুন। জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আবারো প্রধানমন্ত্রী করার জন্য যুবলীগকে কাজ করতে হবে। সাতক্ষীরায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেত্রী তাকেই মনোনয়ন দেবেন যিনি নেতাকর্মীদের পাশে থাকেন, জনগণের পাশে আছেন। জনবিচ্ছিন্ন কাউকে নেত্রী আর মনোনয়ন দেবেন না।’

এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম শওকত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শাহাজান আলী, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মাদ আবু সায়ীদ, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান, সহ-সভাপতি লাবসা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া বাবু, সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ময়নুল হাসান, পৌর যুবলীগের সভাপতি মনোয়ার হোসেন অনু, সাধারণ সম্পাদক তুহিনুর রহমান তুহিন, শ্যামনগর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, আশাশুনি উপজেলার যুবলীগের সভাপতি ও আশাশুনি সদর ইউনিয়নের চেয়াম্যান সেলিম রেজা মিলনসহ জেলা, উপজেলা পৌর যুবলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য: গত ২৬ মার্চ পৌর আওয়ামী লীগের সভায় জেলা যুবলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় মান্নান কে আটক করে পুলিশ। এরপর থেকে তিনি জেল হাজতে ছিলেন।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।