ক্রাইমবার্তা রিপোট: সদর উপজেলা বাঁশদহা ইউনিয়নে কাবিখা ও টিআর প্রকল্পের কাজ না করে গত ৪ বছরে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্প সভাপতি ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলাম ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাষ্টার মফিজুল ইসলামের এ অভিযোগ। ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে সাবেক ইউপি সদস্য মনিকে সভাপতি দেখিয়ে পাঁচরখী পাকা রাস্তার মুখ থেকে সাহাজুদ্দীনের ডিপ কল পযর্ন্ত মাটি দ্বারা সংস্কার করার নাম করে কাবিখা প্রকল্পের ৪ বছরে ৪ বার নাম দিয়ে ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ নিয়ে কোন কাজ করা হয়নি। পাঁচরখী বড় পুকুর থেকে চারা বটতলা পযর্ন্ত মাটি দ্বারা সংস্কার কাজে বরাদ্দ হয় দেড় লাখ টাকা। ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে কাজ না করে সে টাকাও তুলে খেয়ে ফেলেছেন তারা। পাঁচরখী গ্রামের ভাংড়াখাল সংস্কারের জন্য প্রায় ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ নিয়ে এক লাখ টাকার কাজ করে পুরো টাকা পকেটে ভরেছে। একই গ্রামের কবরস্থান মাটি দ্বারা সংস্কারের জন্য আড়াই লাখ টাকা কাবিখা বরাদ্দ নিয়ে সামান্য কিছু মাটি দিয়ে বাকী টাকা লুটপাট করেছেন। ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলামকে প্রকল্পের সভাপতি দেখিয়ে মাষ্টার মফিজুল ইসলাম সবস্থানে ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে কাজ না করে টাকা তুলে নিয়ে নিজে লুটপাট ও হরিলুট করেছেন। কাউনডাঙ্গা মিজান ডাক্তারের বাড়ি হতে হলুর মাঠ এবং ডিপ কল পযর্ন্ত ২ লাখ টাকা বরাদ্দ নেয়া হয় মাটি দ্বারা সংস্কারের জন্য। সেখানে কোন কাজই করা হয়নি। আবার একই রাস্তায় ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে প্যাড সরদারের ব্রিজ পযর্ন্ত ২ লাখ টাকা মাটি দ্বারা সংস্কার দেখিয়ে সেখানেও কাজ না করে তুলে নিয়েছেন টাকা। একই গ্রামের গণির বাড়ি থেকে লুৎফরের বাড়ি পযর্ন্ত ২ লাখ ৭০ হাজার টাকার কাজ বরাদ্দ নিয়ে কাজ না করে টাকা তুলে নিয়েছেন তারা। কাউনডাঙ্গা জিয়ারুলের বাড়ি হতে লুৎফরের বাড়ি পযর্ন্ত রাস্তা মাটি দ্বারা সংস্কার ২ লাখ ৯৭ হাজার টাকার কোন কাজ হয়নি। অপরদিকে টিআর প্রকল্পর আইচপাড়া আজাহারুলের হতে মজিদ মেম্বরের বাড়ি পযর্ন্ত মাটি সংস্কারের ৪০ হাজার টাকার কোন কাজ করেনি। এসব ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে বাঁশদহা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাষ্টার মফিজুল ইসলাম সদর এমপির প্রতিনিধি সেজে ৪ বছরে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে আত্মসাৎ করেছেন বলে চাক্ষুষ প্রমান দিয়েছেন এলাকবাসি। এসব অভিযোগের ব্যাপারে এলাকাবাসি ইতোমধ্যে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর এক লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন এলাকবাসি। সেটি বর্তমানে তদন্তাধীন আছে। এসব ভূয়া প্রকল্পের টাকা তুলে বাঁশদহা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাষ্টার মফিজুল ইসলাম ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছে বলে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে সাবেক ইউপি সদস্য মনি জানায়, আমার শুধু প্রকল্পের সভাপতি বানানো হতো কাজ হয়েছে কিনা সেজ বাবু (মফিজুল বলতে) পারে। আমি এখন বাইরে আছি। বর্তমান প্রকল্পের সভাপতি ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলামের সাথে সেল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা পিআইও জালাল উদ্দীন জানান, যে সব প্রকল্পর কথা বলছেন সে সব জায়গায় কোন প্রকল্প আমার জানামতে নেই। আমি বাইরে আছি। অফিসে এসে আপনার সাথে কথা বলবো। বাঁশদহা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাষ্টার মফিজুল ইসলাম জানায়, যে অভিযোগগুলো আমার বিরুদ্ধে করা হচ্ছে, সেটা সঠিক না। এলাকার উন্নয়ের জন্য আমি কিছু কাজ করেছি। এমনকি জেলা প্রশাসক বরাবর যে অভিযোগ করা হয়েছে সেটিও সঠিক নয় বলে দাবি করেন তিনি।
Check Also
সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন এর আয়োজনে বিজয় দিবস পালন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান
নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,পুরুষ্কার বিতারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। …