স্টাফ রিপোর্টার : শিক্ষক নিয়োগে বয়সসীমা বাড়ছে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩৫ বছর বয়সসীমা করা হচ্ছে। আগে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হতে কোনো বয়সসীমা ছিল না। ফলে ৪০-৪৫ বা তার চেয়ে বেশি বয়সীরাও শিক্ষক হতে পারতেন। এই বয়সসীমা বাস্তবায়িত হলে শিক্ষক নিবন্ধনের সনদ থাকলেও ৩৫ বছর বয়সের পর কেউ নিয়োগ পাবেন না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।
সূত্র জানায়, আদালতে মামলাজনিত কারণে গত দুই বছর ধরে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। ফলে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগে সুপারিশ করলেও তাদের নিয়োগ দেয়া যাচ্ছে না। সারা দেশে বেসরকারি স্কুল-কলেজে প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এতে দেশের প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে।
বর্তমানে এনটিআরসিএর নিবন্ধিত সারা দেশে প্রায় ছয় লাখ প্রার্থী চাকরির অপেক্ষায় রয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষক নিবন্ধিত প্রার্থীরা নানাভাবে বঞ্চিত হয়ে এ পর্যন্ত ২৫০টি মামলা করেন। গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর ১৬৬টি মামলার রায় দেন আদালত।
আদালতের রায়ে সাতটি নির্দেশনা দেয়া হয়। তার মধ্যে কয়েকটি হলো- বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নির্ধারণ করা, প্রতি বছর নিবন্ধন পরীক্ষার আয়োজন, তিন মাসের মধ্যে জাতীয়ভাবে নিবন্ধিত সব শিক্ষকের একটি মেধাতালিকা প্রণয়ন। এনটিআরসিএ কর্তৃক সুপারিশকৃত শিক্ষকদের যোগদান করতে দেয়া না হলে ৬০ দিনের মধ্যে সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি বাতিল করা। সংশ্লিষ্ট বোর্ডের তত্ত্বাবধানে পুনরায় কমিটি গঠন করা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. জাবেদ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, আদালতের রায়ের পর নিবন্ধিতদের চাকরিতে যোগদানের বয়সসীমা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়ে আমাদের কাছে চিঠি পাঠায় এনটিআরসিএ। তাদের প্রস্তাবটি পূর্ণঙ্গ না থাকায় আদালতের রায় বাস্তবায়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়।
তিনি বলেন, এমপিও নীতিমালার আলোকে আমরা নিবন্ধিত শিক্ষকদের যোগদানের বয়সসীমা ৩৫ করার প্রস্তাব করেছি। আগামী সপ্তাহে এটি চূড়ান্ত হয়ে এনটিআরসিএ-তে পাঠানো হবে।
‘আমরা পলিসি দেব, এনটিআরসিএ সেটি বাস্তবায়ন করবে। অথচ তারা শুধু চিঠি দিয়ে দায়সারা কাজ করার চেষ্টা করছে। তাদের (এনটিআরসিএ) কারণেই শিক্ষকদের নিয়োগ-সংক্রান্ত কাজে সময়ক্ষেপণ হচ্ছে’-বলেন মোঃ জাবেদ আহমেদ।
এনটিআরসিএর সদস্য মোঃ হুমায়ন কবির বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দেয়, তা আমরা বাস্তবায়ন করি। আমরা রুটিনমাফিক কাজ করে থাকি। গত ১১ এপ্রিল আমরা আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি পেয়েছি। রায়ে যেসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু করতে গত সপ্তাহে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, শিক্ষকদের যোগদানের বয়সসীমা নির্ধারণ করা হলে নিবন্ধিত প্রার্থীদের মেধাতালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু করা হবে। যোগদানের এই বয়সসীমা নির্ধারণ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে মেধাতালিকা তৈরি করা হবে। এ রপর এনটিআরসিএ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হবে।