নিজস্ব প্রতিনিধি: ১৯৫৯ থেকে ২০১৮ সাল। টানা প্রায় ষাট বছর দখলে থাকা জমির কাটা ধান হঠাৎ পুলিশ এসে নিছার উদ্দিন মোড়লের বাড়ি থেকে ভ্যানে তুলে নিয়ে গেছে। এই ধান একই গ্রামের ইনসাফ মোড়লের জিম্মায় তার বাড়িতে রাখা হয়েছে। পুলিশ বলেছে, জমি নিয়ে মামলা চলছে। আগে মামলা নিষ্পত্তি হোক, তারপর ধান পাবেন। অথচ রায় তো নিছার উদ্দিনের পক্ষেই রয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এসে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তালা উপজেলার বিশুকাটি গ্রামের নিছার উদ্দিন মোড়ল। তিনি বলেন, বলা নেই কওয়া নেই বৃহস্পতিবার সকালে এসে তালা থানার এসআই সাইফুল এই ধান নিয়ে গেছে। আমি এ ধান ফেরত চাই। কারণ ওই জমি আমাদের। এখন আমিসহ ৪০ জন ওয়ারেশ এখন ওই ধানের মালিক। তিনি বলেন, ‘থানায় অভিযোগ দিলাম আমি, আর আমার বাড়ি থেকে ধান নিয়ে গেল পুলিশ’!
নিছারউদ্দিন বলেন, ১৯৫৯ সালে তালা থানার মাগুরা মৌজার ৩২০৯, ৩২১৮, ৩২৩৯ ও ৩২১৩ দাগে ৩ একর ১৮ শতক জমি তালা উপজেলার বালিয়াদহ গ্রামের বিলাত মোড়লের পিতা মারফতুল্লাহর কাছ থেকে সাতক্ষীরা তৃতীয় মুনসেফ আদালতে ৪৫০/৫৯ নম্বর মামলার মাধ্যমে সোলেমূলে প্রাপ্ত হন নিছারউদ্দিনের দাদী পাচি বিবি। সেই সময় থেকে পাচি বিবির বংশধররা এই জমি দখলে রয়েছেন। তিনি বলেন, খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার বিলপাটিয়া গ্রামের খবির শেখ জমি দাতা মারফতুল্লাহর ছেলে বিলাত মোড়লকে দিয়ে সাতক্ষীরা তৃতীয় মুনসেফ আদালতে ৪৫০/৫৯ নম্বর সোলে রদের ৯৯/২০১৭ নম্বর মামলা করেন। তালা সহকারি জজ আদালত সোলে স্থগিত করেন। পরে আদালতে হাজির হয়ে জবাব দেওয়ায় আদালত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন। কারণ আদালত প্রমান পান যে নিছার উদ্দিন মোড়লগং পূর্ব হতে উক্ত জমি ভোগদখল করে আসছেন। এতে প্রতিপক্ষের কোনো স্বত্ত্ব নেই। তিনি জানান, অন্যান্য বারের মতো এবারও জমিতে নিছারউদ্দিন ধান চাষ করেন। গত ২২ এপ্রিল জমির ধান কেটে আনার সময় বিলাত আলি মোড়ল ও খবির বাহিনীর সদস্যরা লোকজন লেলিয়ে দিয়ে ধান লুট করে নেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। নিছারউদ্দিন এ ব্যাপারে তালা থানা পুলিশের শরণাপন্ন হন। অথচ পুলিশ ২৫ এপ্রিল বাড়ির উঠোনে থাকা ধান নিয়ে গেছে। পরে তা জিম্মায় রেখেছে একই গ্রামের ইনছাপ মোল্লার কাছে।
নিজের গায়ের রক্তঘাম পানি করে হাজার হাজার টাকা খরচ করে এই ধান লাগিয়েছেন জানিয়ে নিছার উদ্দিন বলেন, আমি আমার ধান চাই। আমার ধান ফেরত দেওয়া হোক। আমি এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার ও তালা থানার ওসির সহযোগিতা কামনা করছি।
অভিযোগ করে নিছারউদ্দিন বলেন, বিলাত ও খবির সাতক্ষীরা থেকে সাংবাদিক ডেকে এনে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। এর আগে খবির শেখ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ইদ্রিস শেখকে ভিকটিম সাজিয়ে নিছার উদ্দিনদের নামে মিথ্যা মামলা করে। এখন সেই খবির ও বিলাত আবারও ষড়যন্ত্রে নেমেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের ভয়ে ভীত ও অসহায়। তাদের ষড়যন্ত্র থেকে আমরা রক্ষা পেতে চাই’।