সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের দারুল উলুম চৌমুহুনী ফাজিল মাদ্রসার অধ্যক্ষ হত্যা, নাশকতাসহ ডজন মামলার আসামী আব্দুল কাদের হেলালীর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন মাদ্রাসার সভাপতি উপজেলার জয়পত্রকাটি গ্রামের নুরুল হক।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের আব্দুল কাদের হেলালী ১৯৭৪ সালে সাতক্ষীরা সদরের আগরদাঁড়ি মাদ্রসা থেকে সাড়ে ৯ বছরে দাখিল পাশ করেন। এরপর পড়াশুনা শেষ করে গান্ধুলিয়া দারুল উলুম আলিয়া মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন মাদ্রসায় আরবী প্রভাষক হিসেবে কাজ করার পর বিধিমোতাবেক ১০ বছরের অভিজ্ঞতা না হওয়ার পরও অনিয়ম ও দূর্ণীতির আশ্রয় নিয়ে ১৯৯০ সালে দারুল উলুম চৌমুহুনী ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন জামাতের রুকন হওয়ার সুবাদে তিনি মাদ্রাসার নামীয় চার শতক জমি জামায়াতের অফিস বানানোর জন্য ছেড়ে দেন। বেজুয়া, পারুলগাছা, মুকুন্দমধুসুধনপুর ও চাঁদুলিয়া মৌজার প্রায় সাত বিঘা জমি মাদ্রাসার নামে রেকর্ড করানো ও ২০১৪ সাল পর্যন্ত জমির খাজনা পরিশোধে কোন উদ্যোগ নেননি তিনি। ১৯৯৮ সালের পূর্বে অত্র মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটি অনুমোদন এর কাগজপত্র ও ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত রেজুলেশন বই, ২০০৪ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত মাদ্রাসার ক্যাশ সংক্রান্ত বেতন বিলির রেজিষ্টার, ১৯৯৭ সালের মিনিষ্ট্রি ভিাজিট, ডিজি কর্তৃক পাঠানো ১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত ১৯টি এমপিও কপি গায়েব করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা নোমানীর বেতনের টাকা আত্মসাৎ, ইংরেজী প্রভাষক দুর্গাপদ স্বর্ণকারের সাক্ষর জাল করে বেতন আত্মসাৎসহ জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া শিক্ষক আবু ইসার নামীয় ভুয়া সনদের বিরুদ্ধে ডিজি’র নির্দশনা না মেনে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
২০১২ সাল থেকে তিনি চারবছর যাবৎ মাদ্রসায় অনুপস্থিত থাকেন। ডিজির নির্দেশনা অনুযায়ি ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জরুরী সভা ডেকে মাদ্রাসা শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবশে রক্ষায় তিন কর্মদিবসের মধ্যে অধ্যক্ষ হেলালীকে দায়িত্ব বুঝে নিতে বলা হয়। চিঠি তার স্ত্রী ও ছেলে গ্রহণ করেন। তিনি এক বছর দু’ মাস ১৬ দিনের মধ্যে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১১.১২,১৩ ও ১৯ তারিখ মাদ্রাসায় উপস্থিত থাকেন। চার দিনের বেতন ভাতাও ভোগ করেন তিনি। কোন ছুটির আবেদন, ডাক্তারি সনদ বা অনুপস্থিতি সম্পর্কে কোন তথ্য না দিয়ে তিনি দীর্ঘদিন পালিয়ে বেড়িয়েছেন। একপর্যায়ে গত ২৩ এপ্রিল তিনি নাশকতার মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে রয়েছেন। এ ছাড়া মাদ্রাসার ইবতেদায়ী প্রধান এসকে বাহারুল ইসলাম হত্যা ও নাশকতার মামলার আসামী হয়ে পলাতক থাকায় ২০১৩ সাল থেকে অদ্যাবধি মাদ্রাসায় আসেন না।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের হেলালী যাতে প্রতিষ্ঠানে যোগদান না করতে পারে সেজন্য প্রধানমন্ত্রি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রি ও শিক্ষামন্ত্রির হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দারুল উলুম চৌমুহুনী ফাজিল মাদ্রসার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শেখ আনছার আলী, সদস্য আবু তালেব সরদার, ডাঃ প্রতিনিধি আসমত ইকবাল ও মুজিবুর রহমান।
২৯.০৪.১৮