ক্রাইমবার্তা প্রতিনিধি ঢাকা : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এতোটাই অসুস্থ যে, তিনি ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না। তিনি বলেন গণতন্ত্র ও খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য গণঅভ্যুত্থানের কোনো বিকল্প নেই। এজন্য চলমান আন্দোলনে জনগণকে আরো সম্পৃক্ত করতে হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বিরোধী দল বিনাশ করার যে চক্রান্ত, এটাকে আমরা রাজনীতি বলবো না। বলবো- অপরাজনীতি। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছি। এরজন্য নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ থাকবে, জনগণকে সুসংগঠিত করুন। অধিক সংখ্যায় জনগণকে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করুন। যাতে করে আমরা প্রয়োজনে গণঅভ্যুত্থান ঘটাতে পারি।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে গণতান্ত্রিক ফোরাম আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এ কথা করেন। ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিতকরণ ও অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি’ শীর্ষক এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হাজী মোজাম্মেল হক মিন্টুর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিকের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরো বক্তব্য দেন যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দীন খোকন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবি এম মোশাররফ হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, কৃষকদল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আলিম হোসেন, সেলিম হোসেন, জিনাফের সভাপতি মিয়া মো: আনোয়ার প্রমুখ।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারে সাক্ষাৎ করার প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের খুব কষ্ট হয়েছে। কারণ আমাদের নেত্রী খুব অসুস্থ। তিনি বলছিলেন, তার পিঠে ও ঘাড়ে ব্যথা এবং হাত ও পা শক্ত হয়ে যায়। আর এগুলোর প্রচণ্ড ব্যথার কারণে তিনি ঘুমাতে পারেন না। সুতরাং তার চিকিৎসা দেয়ার জন্য জেল কর্তৃপক্ষের আবেদন মানা হচ্ছে না কেনো? শুধুই কষ্ট দেওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাবো, অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে সু-চিকিৎসা দেওয়ার জন্য তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হোক। এমনিতে দেরি হয়ে গেছে। খোদা না করুন, তার সু-চিকিৎসা বিলম্বিত হওয়ার জন্য যদি উনার স্বাস্থ্যের কোন ক্ষতি হয় তাহলে জনগণ সরকারকে ক্ষমা করবে না।
প্রতিবাদ সভায় প্রধান আলোচক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, আপনি চান অথবা না চান একটা কথা আপনাকে বলি এদেশের মানুষ গণতন্ত্র প্রিয় তারা খুব গণতন্ত্রকে পছন্দ করে। গণতন্ত্রের জন্য এদেশের মানুষ লড়াই করেছে যুদ্ধ করেছে। এই গণতন্ত্রকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ কিছু ভাবতে পারে না। সেহেতু আগামী ডিসেম্বর এবং জানুয়ারির মধ্যেই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে বিএনপি এবং ২০ দলীয় জোট ক্ষমতায় যাবে এবং বেগম খালেদা জিয়া আবারো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন। এভাবেই দেশের সকল সমস্যার সমাধান হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে নিহত হওয়ার পরে তার দুটি অসহায় মেয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার বোন শেখ রেহানা যখন ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল তখন কেউ বিশ্বাস করতে পারেননি শেখ হাসিনা একদিন দেশে ফিরে আসবেন এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন। তেমনিভাবে এখন ও অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না বেগম খালেদা জিয়া কারাগার থেকে বের হয়ে আসবেন তার ছেলে তারেক রহমান বাংলাদেশে আসবেন এবং প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিবেন।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি আরো বলেন, শেখ হাসিনা যা সত্য প্রমাণিত করেছেন তারেক রহমানের জন্যও সেটি সত্য প্রমাণিত হবে। কারণটা হলো শেখ হাসিনার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তার মা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না। আর এদিকে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাবা শহীদ জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি ছিলেন এবং তার মা বেগম খালেদা জিয়া তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। সুতরাং পাল্লা তো এইদিকে (তারেক রহমানের দিকে) বেশি ভারি।