ক্রাইমবার্তা রিপোট: সাতক্ষীরা ; সাতক্ষীরা আহ্ছানিয়া মিশনের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন আগামী ৫ মে শনিবার। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে মিশনের একটি দোকানের ভাড়াটিয়া আবু সোয়েব এবেল একটি পক্ষকে জয়ী করতে মাঠে নেমেছেন। তাদের জন্য টাকা খরচসহ তিনি নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছেন।
একজন ভাড়াটিয়া হয়ে আবু সোয়েব এবেল মিশনের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে কোনো সাধারণ সভার অনুমোদন, দরপত্র আহবান, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রদান ছাড়াই মিশনের কমপ্লেক্স নির্মানের নামে লুন্ঠন শুরু করেছেন। তিনি নিজে কিভাবে দোকান বরাদ্দ দিচ্ছেন তা কারও বোধগম্য নয়। নিজের পছন্দসই ব্যক্তিদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা গ্রহণ করে মিশনকে স্থায়ীভাবে ঋণগ্রস্থ করছেন। এই ঋণের দায় কে নেবে। আবু সোয়েব এবেল ভবন নির্মানের তত্বাবধায়ক পরিচয় দিয়ে মিশনের ‘দোকারঘর’ বরাদ্দ দিচ্ছেন যা তার এখতিয়ার বহির্ভূত। তারা আরও বলেন গঠনতন্তত্র অনুযায়ী জীবন সদস্য হতে এক হাজার টাকা জমা দিতে হয়। অথচ আবু শোয়েব এবেল জমা দিয়েছেন কুড়ি হাজার টাকা। কোন স্বার্থে -প্রশ্ন রাখেন তারা।
বুধবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন মিশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মুকুল ও মুজিব হোসেন নান্নু। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মোনায়েম খান চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জ্বল ও আবদুর রহমান প্রমুখ। তারা সাংবাদিকদের বিভন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
সংবাদ সম্মেলনে গত ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে অনুষ্ঠিত নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্তের উল্লেখ করে বলা হয় ‘মাল্টি কমপ্লেক্স’ নির্মাণ কাজ করতে আবু সোয়েব এবেল ৫০ লক্ষ টাকা ঋণ হিসেবে দিবেন। পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষ পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে দোকান ঘরগুলি বরাদ্দ দেবেন এবং তার ঋণ পরিশোধ করিতে বাধ্য থাকবেন। কিন্তু কতিপয় কর্মকর্তা অবৈধ সুযোগ নিয়ে তা না মেনে নিজেদের মত করে ভবন নির্মান থেকে শুরু করে দোকান ঘর বরাদ্দে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। কেউ এর প্রতিবাদ করলে তাকে প্রকাশ্যে গালিগালাজসহ দেখে নেয়ার হুমকি দিচ্ছেন। এতবড় একটি প্রতিষ্ঠানে কোনো ধরনের আইন মানা হয়নি। করা হয়নি কোনো আন্ডার পার্কিং। দোকানের কর্মচারি, মসজিদের মুসল্লী, মাদ্রাসার ছাত্রদের সাইকেল, রাখার কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এমনকি এসব নির্মান কাজেও চলছে চরম হরিলুট। তার বরাদ্দকৃত দোকান ঘর নির্মান হচ্ছে ডাবল ঢালাই ডাবল রড, পিকেট খোয়া দিয়ে আর মসজিদসহ অন্যপাশের কাজ চলছে খুবই সাধারণভাবে । নিজের সুবিধা নিতে নকশার বাইরে যেখানে যা ইচ্ছা তাই করছেন তিনি।
সংবাদ স,েম্মলনে তারা অভিযোগ করে বলেন সাতক্ষীরা আহ্ছানিয়া মিশনের পুরাতন ভবনগুলো বিক্রি করা হয়েছে সাধারন সভার অনুমোদন না নিয়ে , পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে। এমনকি মসজিদটি মুসল্লীদের দাবী অনুযায়ী দুই তলায় করার কথা থাকলেও তা সরিয়ে তিন তলায় নিয়ে যাবার চক্রান্ত চলছে। এসব বিষয় নিয়ে জেলা প্রশাসকরে কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আবু শোয়েব এবেল আসন্ন নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। মসজিদে ২ এপ্রিল আবু শোয়েব এবেলকে গলা চেপে ধরে কাজী মনিরুজ্জামান মুকুল ও মুজিব হোসেন নান্নু তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেছেন বলে যে অভিযোগ তিনি করেছেন তা কল্পিত ও অসত্য । সেদিনের ঘটনায় সেখানে যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের কথা এবেল উল্লেখ করেন নি। তার একমাস পরে এসে তিনি এই অভিযোগ দিয়ে সাতক্ষীরা আহ্ছানিয়া মিশনের নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছেন। আবু সোয়েব এবেল সংবাদ সম্মেলনে উল্লে¬খ করেছেন, তিনি মাহমুদ আলী লাকীর নিকট থেকে মিশনের একটি দোকান ঘর বরাদ্দ বাবদ ৪টি চেকে ২০ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। কিন্তু সাতক্ষীরা আহ্ছানিয়া মিশনের দোকানঘর বরাদ্দের টাকা প্রতিষ্ঠান কেনো পাবে না বলে প্রশ্ন রাখেন তারা। একই সময়ে মিশনের সাধারণ সম্পাদক এক লক্ষ টাকার চেক গ্রহণ করেন। এসব টাকার কোন হিসাব প্রতিষ্ঠানে নেই।
তাছাড়া আজ পর্যন্ত ভবন নির্মানে কত টাকা খরচ হচ্ছে বা দোকান বরাদ্দে কত টাকা গ্রহণ করা হয়েছে তার হিসাবও কোনো সদস্যকে জানানো হচ্ছে না। কেউ জানতে চাইলে তাকে হুমকি ধামকিও দেয়া হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে তারা আরও বলেন প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আমরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। ইতিমধ্যে একটি নির্বাচনী ইশতেহারও ঘোষনা করা হয়েছে। নির্বাচনটি যাতে সুষ্ঠুভাবে হয় এবং ভোটাররা যাতে নির্বিঘেœ ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন সে বিষয়ে তারা সবার সহযোগিতা কামনা করেন।