ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোট: হবিগঞ্জে ৬ জনসহ ৬ জেলায় বজ্রপাতে ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া এসব ঘটনায় ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হবিগঞ্জ:
হবিগঞ্জে পৃথক স্থানে বজ্রপাতে ৬ জন ধানকাটা শ্রমিক নিহত হয়েছেন। বুধবার দুপুরে তারা হাওরে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান।
জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুরে হঠাৎ জেলার বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ রূপ নিয়ে কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়।
এ সময় ঝড়ে হাওরে ধানকাটা অবস্থায় ৬ জন শ্রমিক বজ্রপাতে মারা যান। এর মধ্যে বানিয়াচংয়ের মাকালকান্দি হাওরে স্বপন দাশু (৩৫)। তিনি দাইপুর গ্রামের বসন্ত দাশের ছেলে।
একই উপজেলার নূরপুর হাওরে জয়নাল উদ্দিন (৬০)। তিনি সিরাজগঞ্জ জেলার দত্তকান্দি এলাকার বাসিন্দা। এ দুটি স্থানে আহত হন আরও ৬ জন।
নবীগঞ্জ উপজেলার বৈলাকীপুর গ্রামের হাওরে নারায়ণ পাল (৪০) ও আমড়াখাই হাওরে হাবিব উল্লাহর ছেলে আবু তালিব (২৫) বজ্রপাতে মারা যান।
এছাড়া লাখাই উপজেলার তেঘরিয়া হাওরে সফি মিয়া (৫৫) ও মাধবপুর উপজেলার পিয়াইম হাওরে রাম কুমার সরকারের ছেলে জোহর লাল সরকার (১৮) নিহত হন।
কিশোরগঞ্জ:
কিশোরগঞ্জে পৃথক বজ্রপাতের ঘটনায় এক নারীসহ দুজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বুধবার দুপুরে জেলার নিকলী উপজেলার ছাতিরচর হাওরে ও পাকুন্দিয়া উপজেলার আশুতিয়া এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, নিকলী উপজেলার ছাতিরচর ইউনিয়নের পরিষদ পাড়ার মাঈন উদ্দিনের ছেলে শাহ জালাল (২০) ও পাকুন্দিয়া উপজেলার আশুতিয়া এলাকার সুধীর চন্দ্র বর্মণের স্ত্রী দিপালী রাণী বর্মণ (৩৫)। স্থানীয় থানা পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সুনামগঞ্জ:
সুনামগঞ্জে পৃথক স্থানে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় অপর এক কৃষক গুরুতর আহত হয়েছেন।
বুধবার দুপুরের দিকে ধর্মপাশা ও শাল্লা উপজেলায় এদের মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন, ধর্মপাশা উপজেলার সদর ইউনিয়নের দুর্বাকান্দা গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে জুয়েল আহমদ (১৬) ও শাল্লা উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের ইসহাক আলীর ছেলে আলমগীর মিয়া (২২)।
ধর্মাপাশা সদর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ন‚র ইসলাম বজ্রপাতের নিহতের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করছেন।
অন্য ঘটনায় শাল্লা থানার ওসি দোলোয়ার হোসেন এ বজ্রপাতে নিহতের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জের পাগলা এলাকায় বজ্রপাতে আবলুছ মিয়া তালুকদার (৫০) নামে এক কৃষক গুরুতর আহত হয়েছেন। পশ্চিম পাগলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নুরুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
দেওয়ানগঞ্জ:
দেওয়ানগঞ্জ বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার দুপুরে চর আমখাওয়া ইউনিয়নের সানন্দবাড়ী মৌলভীর চর এলাকার ৪নং পাড়ার কৃষক হাবিবুর যমুনার চরাঞ্চলে নিজের জমিতে কাজ করছিলেন।
এ সময় ঝড়বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। ওই এলাকায় বজ্রপাতের শব্দে সাতজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
কচুয়া:
চাঁদপুরের কচুয়ার সাচার ইউনিয়নের নয়াকান্দি গ্রামে বজ্রপাতে বুধবার বিকালে জামাল হোসেন (১৪) নামের এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে। সে ওই গ্রামের আব্দুল মতিন মিয়ার ছেলে ও সাচার উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। নিহতের পরিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সিরাজগঞ্জ:
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর পৃথক বজ্রপাতের আঘাতে সমতুল্লাহ (৫০) নামে এক কৃষক নিহত ও শাকিল মিয়া (১৫) নামে এক স্কুলছাত্র আহত হয়েছে।
বুধবার দুপুরে উপজেলার নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নের পানাগাড়ি চরে এবং বেলা ১১টার দিকে খাস রাজবাড়ি চরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সমতুল্লাহ পানাগাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ও আহত শাকিল খাস রাজবাড়ি গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে। কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কাপাসিয়া:
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বুধবার দুপুরে ফসলের ক্ষেতে ধান কাটার সময় বৈরী আবহাওয়ায় বজ্রপাতে দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার ঘাগটিয়া ইউনিয়নের সালদৈ গ্রামের চিনার চুল বিল থেকে ধান কেটে বাড়ি ফেরার সময় শ্রমিক মমিনুর রহমান বজ্রপাতে আক্রান্ত হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। সে কুড়িগ্রাম জেলার কচাঘাটা উপজেলার সভারটেক গ্রামের আহছান আলীর ছেলে।
অপর দিকে উপজেলার সন্মানিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণগাঁও চণ্ডালহাতা বিলে ধানকাটার সময় বজ্রপাতে মোতালিব (৪০) নামে এক শ্রমিক ঘটনাস্থলে মারা যায়। সে দক্ষিনগাঁও টানপাড়ার মৃত- আলীম উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে। কাপাসিয়া থানার এস আই শাহজাহান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।