ক্রাইমবার্তা রিপোট: ফেনী: ফেনীর ফুলগাজীতে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত দুজনকে টাকা না পেয়ে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তাদের স্বজনরা।
পুলিশ বলছে, বুধবার মধ্যরাতে ফুলগাজী উপজেলা আনন্দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ আনন্দপুর গ্রামে মাদক চোরাকারবারিদের সঙ্গে পুলিশের গোলাগুলির সময় সাহমিত হোসেন শামীম (২৫) ও মজনু মিয়া মনির (২৩) নামে ওই দুইজন নিহত হয়।
তবে স্বজনদের দাবি, ওই দুজনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পুলিশ টাকা দাবি করে, পরে রাতে তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়।
পুলিশ ঘটনাটিকে বন্দুকযুদ্ধ বললেও শামীমের পরিবার বলছে, ফুলগাজী থানা পুলিশ বুধবার দুপুরে তাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল।
শামীমের মা আনোয়ারা বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, বুধবার দুপুরে বাড়ির পাশের জমিতে গরুর জন্য ঘাস কাটছিল তার ছেলে। বেলা ২টার দিকে ফুলগাজী থানার এসআই শফিক এসে সেখান থেকে শামীমকে নিয়ে যায়।
“ পরে পুলিশ আমাদের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে না পারায় রাতে ওকে গুলি করে হত্যা করেছে।”
একই ধরনের অভিযোগ করেছেন মজনু মিয়া মনিরের বোন রেজিনা বেগম।
তিনি বলেন, গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে এসে একদল লোক বুধবার রাতে ফেনী শহরের বড় মসজিদ এলাকায় মনিরের বোনের বাসা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে তার পরিবারের কাছে দেড় লাখ টাকা দাবি করা হয়।
“রাতে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গেলে আমাদের তাড়িয়ে দেয়। টাকা দিতে না পারায় ভোর রাতে পুলিশ মনিরকে গুলি করে মেরেছে।”
রেজিনা বলছেন, তার ভাই ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। তার চাচা বিএনপির রাজনীতি করেন। পুলিশ ‘ষড়যন্ত্র করে’ তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। দফায় দফায় তারা পুলিশকে মোটা অংকের টাকাও দিয়েছেন।
ফুলগাজী থানার ওসি হুমায়ুন কবীর এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “পুলিশ কাউকে বাড়ি থেকে তুলে আনেনি। টাকা চাওয়ার কোনো ঘটনাও ঘটেনি। মাদকের টাকায় তাদের পরিবার চালাত বলে স্বজনরা এসব মনগড়া অভিযোগ করেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।”
‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, চোরাকারবারিরা মাদকের চালান নিয়ে ভারত সীমান্ত দিয়ে দক্ষিণ আনন্দপুর গ্রামে প্রবেশ করেছে খবর পেয়ে পুলিশ রাতে সেখানে অভিযানে যায়।
“জামুয়া রাস্তার মাথায় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি করে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে উপজেলার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী শামীম ও মনির গুলিবিদ্ধ হয়।”
তাদের ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান ওসি।
ওসি হুমায়ুন বলছেন, এই অভিযানে পুলিশের আট সদস্য আহত হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, তিন রাউন্ড কার্তুজ, ৭০০ ইয়াবা ও দুই শতাধিক বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে।
Check Also
বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়িয়ে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেবহাটায় মানববন্ধন
দেবহাটা প্রতিনিধি: স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের গ্রেফতার এবং বিএনপির …