সাতক্ষীরায় দু’দিনে গুলিবিদ্ধ দুই লাশের দায় নিচ্ছে না কেউ!

ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোট:  কালিগঞ্জে ও কলারোয়ায় দুই দিনে মাদকসহ গুলিবিদ্ধ দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ সন্দেহ করছে তারা মাদক ব্যবসায়ী। তবে তাদের হত্যার সুনির্দিষ্ট কারণ পুলিশ জানাতে পারেনি। পুলিশ বা অন্য কেউ এই ঘটনার দায় স্বীকার করছে না।
কালিগঞ্জে বৃহস্পতিবার ভোরে আব্দুল আজিজ (৪৫) নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার হয়। তিনি সাতক্ষীরা সদরের পরানদহ গ্রামের কেরামত আলীর ছেলে। এদিকে শুক্রবার সকালে কলারোয়ায় ইউনুস আলী দালাল নামে এক মাদক ব্যবসায়ীর লাশ পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি ওয়ান শ্যুটার গান, দুই রাউন্ড গুলি ও ৭০ বোতল ভারতীয় ফেন্সিডিল উদ্ধার করেছে। দুই ব্যক্তির লাশের পাশ থেকে মাদক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহতের আব্দুল আজিজের জামাতা রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘বুধবার ইফতারের পর আমার শ্বশুরকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা ডেকে নিয়ে যায়। আমরা ধারণা করেছি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে আটক করে নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার তার গুলিবিদ্ধ লাশ কালিগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হলো।’ তবে পুলিশ বলছে, এই ব্যক্তির মৃত্যু সম্পর্কে এখনই কিছু বলা যাবে না।
ভাড়াসিমলা ইউপি সদস্য পিয়ার আলী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ভোরে চৌবাড়িয়া গ্রামের সিদ্ধেরপুকুর এলাকায় পাকা রাস্তার পাশে গুলিবিদ্ধ এক ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা আমাকে খবর দেয়। বিষয়টি আমি থানায় জানালে সকাল ৭টার দিকে কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর ঘটনাস্থলে এসে ওই লাশ উদ্ধার করেন। লাশের পাশ থেকে একটি দেশি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি, একটি নতুন গামছা ও একটি পলিথিনের বস্তায় থাকা ৪৮ বোতল ভারতীয় ফেন্সিডিল উদ্ধার করে পুলিশ।
কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমান বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার মৃত্যু সম্পর্কে এই মুহূর্তে কিছু বলা যাবে না। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।’
এদিকে বৃহস্পতিবার (২৪ মে) দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর-বড়ালি গ্রামে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। নিহত ইউনুস আলী দালাল উপজেলার দক্ষিণ ভাদিয়ালি গ্রামের আব্দুল্লাহ দালালের ছেলে।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ জানান, তারা রাত পৌনে দুইটার সময় রামকৃষ্ণপুর-বড়ালি সীমান্তে দুইদল মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে গোলাগুলি হচ্ছে বলে খবর পান। তাৎক্ষণিক টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পাঁচ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে দুইপক্ষই বিলের মধ্যদিয়ে পালিয়ে যায়। পরে বাচাঁও বাঁচাও বলে চিৎকার শুনে বিলের মধ্যে এগিয়ে গেলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ইউনুসকে পাওয়া যায়। তাকে উদ্ধার করে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি ওয়ান শ্যুটার গান, দুই রাউন্ড গুলি ও ৭০ বোতল ভারতীয় ফেন্সিডিল উদ্ধার হয়েছে। নিহত ইউনুস আলী দালাল একজন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। তিনি বিচারাধীন একাধিক মাদক মামলার আসামি ছিলেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মেরিনা আক্তার বলেন, কলারোয়া ও কালিগঞ্জে যারা নিহত হয়েছে এরা দুজনই মাদক ব্যবসায়ী। এদের মৃত্যুর পিছনে পুলিশের কোন হাত নেই। মাদক ভাগাভাগি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্রে করে প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হয়েছেন তারা। জেলাকে মাদকমুক্ত করতে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। মাদকের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশও মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে। সেজন্য জেলায় মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখানো হবো।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।