নিজস্ব প্রতিনিধি: সদর এমপি মীর মোস্তাক আহমেদ রবি’ সাতক্ষীরায় না থাকা এবং সময়ের অভাবে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের বিধবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী কার্ডধারীদের টাকা মে মাসেও বিতরণ করা হয়নি। গত এপ্রিল মাসের ১৮ তারিখ থেকে উক্ত তিন মাসের টাকা ব্যাংকে পড়ে আছে। জেলার অন্যান্যস্থানে কার্ডধারীদের নিজ ব্যাংক এ্যাকাউন্টে টাকা বিতরণ করা হলেও সদরে সে টাকা নগদে হাতে হাতে বিতরণ করা হয় বলে জানা গেছে।
পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দা মেহরুন (ছদ্মনাম)। স্বামীকে হারানোর কয়েক বছর পর অনেক কষ্টে একটি বিধবা ভাতা কার্ড পেয়েছেন। পৌরসভা ও জেলা সমাজ সেবা অধিপ্তরের আওতায় কার্ডধারীদের তিনমাস পরপর তাদের ১৫শ’ টাকা করে প্রদান করা হয়। কিন্তু চলতি বছরের মার্চ মাসের টাকা মে মাসের শেষেও টাকা পাননি। টাকা নিতে পৌরসভায় ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের অফিসে একাধিকবার ধন্যা দিলেও কোন লাভ হয়নি। সেখানে গিলে বলা হচ্ছে এমপি সাহেব এখন ঢাকায় আছেন। তিনি সাতক্ষীরায় আসলে কার্ড প্রদান করা হবে। কখন আবার বলা হচ্ছে এমপি সাহেবের এখন সময় কম সেজন্য টাকা দিতে দেরি হচ্ছে। তিনি সময় দিলে আপনাদের টাকা দেওয়ার তারিখ জানানো হবে।
সূত্রে জানা গেছে, জেলা সমাসেবা অধিদপ্তরে আওতায় ১৯৮৮ জন বয়স্ক ভাতাভোগীর তিন মাসের ১৫শ’ টাকা হারে ২৯ লাখ ৮২ হাজার টাকা। বিধবা ভাতা কার্ডের আওতায় ২৯১ জনের ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৫০০ টাকা। প্রতিবন্ধী কার্ডে ৬০১ জনেক ১২ লাখ ৬২ হাজার ১শ’ টাকা গত মার্চ মাসে বিতরণ করার কথা থাকলেও সেটি বিতরণ করা হয়নি।
পৌরসভার ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের ভাতা ভোগীদের ২৭ মে ও ৪, ৫ ও ৬ ওয়ার্ডের ভাতা ভোগীদের ২৮ মে পিটিআই স্কুলে এবং ৭, ৮ এবং ৯ ওয়ার্ডের ভাতা ভোগীদের নব জীবন স্কুলে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
সদর উপজেলার ৮২৯ জন বয়স্ক ভাতাভোগীর তিন মাসের ১২ লাখ ৪৩ হাজার ৫০০ টাকা। বিধবা ভাতার সুবিধাভোগীর তিন মাসের ৩৩৮ জনের ৫ লাখ ৭ হাজার টাকা এবং ১৭৬ প্রতিবন্ধীর তিন মাসের ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৬০০ টাকা আটকে আছে। এই টাকা সুবিধাভোগীদের নিজ এ্যাকাউন্টে দেওয়ার কথা থাকেলও এমপি রবির সময়ের অভাবে সেগুলো বিতরণ করতে পারছেন না কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভা ও জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, সদর উপজেলার গত মাসের ১৮ তারিখে বরাদ্দ আসলেও এমপি মীর মোস্তাক আহমেদ রবি সাতক্ষীরায় না থাকার কারণে কার্ড দেওয়া সম্ভব হয়নি।
সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসের একজন কর্মকর্তা বলেন, সুবিধাভোগীর অধিকাংশ কম শিক্ষিত। সে কারণে অনেক সময় দেরি হয়। তালিকা প্রস্তুত করতে দেরি হওয়ার কারণে টাকা দিতে দেরি হয়। টাকা কবে বিতরণ হবে সেটা আমরা জানতে পারি না।
জেলা সমাজসেবা অফিসের অপর একজন কমকর্তা বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তরের টাকা পৌর মেয়র ও কাউন্সিলদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হয়। এপ্রিলের ৫ তারিখে বরাদ্দ হলেও ব্যাংকে টাকা আসে ১৮ তারিখে। ব্যাংক কর্মকর্তাদের ব্যস্ততার কারণে টাকা দিতে দেরি হচ্ছে। এছাড়া সদর এমপি সাহেব বলেছেন, এবার কার্ড বিতরণের সময় তিনি উপস্থিত থাকবেন। তিনি ঢাকা ছিলেন এবং সময় দিতে পারছেন না বলে কার্ড বিতরণে দেরি হয়েছে। অনেক কার্ডধারী ব্যক্তি ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খোলেননি। সে কারণে অনেক সময় হাতে হাতে টাকা বিতরণ করা হয়। উক্ত দুই কর্মকর্তা রাতে টেলিফোন করে তাদের নাম প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর-২ আসনের সাংসদ মীর মোস্তাক আহমেদ রবি মন্তব্য জানতে শুক্রবার সন্ধ্যায় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
Check Also
আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি
এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …