ক্রাইমবার্তা রিপোট:জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে নিয়োগ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ইউএনওর কক্ষে হামলা করে প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের পেটালেন সরিষাবাড়ীর সাবেক এমপি ডা. মুরাদ হাসানের সমর্থক যুবলীগ ক্যাডাররা।
এ সময় দায়িত্বরত যুগান্তর, সমকালসহ একাধিক জাতীয় দৈনিক ও টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক গুরুতর আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহতরা হলেন সরিষাবাড়ী যুগান্তর প্রতিনিধি জহুরুল ইসলাম ঠান্ডু, সমকাল প্রতিনিধি সোলায়মান হোসেন হরেক, এসটিভি প্রতিনিধি মশিউর রহমান ও ভোরের কাগজ প্রতিনিধি মোস্তাক আহমেদ মনির।
রোববার জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ওই দিন ৪০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী পদে নিয়োগ পরীক্ষা ছিল।
৪০টি দপ্তরী পদের মধ্যে ১৩টি পদে নিয়োগ দেয়ার দাবি ছিল সরিষাবাড়ির সাবেক এমপি ডা. মুরাদ হাসানের তালিকা অনুযায়ী। সকাল ১০টায় নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগ মুহূর্তে সরিষাবাড়ির সাবেক এমপি ডা. মুরাদ হাসানের সমর্থক উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম আশরাফ একদল ক্যাডার নিয়ে সেখানে হামলা চালায়।
তারা এমপির তালিকা অনুযায়ী নিয়োগ দেয়া না হলে কোনো পরীক্ষা হবেনা বলে হুমকি দিয়ে শ্লোগান দিতে থাকে।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কক্ষে উপস্থিত সাংবাদিকদের চলে যেতে বলে সন্ত্রাসীরা। সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের স্বার্থে অবস্থান করলে ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করে তারা।
এ সময় সন্ত্রাসীরা যুগান্তর প্রতিনিধি জহুরুল ইসলাম ঠান্ডু, সমকাল প্রতিনিধি সোলায়মান হোসেন হরেক, এসটিভি প্রতিনিধি মশিউর রহমান ও ভোরের কাগজ প্রতিনিধি মোস্তাক আহমেদ মনিরের ওপর হামলা করে এলোপাতাড়ি মারধর করে।
যুবলীগ ক্যাডাররা এ সময় যুগান্তর প্রতিনিধি জহুরুল ইসলাম ঠান্ডুকে ইউএনওর কক্ষ থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে পেটাতে পেটাতে দুইতলা থেকে নিচতলা নিয়ে আসে। সন্ত্রাসীরা তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সরিষাবাড়ি হাসপাতালে নিতে গেলে সন্ত্রাসীরা সেখানেও বাধা দেয়। পরে তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সরিষাবাড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। ঘটনার পর নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন জামালপুরের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দরা।
জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম,এ জলিল, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী, জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আজিজুর রহমান ডল ও সাধারণ সম্পাদক দুলাল হোসাইন অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।