আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি ‘আন্দোলন, আন্দোলন’ করে চিৎকার করে নয় বছরে নয় মিনিটও আন্দোলন করতে পারেনি। সেই সামর্থ্য, শক্তি তাদের নেই। বুধবার ঢাকার মিরপুরে বিভিন্ন মোটর ওয়ার্কশপ পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন এ কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মানুষের শক্তি যখন কমে আসে তখন মুখের বিষটা উগ্র হয়ে আসে। এটা শরৎচন্দ্রের ভাষা। বিএনপির ক্ষেত্রে এটা একেবারেই সত্য। নেতিবাচক রাজনীতির কারণে তারা এখন সঙ্কুচিত হচ্ছে। তাদের মুখের বিষ উগ্র হয়ে উঠছে।
একাদশ সংসদ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি তুলেছে বিএনপি। পাশাপাশি দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিও দাবি করেছে তারা। না হলে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার হুমকি দিয়েছে বিএনপি।
এসব বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের শিডিউল ডিক্লেয়ারের আর চার-পাঁচ মাস বাকি। এর মধ্যে সংবিধান পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। এখন বেগম জিয়া জেলে থাকলে তারা নির্বাচন করবে কি করবে না, এটা তাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। আর বেগম জিয়া জেল থেকে ছাড়া পাবেন কিনা, সেটা আদালতের ব্যপার। এখানে সরকারের কোনো দায় নেই।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সংবিধান অনুযায়ী দেশও চলবে, গণতন্ত্রও চলবে, নির্বাচনও চলবে। বিএনপির জন্য কোনো কিছু আটকে থাকবে না। বিএনপি না এলেও নির্বাচন যথাসময়ে হবে।
বিএনপির নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবির প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, এগুলো এখন মামা বাড়ির আবদার। এসব এখন হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
দু’দিন আগে কূটনীতিকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাদের বৈঠক হয়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি বিদেশি কূটনীতিকদের ডেকে নির্বাচন নিয়ে, দেশের বিভিন্ন বিষয় যেমন মাদকবিরোধী অভিযান নিয়ে ব্রিফ করেছে। এ কারণে আমাদের দল ও সরকারের পক্ষ থেকেও কূটনীতিকদের কাছে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করার বিষয় আছে। বিভ্রান্তি রিমুভ করার জন্য কূটনীতিকদের সাথে কথা বলেছি, আলাপ-আলোচনা করেছি।
ওই বৈঠকে বিএনপিকে ছাড়া আপনারা নির্বাচন করবেন না বলে জানিয়েছে- এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, বিএনপি না এলে করব না, এটা না। বিএনপি আসুক, আসলে স্বাগতম। বিএনপিকে জোর-জবরদস্তি করে ইলেকশনে টেনে আনার দায়িত্ব আমাদের না। বিএনপির এটা অধিকার।
এদিন মিরপুর মাজার রোডের মস্তুফা ইঞ্জিনিয়ারিং ও গাবতলী থেকে টেকনিক্যাল যেতে রাস্তার পাশের মোটর ওয়ার্কশপগুলো ঘুরে দেখেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
এ সময় পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি খবর পেয়েছি, এখানে ফিটনেসবিহীন গাড়ি রং করে রাস্তায় ছাড়া হয়। এটা তো সম্পূর্ণ বেআইনি। এগুলো তোমরা দেখ না? এসব ওয়ার্কশপ সিলগালা করার জন্যও বিআরটিএ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশকে নির্দেশ দেন তিনি। ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ।
এ সময় সাংবাদিকদের ওবায়দুল কাদের বলেন, বিআরটিএ যে ড্রাইভ করছে, এর উৎস মুখটা বন্ধ করা দরকার। রাস্তায় দুয়েকটা ফিটনেসবিহীন গাড়ি ধরে লাভ নেই। কারণ এগুলো শতশত। এগুলোকে কারখানা মানুষ মারার কারখানা ছাড়া আর কিছু বলা যায় না।
তিনি আরও বলেন, যানজটটা হচ্ছে এসব ফিটনেসবিহীন গাড়ির কারণে। এখানে মিরপুরে আজ দুটো কারখানা দেখলাম। এই দুটোর অবস্থা রীতিমত ভয়াবহ। এই গাড়িগুলো ঈদকে সামনে রেখে রাস্তায় নামবে, জায়গায় জায়গায় নষ্ট হবে, রাস্তা বন্ধ হয়ে লম্বা যানজট হবে। এগুলোর উৎস মুখ বন্ধ করতে হবে। এই ব্যাপারে আমরা প্রথম থেকেই সতর্ক অবস্থানে আছি। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আমাদের নিতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।